ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশী প্রিয়তার সাফল্য!

প্রকাশিত: ০৭:০৮, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮

বাংলাদেশী প্রিয়তার সাফল্য!

সংস্কৃতি ডেস্ক ॥ প্রিয়তা ফারলিন ইফতেখার। নারী সাংবাদিকতার অগ্রদূত নূরজাহান বেগম এবং কচি-কাঁচার মেলার প্রতিষ্ঠাতা, সাংবাদিক রোকনুজ্জামান খান দাদাভাইয়ের নাতনী ‘ফ্ল্যাগ গার্ল’ খ্যাত মডেল প্রিয়তা ফারলিন ইফতেখার। বাংলাদেশের গর্ব প্রিয়তা সম্প্রতি ‘মিস কালচার ওয়ার্ল্ডওয়াইড ২০১৮’-এর মুকুট জিতেছেন। গত ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে তিনি দেশের জন্য এ সম্মান বয়ে নিয়ে আসেন। বিশ্বব্যাপী সংস্কৃতি আদান-প্রদানের লক্ষ্যে জিম্বাবুইয়ের জাতীয় ব্র্যান্ডিং ও বিনিয়োগ ফার্মের আয়োজনে ৫০টি দেশের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় ‘মিস কালচার ওয়ার্ল্ডওয়াইড’ প্রতিযোগিতা। ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত পর্বে জিম্বাবুইয়ের হারারেতে, দ্য ভেন্যু এ্যাভান্ডলেতে ১৫টি দেশের প্রতিযোগীকে পিছনে ফেলে মুকুট জেতেন বাংলাদেশের প্রিয়তা। প্রতিযোগিতায় প্রথম রানার আপ হয়েছেন জাম্বিয়ার বিশ্বাস মুকনকো এবং দ্বিতীয় রানার আপ হয়েছেন জিম্বাবুইয়ের ওয়েন্ডি মাতুরি। এ প্রতিযোগিতায় মিস পারসোনালিটির খেতাব পেয়েছেন রাশিয়ার আন্না কিরিলিনা এবং ডেস্টিনেশন মার্কেটিংয়ের এ্যাম্বাসেডর হয়েছেন রুয়ান্ডারমারি ওথেনস উওয়াকু। মিস কালচার ওয়ার্ল্ডওয়াইড প্রতিযোগিতায় এটিই বাংলাদেশের প্রথম অর্জন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবরটি নিশ্চিত করেন প্রিয়তা নিজেই। পুরস্কারপ্রাপ্তির প্রতিক্রিয়ায় প্রিয়তা বলেন, ১৬ তারিখে যখন মুকুট জয়ের পর বাংলাদেশের পতাকাটা তুলে ধরলাম, আমি কখনও ভুলব না। অন্য কোনদিন না, অন্য কোন মুহূর্ত না বিজয় দিবসের মুহূর্তে দেশের পতাকা তুলে ধরার অনুভূতি আমি কিছু দিয়েই বোঝাতে পারব না। এমন বিজয়ের পর সবার প্রতিক্রিয়া, অভিনন্দন পেয়ে মনে হচ্ছে বিজয়ের মাসে সত্যিই দেশকে কিছু দিতে পারলাম। প্রিয়তা জানান, মুকুট জয়ের পরও কিছুদিন সেখানে থাকছেন তিনি। বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ও পর্যটন শিল্প নিয়ে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আসা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও সংগঠনের সঙ্গে আলাপকালে বাংলাদেশকে তুলে ধরছেন তিনি। এর আগে প্রিয়তা ইফতেখার মিস ট্যুরিজম ওয়ার্ল্ড, মিস মাল্টিন্যাশনালসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা ও ইভেন্টে বাংলাদেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে নারী ও সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখায় এ বছর ‘জয় বাংলা ইয়ুথ এ্যাওয়ার্ড’ও পেয়েছেন প্রিয়তা। ভ্রমণপ্রিয় প্রিয়তা পর্যটন নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করায় বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন তাকে ব্র্যান্ড এ্যাম্বাসেডর ঘোষণা করে। বিশ্বব্যাপী প্রিয়তা দ্য ফ্ল্যাগ গার্ল বা পতাকা বালিকা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন তার বিভিন্ন দেশের বন্ধুদের মাধ্যমে তৈরি করা একটি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে। ২০০৮ সালে প্রিয়তা প্রতিষ্ঠা করেন ‘দ্য ফ্ল্যাগ গার্ল’ নামের একটি নেটওয়ার্ক। এ নেটওয়ার্ক কাজ করছে দেশ ও বিদেশের নারীদের নিয়ে। তবে নেটওয়ার্কের সদস্যদের মধ্যে নারী-পুরুষ সবাই আছেন। বর্তমানে সদস্য সংখ্যা ১ হাজার ৩০০। ৫০ শতাংশ সদস্য বাংলাদেশী। অন্য ৫০ শতাংশ সদস্যদের বাস বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। তবে পুরস্কারপ্রাপ্তির পর দেশে-বিদেশে নানা গণমাধ্যমে প্রিয়তার মুকুট জয়ের খবর ফলাও করে প্রচার হলেও দেশের গণমাধ্যমে খবরটি যথাযথভাবে প্রচার না হওয়ায় অভিমান ঝরেছে তার কণ্ঠে। জিম্বাবুইয়ে থেকে ফেসবুক লাইভে এসে প্রিয়তা বলেন, এত কষ্ট করব, নিজেদের পড়াশোনা, ক্যারিয়ার স্যাক্রিফাইস করে প্রিপারেশন নিয়ে আসব, ভাল কিছু হলে তা প্রচার হবে না অন্যদিকে, যখন খারাপ কিছু হবে, তাকে নিয়ে ব্যঙ্গ করব, ভাইরাল হওয়া নিয়ে ব্যস্ত থাকব, তাহলে আমার মনে হয় না প্রয়োজন আছে ভাল কিছু উপহার দেয়া। পৃথিবীর যে কোন দেশ, যারা যত খুশি আমাকে নিয়ে লিখুক কিন্তু আমার দেশ যদি আমাকে প্রচার করার প্রয়োজন না মনে করে আমি আমার মুকুট সেকেন্ড রানার আপকে দিয়ে দেব। তবে অভিমান করলেও দেরিতে হলেও দেশের মানুষ তার এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত।
×