ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

প্রিয়জনদের নিয়ে ফুটবল তারকাদের বড়দিন উদযাপন

প্রকাশিত: ০৬:৩৬, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮

প্রিয়জনদের নিয়ে ফুটবল তারকাদের বড়দিন উদযাপন

জাহিদুল আলম জয় ॥ বড়দিন মানেই আনন্দ, বড় উৎসব। মঙ্গলবার বিশ্বব্যাপী এই উৎসবে মাতোয়ারা ছিলেন কোটি কোটি মানুষ। বিশেষ করে খ্রিস্টধর্মাবলম্বীরা এই দিনটিতে বিশেষভাবে পালন করেন। এই উৎসব থেকে বাদ যান না ক্রীড়াঙ্গনের তারকারাও। বিশেষ করে বিশ্বের সেরা ফুটবল তারকারা উৎসবে শামিল হন স্ত্রী, সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে। এই যেমন বরাবরের মতো এবারও বড়দিনে উৎসব করেছেন বর্তমান ফুটবলের সবচেয়ে বড় দুই তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো ও লিওনেল মেসি। এদের পাশাপাশি আরও অনেক তারকা ফুটবলার বড়দিনের আনন্দে মাতোয়ারা হন। পর্তুগীজ তারকা রোনাল্ডো তো রোগাক্রান্ত শিশুদের সঙ্গে বড়দিনের আনন্দ ভাগাভাগি করেছেন। বড়দিনের উৎসবের জন্য সব ফুটবলারই ছুটি পেয়েছেন নিজ নিজ ক্লাব থেকে। বার্সিলোনার মহাতারকা মেসি বড়দিনের ছুটি কাটাচ্ছেন নিজ বাড়ি আর্জেন্টিনার রোজারিওতে। ইনজুরির কারণে লীগে পিএসজির একটি ম্যাচ বাকি থাকতে বেশ কয়েকদিন আগেই ব্রাজিলে চলে গেছেন নেইমার। তবে ঘরে ফিরতে পারেননি আরেক বড় তারকা রোনাল্ডো। আজই সিরি’এ লীগে তার ক্লাব জুভেন্টাস মাঠে নামবে। কিন্তু বান্ধবী জর্জিনা রড্রিগুয়েজ ও সন্তানদের নিয়ে উৎসব চলছেই সিআর সেভেনের। ইউরোপিয়ান ফুটবলে বড়দিনের ছুটি শুরু হয়ে গেলেও শীর্ষ পাঁচ লীগে ব্যতিক্রম কেবল ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ ও ইতালিয়ান সিরি’এ। ক্রিসমাসের পরদিন জমজমাট বক্সিং ডে ম্যাচের পসরা বসবে সেখানে। বছর শেষের আগে আরও এক রাউন্ড খেলা আছে। এরপরই বড়দিনের ছুটিতে যাবেন এ্যাগুয়েরো, দিবালারা। প্রিমিয়ার লীগ ও সিরি’এতে আগামী ১২ জানুয়ারি আবার ম্যাচের ব্যস্ততা শুরু হবে। সেল্টা ভিগোর বিপক্ষে গত শনিবারের ম্যাচ শেষেই বড়দিনের ছুটির আমেজ শুরু হয়ে যায় বার্সিলোনায়। লা লিগায় বছরের শেষ ম্যাচে জয়ের রাতেই পরিবার নিয়ে বার্সিলোনা বিমানবন্দরে চলে যান বার্সা অধিনায়ক মেসি। সঙ্গে ছিলেন জীবনসঙ্গী এ্যান্টোনেল্লা রোকুজ্জো আর তিন সন্তান, থিয়াগো, মাতেও ও চিরো। ঘরের আনন্দ ভক্তদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন রোনাল্ডো। সান্তাক্লজের সঙ্গে ছবি তুলে জর্জিনা পোস্ট করেন ইনস্ট্রাগ্রামে। একফ্রেমে পরিবারের সবার এই ছবিটা ছড়িয়ে পড়েছে অন্তর্জালে। যেখানে জুভেন্টাস তারকা রোনাল্ডোর প্রেমিকা জর্জিনা। তিনি লিখেছেন, ‘তুরিনোর নতুন বাড়িতে ক্রিসমাস সেলিব্রেশন শুরু।’ অনাবিল আনন্দ রোনাল্ডো ভাগাভাগি করেছেন তুরিনের হাসপাতালে রোগাক্রান্ত শিশুর পাশে থেকে। এত বড় তারকা হয়েও দুঃখী মানুষের জন্য তার মন কাঁদে। জনহিতকর কাজকে তিনি ফুটবলের মতোই ভালবাসেন। চিলিতে যেমন শিশুদের জন্য একটি হাসপাতাল বানাতে তহবিল দিয়েছেন। সিরিয়ায় যুদ্ধবিধ্বস্ত শিশুদের জন্যও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। সবমিলিয়ে রোনাল্ডোর জনহিতকর কাজের ফিরিস্তি দিতে গেলে শেষ হবে না। এবার যেমন রোগাক্রান্ত শিশুদের পাশে দাঁড়িয়ে বড়দিনের উৎসব পালন করেছেন জুভেন্টাস তারকা। জুভেন্টাস সতীর্থদের সঙ্গে অনুশীলন শেষে বান্ধবী জর্জিনাকে সঙ্গে নিয়ে তুরিনের একটি হাসপাতালে যান পর্তুগাল অধিনায়ক। সেখানে ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে নানারকম উপহার বণ্টন করেন। শিশুদের নানারকম খোঁজ-খবর নেয়ার পাশাপাশি বেশ কিছুক্ষণ তাদের সঙ্গে আড্ডাও দেন তিনি। ২০১৫ সালে একটি অনলাইন জরিপ সংস্থার বিবেচনায় বিশ্বের সবচেয়ে জনহৈতষী ক্রীড়াব্যক্তিত্ব হয়েছিলেন রোনাল্ডো। নেপালে ভূমিকম্প দুর্গতের জন্য ওই বছর ৫ লাখ পাউন্ড দান করেছিলেন পাঁচবারের ফিফা সেরা তারকা। শুধু তাই নয়, গত বছর নিজের একটি ব্যালন ডি’অর ট্রফি নিলামে তুলে তার থেকে আয় হওয়া ৬ লাখ পাউন্ড একটি দাতব্য সংস্থায়ও দান করেছিলেন সুদর্শন এই সুপারস্টার। রোনাল্ডো-মেসিরা ছাড়াও বড়দিনের আনন্দে মেতেছেন ইংলিশ অধিনায়ক হ্যারি কেন, আর্জেন্টাইন তারকা মাউরো ইকার্ডি, মার্কাস রোজোসহ আরও অনেকে। হ্যারি কেন তার বাড়িতেই ক্রিসমাস ট্রি সাজান। যেখানে রাখেন এ বছর রাশিয়া বিশ্বকাপ থেকে জেতা গোল্ডেন বুট। বিশ্বকাপে সবচেয়ে গোল করে সোনার বুট পেয়েছেন তিনি। আরেক ইংলিশ ফুটবলার জর্ডান পিকফোর্ডের সাজানো ক্রিসমাস ট্রি দেখলে চমকে উঠাই স্বাভাবিক। পুরো ট্রি জুড়ে বরফের দেশের ভাল্লুক। সামনে দাঁড়িয়ে আছে তারই পোষা কুকুরের ছানা। এ ছুটির আনন্দে সন্তান নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন রবার্ট লেভানডোস্কিও। বেয়ার্ন মিউনিখের পোলিশ ফুটবলার কন্যাকে সেøজ গাড়ি চাপিয়ে নেমে পড়েন বরফে। সবমিলিয়ে অফুরান আনন্দে মাতোয়ারা আছেন ফুটবল তারকারা।
×