ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

যারা আমাদের ভয়ভীতি দেখাতে চায় তারা আহাম্মক ॥ ড. কামাল

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮

যারা আমাদের ভয়ভীতি দেখাতে চায় তারা আহাম্মক ॥ ড. কামাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যারা জনগণকে ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে চায়, তাদের স্বাধীনতার শত্রু ও ইয়াহিয়া খানের উত্তসূরি হিসেবে উল্লেখ করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, সংবিধানে লেখা আছে এদেশের মালিক জনগণ। আমরা ভোট দিতে পারব এই স্বপ্ন শহীদরা দেখেছিল, এদেশের মালিক হবে জনগণ- এই স্বপ্ন দেখেছিল। আজকে ভোট দেয়ার জন্য আমরা যারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। আমাদের যারা সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে চায়, তারা স্বাধীনতার শত্রু। এরা হলো ইয়াহিয়া খানের উত্তরসূরি। সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও পেশাজীবীদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপির নেতৃবৃন্দ অংশ নেন। তারা সরকার ও নির্বাচন কমিশনের বিভিন্ন কর্মকা-ের তীব্র সমালোচনা করেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী-নেতাকর্মীদের হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে অভিযোগ করে ফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন বলেন, যারা আমাদের ভয়-ভীতি দেখাতে চায়, তারা আহাম্মক। আমাদের বন্দুকের ভয় দেখাও? আস সামনাসামনি। হুমকিদাতারা কাপুরুষ। তারা শহীদদের অপমান করছে। তারা (পাকিস্তানের শাসক) ইয়াহিয়ার উত্তরসূরি। কামাল হোসেন বলেন, ভোট দেয়াটা শুধু না, শহীদরা যেটা আমাদেরকে আমানত হিসেবে দিয়ে গেছে.. এদেশের স্বাধীনতা.. আমরা এনেছি। এই স্বাধীনতাকে রক্ষা করার পথ হলো ভোট দেয়া। ভোট দিয়ে তোমাদের সত্যিকারের যে প্রতিনিধি, তারা দেশ শাসন করবে। অনির্বাচিতরা দেশ শাসন করবে- এর চেয়ে লজ্জার বিষয় কী হতে পারে? এখানে ভাইয়েরা বলেছেন, অনির্বাচিতরা এখন দেশ শাসন করছে। এটা আমরা মেনে নিতে পারি না। প্রশাসনের কর্মকর্তা, পুলিশ ও সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যদের নিরপেক্ষভাবে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমি মনে করতে চাই না, যারা ভোট পরিচালনার দায়িত্ব নেবেন, তারা দেশদ্রোহিতা করবেন, তারা দেশের জনগণের মালিকানার বিরুদ্ধে সেই ধরনের কাজ করবেন, যেটাতে তারা সারাজীবন লজ্জা পাবেন। গণফোরাম সভাপতি বলেন, যারা বলে দেশ বিভক্ত, আমি বলি আরে মিয়া তোমাদের মাথা উন্মুক্ত, দেখ আমাদের ঐক্য দেখ। আমরা একাত্তরে দেখেছি, বাহাত্তরে দেখেছি, পঁচাত্তরের পরে যখন আমরা ভেবেছিলাম সব বুঝি হারিয়ে গেল। বঙ্গবন্ধু আক্রান্ত হলেন, তাজউদ্দিন ভাই আক্রান্ত হলেন। কিন্তু কে বাঁচিয়েছে? ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমরা বাঁচিয়েছি। আমার পাশে যে বসে আছেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। এদেশে যারা মনে করে আমাদের ভয় দেখালে আমরা ভীত হয়ে যাব, তারা আহাম্মকের স্বর্গে বাস করে এ কথা উল্লেখ করে কামাল হোসেন বলেন, বাঙালী ভীত নয়, বাঙালীকে ভয় দেখানো যাবে না। আস সামনাসামনি। বন্দুক নিয়ে, তোমরা গু-া-পা-া তৈরি করেছ, লাঠিসোটা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় পিটানির চেষ্টা করে, তাদের বলছি আস সামনাসামনি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি। যারা গু-া-পা-া নিয়ে নিরীহ মানুষের ওপর আক্রমণ করে তারা কাপুরুষ। ১৭/১৮ কোটি মানুষকে মেরে ফেলা অসম্ভব, অসম্ভব। সভায় কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, অবৈধ সরকার বার বার বলছে আমরা স্বাধীনতার পক্ষে। আওয়ামী লীগ সরকার ভোট না নিয়ে সরকার গঠন করেছে। তারা অবৈধ সরকার, তারা স্বাধীনতার পক্ষের সরকার না। নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আজকে আমাদের এই লড়াইয়ে জিততে হবে। আমাদের পরাজিত হওয়ার সুযোগ নেই। আমি দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই, এই লড়াইয়ে আমরা জিতব, যদি আমরা সবাই দৃঢ় থাকতে পারি। এই যে সামরিক বাহিনী মাঠে নেমেছে, মানুষ জিজ্ঞাসা করেছে- সবই তো দেখি সরকারের দালালি করে ওরা ঠিক থাকবে তো? আমরাও আবেদন করি, ড. কামাল আবেদন করেছেন, আমাদের শেষ জায়গায় এই নির্বাচনের লড়াইয়ে সামরিক বাহিনী যেন নিরপেক্ষ থাকে। সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাংবাদিক শওকত মাহমুদের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব এজেডএম জাহিদ হোসেনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, মোস্তফা মহসিন মন্টু বক্তব্য রাখেন। পেশাজীবী নেতাদের মধ্যে গণস্বাস্থ্য সংস্থার ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, অধ্যাপক খন্দকার মোস্তাহিদুর রহমান, অধ্যাপক সদরুল আমিন, অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক আখতার হোসেন, চিকিৎসক একেএম আজিজুল হক প্রমুখ বক্তব্য দেন।
×