নিজস্ব সংবাদদাতা, নড়াইল, ২৫ ডিসেম্বর ॥ এমন ভালবাসার ঘটনা বিরল। কলেজছাত্র বগুড়ার সাখাওয়াত হোসেন এখন নড়াইলে রাত দিন মাথায় বাংলাদেশের পতাকা ও বুকে-পিঠে এক প্রার্থীর পোস্টার ঝুলিয়ে নির্বাচনী গণসংযোগে ব্যস্ত রয়েছেন। সবার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য কখনও বাঁশি বাজিয়ে, কখনও আবার মুখে সকলের কাছে সেই প্রার্থীর জন্য ভোট প্রার্থনা করছেন। ব্যস্ত সময় পার করছেন। ঢাকার মিরপুর এলাকার মৃদুল হালদার ও নাহিদ পারভেজ নড়াইলে এসেছেন ১০ দিন। উঠেছেন শহরের স¤্রাট আবাসিক হোটেলে। বরিশালের চরমোনাই এলাকার রেদওয়ান বাঙ্গালী উঠেছেন একই হোটেলে। তারা যে যার মতো নির্বাচনী কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। শুধু এরাই নয় ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ফরিদপুর, শরীয়তপুর, নেত্রকোনা, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, যশোর, সিলেটসহ প্রায় ২০ জেলা থেকে তিন শতাধিক তরুণ এখন নড়াইলে এক এমপি প্রার্থীর জন্য নিজেদের খরচে গণসংযোগ করে চলেছেন।
সে প্রার্থী আর কেউ নয় তিনি হলেন নড়াইল-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মর্তুজা। বাংলাদেশ ওয়ানডে ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নড়াইল এক্সপ্রেস খ্যাত মাশরাফির জন্য এই ভালবাসা। এই ভালবাসা তাদের নিয়ে এসেছে নড়াইলে। সাখাওয়াতের মতো অনেকেরই সারা গায়ে মাশরাফির ছবি। ধ্যানে জ্ঞানে মাশরাফি। কখনও মুখে বাঁশি, কখনও মুখে- শুধু ‘মাশরাফি মাশরাফি সেøাগান’, আবার কখনও ‘মাশরাফি ভাই এর সালাম নিন, নৌকা মার্কায় ভোট দিন।’
এসব মাশরাফি ভক্ত নড়াইলের স¤্রাট ও ডলফিন আবাসিক হোটেল এবং জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে উঠেছেন। নিজেদের খরচেই খাওয়া এবং নির্বাচনী প্রচার। তাদের বক্তব্য বসের জন্য নড়াইলে আসা। নতুন এ জায়গা না চিনলেও বিভিন্ন মানুষের কাছে শুনে শুনে তারা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে গিয়ে তার জন্য কাজ করে বেড়াচ্ছেন। তারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ মাশরাফিকে না জিতিয়ে বাড়ি ফিরবেন না। সাখাওয়াত, মৃদুল, নাহিদ, রেদওয়ানের মতো তিন শতাধিক তরুণ কোন দান বা প্রতিদান থেকে নয়, মাশরাফির প্রতি ভক্তি, শ্রদ্ধা ও ভালবাসার টানে নড়াইলে ছুটে এসেছেন। পিরোজপুর থেকে আসা মাশরাফি আদর্শ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহিন ফকির বলেন, মাশরাফি ভাইয়ের জন্য ভোট চাইতে আমরা পিরোজপুর থেকে নড়াইলে এসেছি। তিনি কোন দলের নয়, দেশের সম্পদ। আগামী ৩০ ডিসেম্বর সারাদিন মাশরাফি ভাইকে সবাই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন। তাকে বিজয়ী করার মাধ্যমে শেখ হাসিনার হাতকে আপনারা শক্তিশালী করবেন। জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মলয় কুন্ডু বলেন, বিভিন্ন জেলা থেকে আসা শতাধিক মাশরাফি ভক্ত শিল্পকলা একাডেমির ৬টি হল রুমে থাকছেন এবং তারা তাদের মতো করে মাশরাফির পক্ষে কাজ করে যাচ্ছে।
