ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

শাহজালালে নারী আনসারকে চপেটাঘাত, যাত্রী আটক

প্রকাশিত: ০৬:০২, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮

শাহজালালে নারী আনসারকে চপেটাঘাত, যাত্রী আটক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেহ তল্লাশি করায় ক্ষুব্ধ হয়ে কর্তব্যরত এক নারী আনসার সদস্যকে চপেটাঘাত করার অপরাধে তাজিন আব্বাস নামের এক যাত্রীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এ ঘটনা ঘটে। বিমানবন্দর থানার ওসি নুরে আজম জানিয়েছেন, সরকারী কাজে বাধা প্রদান ও আনসারকে মারধর করার অভিযোগে তাজিন আব্বাসের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ভিকটিম আনসার সদস্য ফাতেমা খাতুন। এ রিপোর্ট লেখার সময় তাজিন আব্বাসকে থানা হাজতে রাখা হয়। বিমানবন্দরের এ ঘটনায় তোলপাড় চলে। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ঘটনার সূত্রপাত ঘটে সকাল সোয়া নয়টায়। তাজিন আব্বাস তার স্বামী ডাক্তার মোঃ ফয়সাল জামানসহ পরিবারের ৭ সদস্যকে নিয়ে কক্সবাজার যাওয়ার জন্য শাহজালাল অভ্যন্তরীণ টার্মিনালে পৌঁছেন। এ সময় এন্ট্রি হাইজ্যাক গেটে কর্তব্যরত নারী আনসার ফাতেমা খাতুন মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তাজিনের দেহ চেক করলে রেড সিগন্যাল বেজে ওঠে। তখন তাকে বুথের ভেতর ডেকে নিয়ে ম্যানুয়্যালি দেহ তল্লাশি করতে চাইলে তিনি তাতে বাধা দেন। এ সময় আবারও তার দেহে মেটাল ডিটেক্টর লাগানোর পর সঙ্কেত বেজে ওঠে। তখন তার পিঠে ফাতেমা খাতুন হাত দিয়ে দেখতে চান কোন মেটাল জাতীয় কিছু আছে কিনা। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তাজিন প্রচ- জোরে ফাতেমার মুখে চড় মারেন। তাতে তিনি মাথা ঘুরে মেঝেতে পড়ে যান। এ দৃশ্য দেখে উপস্থিত যাত্রীরা সেখানে জড়ো হয়ে তাজিনের ওপর প্রচ- ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ওই সময় ঘটনাক্রমে সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ারভাইস মার্শাল নাইম হাসান ও মেম্বার (অপস) সেখানে উপস্থিত থাকায় তারা এ ঘটনার একটা শান্তিপূর্ণ ফয়সালা করার পরামর্শ দেন। কিন্তু তখনও তাজিন আব্বাস চেঁচামেচি ও হুঙ্কার দিতে থাকেন। তখন তিনি আনন্দ নামের একটি কেবল ভিত্তিক চ্যানেলের মালিক পরিচয় দিয়ে সাংবাদিক ডেকে গোটা বিমানবন্দরের নিরাপত্তাকর্মীদের হুমকি দেন। এ সময় ফাতেমার কাছে অন্তত দুঃখ প্রকাশ করার জন্য বলা হলেও তিনি কিছুতেই নমনীয় হতে চাননি। এভাবে কয়েক ঘণ্টা দেন-দরবার করার এক পর্যায়ে তিনি ফাতেমাকে চড় মারার বিষয়টি অস্বীকার করেন। সঙ্গে সঙ্গেই তাকে অফলোড করে নিরাপত্তাকর্মীদের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত এভসেক পরিচালক উইং কমান্ডার নূরে ই আলম সিদ্দিকী বিমানবন্দরের সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ এনে তাজিনের সামনে তুলে ধরেন। এ সময় তার স্বামী ডাক্তার ফয়সাল জামান স্ত্রীর অপকর্মের কথা স্বীকার করেন। ততক্ষণে বিমানবন্দরে কর্মরত সব আনসার সদস্য বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং আইনের আশ্রয় নেয়ার দাবি জানান। এতে পুলিশ ডেকে তাজিনকে বিমানবন্দর থানায় পাঠানো হয়। সেখানে একটি মামলা দায়েরের পর তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে হাজতে পুরা হয়।
×