ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুত আনতে শর্ত ছাড়া ভূমি দেবে ভারত

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮

নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুত আনতে শর্ত ছাড়া ভূমি দেবে ভারত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বিদ্যুত বিনিময়ে ভারত শর্ত ছাড়াই নিজেদের ভূখ- ব্যবহারের সুযোগ দিয়ে নতুন নীতি তৈরি করেছে। এতে বাংলাদেশ সব থেকে বেশি লাভবান হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে দ্বিপাক্ষিকভাবে বাংলাদেশ এখন নেপাল, ভুটান এবং মিয়ানমার থেকে বিদ্যুত আমদানি-রফতানি করতে পারবে। একই সঙ্গে ভারতের খোলা বাজার থেকে বিদ্যুত আমদানি করতে চাইলেও সরাসরি প্রতিবেশী দেশ থেকে বিদ্যুত আমদানি করতে পারবে। দীর্ঘদিন থেকে বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশগুলো ভারতকে আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুত বিনিময় নির্দেশিকা ২০১৬ সালের একটি ধারায় আপত্তি জানিয়ে আসছিল। এই নীতিতে প্রতিবেশী দেশ থেকে বিদ্যুত আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে ভারতের ভূখ- ব্যবহার করতে হলে তাদের দেশের কোম্পানির মাধ্যমে ক্রয়-বিক্রয় করার শর্ত দেয়া ছিল। ফলে দ্বিপাক্ষিকভাবে প্রতিবেশী দেশগুলোর চুক্তি করা সম্ভব ছিল না। বিদ্যুত সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস এ প্রসঙ্গে জনকণ্ঠকে বলেন, আগে মনে করা হয়েছিল ভারত এক্ষেত্রে রক্ষণশীল নীতি অবলম্বন করছে। তবে এই নীতির পরিবর্তন করে তারা উদারতার পরিচয় দিয়েছে। এজন্য ভারতকে সাধুবাদ জানাতে হয়। তিনি বলেন, এখন আমরা দ্বিপাক্ষিকভাবে নেপাল, ভুটানের সঙ্গে চুক্তি করে বিদ্যুত আনতে পারব। এক্ষেত্রে ভারতের ভূখ- ব্যবহারের অনুমতিও দিয়েছে তারা। ড. কায়কাউস বলেন, ভারত খোলা বাজারে বিদ্যুত বিক্রি করে থাকে। শেয়ার বাজারের মতো প্রতিদিন এই বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করা হয়। সেখান থেকে বিদ্যুত ক্রয় করতে চাইলেও ভারতের কোন কোম্পানির মাধ্যমে আমাদের বিদ্যুত কিনতে হতো। এখন আমরা সরাসরি কাউকে এজেন্ট নিয়োগ করে বিদ্যুত কিনতে পারব। ভারতের ক্রস বর্ডার ট্রেড অব ইলেক্ট্রিসিটি ২০১৬-এর নির্দেশিকার ৩-এর ১ ধারায় বলা ছিল ভারত ও প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে যে কোন ক্রস বর্ডার লেনদেন ভারতীয় কোন কোম্পানির সরাসরি অংশগ্রহণ থাকতে হবে। কিন্তু সম্প্রতি সংশোধন করে প্রকাশিত নির্দেশিকায় বলা হয়েছে দুটি আলাদা দেশ নিজেদের মধ্যেও বিদ্যুত কেনাবেচা করতে পারবে যেখানে ভারত ত্রিপাক্ষিক চুক্তি দ্বারা তাতে অংশগ্রহণ বা অনুমোদন করবে । পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন এ প্রসঙ্গে জনকণ্ঠকে বলেন, নতুন নীতিতে ভারতের গ্রিড লাইন ব্যবহারের যেমন সুযোগ রয়েছে একইভাবে আমরা বিদ্যুত আনার জন্য পৃথক লাইনও নির্মাণ করতে পারব। ভারতের গ্রিড লাইন ব্যবহার করলে তাদেরকে হুইলিং চার্জ দিতে হবে। আর আমরা পৃথক লাইন নির্মাণ করলে দেশটির আইন মেনেই তা করতে হবে। এক্ষেত্রে তারা লাইন নির্মাণের জন্য তাদের ভূখ- ব্যবহারের অনুমতি দেবে। তিনি জানান, নেপাল থেকে ভারতীয় ভূখ- ব্যবহার করে ২৫ কিলোমিটার এবং ভুটান থেকে ৪০ কিলোমিটার গ্রিড লাইন নির্মাণ করলেই আমরা বিদ্যুত আনতে পারব।
×