ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

সুন্দরের আবাহনে শুরু কত্থক নৃত্য উৎসব

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮

সুন্দরের আবাহনে শুরু কত্থক নৃত্য উৎসব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পাখোয়াজের সঙ্গে বেজে ওঠে তবলার বোল। সেই বোলের জবাব আসে নৃত্যশিল্পীর পায়ের তালে। আলোড়িত হয় পা থেকে কেশ অবধি শিল্পীর সর্বাঙ্গ। নান্দনিকতা আশ্রয়ী রূপটি নিয়ে শিল্পী ঘুরে বেড়ায় মঞ্চের চারপাশজুড়ে। মুদ্রার সঙ্গে অভিব্যক্তির প্রকাশে সুন্দরের প্রতিচ্ছবি হয়ে ওঠে সেই নাচ। এভাবেই সুন্দরের আবাহনে শুরু হলো কত্থক নৃত্য উৎসব। সোমবার থেকে ধানম-ির ছায়ানট মিলনায়তনে তিন দিনব্যাপী উৎসবটির সূচনা হয়। বুধবার পর্যন্ত চলমান এ আনন্দযজ্ঞে অংশ নিচ্ছেন ঢাকাসহ সারাদেশের শীর্ষস্থানীয় নৃত্যশিল্পীবৃন্দ। সপ্তমবারের মতো এ উৎসবের আয়োজন করছে কত্থক নৃত্য সম্প্রদায়। সোমবার শীতল সন্ধ্যায় উৎসব উদ্বোধন করেন নৃত্য সারথী লায়লা হাসান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নৃত্যগুরু জীনাত জাহান স্মৃতি সম্মাননা পদক দেয়া হয় নৃত্যগুরু বেলায়েত হোসেন খানকে। তার হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন লায়লা হাসান এবং উত্তরীয় পড়িয়ে দেন নৃত্যশিল্পী সংস্থার সভাপতি মীনু হক। উদ্বোধনী আলোচনায় নেন নৃত্যালোকের পরিচালক কবিরুল ইসলাম রতন, নৃত্যশিল্পী দীপা খন্দকার ও বাফার সভাপতি হাসানুর রহমান বাচ্চু। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কত্থক নৃত্য সম্প্রদায়ের সাধারণ সম্পাদক সাজু আহমেদ। সম্মাননা প্রাপ্তির অনুভূতিতে বেলায়েত হোসেন খান বলেন, এটা অনেক বড় প্রাপ্তি। কখনও নৃত্যের জন্য সম্মাননা পাব ভাবিনি। এটা পেয়ে খুব ভাল লাগছে। যা আমাকে সামনে পথ চলতে অনুপ্রেরণা দেবে। প-িত বিরজু মহারাজের নৃত্য অবলম্বনে সাজু আহমেদের নির্দেশনায় ‘গুরু বন্দনা’ দিয়ে শুরু হয় উৎসবের নৃত্য পরিবেশনা। এতে অংশ নেন সাজু আহমেদ, সূপর্না, প্রিয়াংকা, মালিহা, পূর্ণ, প্রকৃতি ও মাহিয়া। সাজু আহমেদের নির্দেশনায় এরপরের পরিবেশনা ছিল ‘ছন্দ মালিকা’ ও ‘টুকরা মালিকা’। রংপুরের শিল্পী ইমামা পরিবেশন করে ‘মেঘ বন্দনা’, মৌলভীবাজারের বিপ্লব দাসের নির্দেশনায় শিল্পীরা পরিবেশন করে ‘নূপুর নিক্বণ’, দীপা সরকার পরিবেশন করে ‘সরগম’। এছাড়াও, শিল্পীরা পরিবেশন করে নৃত্য ‘অর্পিতা’, ‘ছন্দমালা’, ‘শভ্র ছন্দ’, ‘তারানা’ প্রভৃতি। আজ মঙ্গলবার সকাল দশটা ৫ মিনিটে সেমিনারের মাধ্যমে শুরু হবে দ্বিতীয় দিনের উৎসব কার্যক্রম। ‘জন্মশতবর্ষে বুলবুল চৌধুরী : জীবন ও সময়’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন ড. শেখ মেহেদী হাসান। আলোচনায় অংশ নেবেন বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী। সন্ধ্যা ছয়টায় শুরু হবে পরিবেশনা পর্ব। এ পর্বে অতিথি থাকবেন নৃত্যশিল্পী গোলাম মোস্তফা খান ও নীলুফার ওয়াহিদ পাপড়ি। আর নৃত্যানুষ্ঠান পরিবেশনায় অংশ নেবেন মৌলভীবাজারের শিল্পী বিদ্যা, ঢাকার অবন্তিকা, আলিফ, অর্পিতা তাসমিয়া, লাবিবা, পাবনার কংকা, দিনাজপুরের মাইমুনা, নোয়াখালীর নৃত্যদল নটরাজ এবং কত্থকে ঝাপতাল পরিবেশন আয়োজক সংগঠন কত্থক নৃত্য সম্প্রদায়ের মালিহা, পূর্ণ, মাহিয়া ও শ্রুতি। উৎসবের শেষ দিন বুধবার সন্ধ্যা ছয়টায় শুরু হবে পরিবেশনা পর্ব। প্রভু বন্দনা দিয়ে শুরু হবে এদিনের আয়োজন। দলীয় পরিবেশনা উপস্থাপন করবে রেওয়াজ, নৃত্যাঞ্চল, আকৃতি ও সিলেটের নৃত্যশিল্পীবৃন্দ। একক পরিবেশনায় অংশ নেবেন প্রিয়াংকা, খুলনার মুনিয়া, সুপর্ণা, ইমরান ও মৌমিতা, দিনাজপুরের মাইমুনা, বৈশাখী মজুমদার, বগুড়ার মেঘা ও নুহা, তাবাসসুম আহমেদ এবং পার্থ দাস।
×