ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা

প্রাইমারী শিক্ষকরাও নৌকাকে জয়ী করতে কাজ করবেন

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮

প্রাইমারী শিক্ষকরাও নৌকাকে জয়ী করতে কাজ করবেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজ শিক্ষকদের পর এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোটকে সমর্থন জানিয়ে শিক্ষকদের নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষকরা। সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বৈষম্য দূর করার বিষয়টি আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ থাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেছেন তারা। একই সঙ্গে নৌকাকে জয়ী করতে একযোগে কাজ করবেন বলেও ঘোষণা দিয়েছেন। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ ঘোষণা দেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ। সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন চাঁদপুর সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি ওমর খৈয়াম বাগদাদী, বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক তপন দাস প্রমুখ। সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকার আমলে প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের পর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে কোন ধরনের বেতন বৈষম্য ছিল না। ২০০৬ সালে সহকারী শিক্ষকদের দুই গ্রেড নিচে নামানো হয়, ২০১৪ সালে এসে সেটি ৩ গ্রেডে উত্তীর্ণ হয়। বর্তমানে একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জাতীয় বেতন স্কেলের ১১তম গ্রেড (১২ হাজার ৫০০ টাকা) এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা জাতীয় বেতন স্কেলের ১৪তম গ্রেড (১০ হাজার ২০০ টাকা) পাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, এতে করে ১৬ বছর চাকরি করার পর একজন প্রধান শিক্ষরের সঙ্গে সহকারী শিক্ষকের বেতন-ভাতায় ২০ হাজার টাকা ব্যবধান তৈরি হচ্ছে। একজন প্রধান শিক্ষক যে স্কেলে চাকরি শুরু করেন সেখানে একজন সহকারী শিক্ষক সেই স্কেলেরও এক গ্রেড নিচে চাকরি থেকে অবসর নেন। এটি আমাদের জন্য অসম্মানের একটি বিষয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সহকারী শিক্ষকদের ৩ ধাপ বেতন বৈষম্য নিরসনে দীর্ঘ পাঁচ বছর আন্দোলন করার পরও আমাদের সমস্যা সমাধান না হওয়ায় গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর আমরা ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচী পালনের পর আমরণ অনশন পালন করি। পরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী, সচিব ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক এসে আমাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে আমরা অনশন ছেড়ে বাড়ি চলে যাই। এরপর ১১ মাস পার হলেও আজও আমাদের দাবি বাস্তবায়ন করা হয়নি। শিক্ষক নেতারা বলেন, আমাদের মর্যাদার দাবি পূরণ না হওয়ায় আমরা বিভিন্নভাবে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করি। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সাক্ষাত করে আমাদের যৌক্তিক দাবির বিষয়টি তুলে ধরি। তিনি আমাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দেন। পরে সেটি আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে যুক্ত করা হয়। এ কারণে প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। শিক্ষক নেতারা বলেন, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের মর্যাদা না দিয়ে দেশের শিক্ষার উন্নয়ন করা সম্ভব নয়, শিক্ষকদের মর্যাদা দিয়েই তা করতে হবে। এ দাবি থেকে আমরা একচুলও সরে যাব না। শিক্ষক সমাজ মনে করে, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে আমাদের এ দাবি বাস্তবায়ন করা হবে। এ জন্য সারাদেশে প্রায় ৩ লাখ সহকারী শিক্ষক একযোগে কাজ করবেন।
×