ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শতভাগ বিদ্যুতায়ন থেকে মাত্র ছয় শতাংশ দূরে দেশ

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮

শতভাগ বিদ্যুতায়ন থেকে মাত্র ছয় শতাংশ দূরে দেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের ৯৪ ভাগ মানুষের ঘরে এখন বিদ্যুত পৌঁছেছে। শতভাগ বিদ্যুতায়ন থেকে আর মাত্র ছয় ভাগ দূরে রয়েছে বাংলাদেশ। সরকার ২০২১ সালের মধ্যে শতভাগ মানুষের ঘরে বিদ্যুতায়নের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছিল। তবে সেই লক্ষ্যমাত্রা সময়ের অনেক আগেই পূরণ হচ্ছে। বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু রবিবার রাজধানীতে বিদ্যুত ক্রয়-বিক্রয় চুক্তি সই অনুষ্ঠানে এ কথা জানান। একক ক্রেতা হিসেবে উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে বিদ্যুত ক্রয় করে পিডিবি। এরপর বিতরণ কোম্পানির কাছে সেই বিদ্যুত বিক্রি করে পিডিবি। প্রতিষ্ঠানটি বিদ্যুত বিতরণ করার সঙ্গে সঙ্গে আরও ৫টি বিতরণ কোম্পানির কাছে বিক্রি করে থাকে। নিজেদের সঙ্গেতো নয়ই অন্য পাঁচটি বিতরণ কোম্পানির সঙ্গেও পিডিবির এর আগে কোন চুক্তি ছিল না। বিদ্যুত ক্রয়-বিক্রয়কে একটি কাঠামোর মধ্যে আনতে চুক্তি সই করা হয়েছে। রবিবার দুপুরে বাংলাদেশ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) সঙ্গে বিদ্যুত পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) এবং ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) এর সঙ্গে চুক্তি দুটি সই হয়। সংশ্লিষ্টরা আশা করছে বিদ্যুত বিতরণ কোম্পানির সঙ্গে পিডিবির জটিলতা হলে তা দ্রুত নিরসন করা সম্ভব হবে। দুটি চুক্তিতে পিডিবির পক্ষে সংস্থার সচিব ইমরুল হোসেন এবং আরইবির পক্ষে আসাফুদৌল্লা ও ডিপিডিসির পক্ষে জয়ন্ত কুমার শিকদার সই করেন। চুক্তি সই অনুষ্ঠানে বিদ্যুত, জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, আমরা এখন ৯৪ ভাগ মানুষের ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছি। সারাদেশে ৫৫ লাখ সোলার হোম সিস্টেম রয়েছে। আমরা সোলারে বিশ^চ্যাম্পিয়ান। তিনি সরকারের অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে আবারো নৌকায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানান। বর্তমান সরকারের পাঁচ বছর সময়ে তিনি অনেক কিছু শিখেছেন উল্লেখ করে বলেন আমি প্রতিদিনই নতুন নতুন বিষয় জেনেছি শিখেছি। আগামীতে বিদ্যুতখাতে আরও বিপুল বিনিয়োগ হবে। এজন্য একটি আইনী স্বচ্ছতার প্রয়োজন রয়েছে। এ ধরনের চুক্তি সেই স্বচ্ছতা সৃষ্টিতে সহায়তা করবে। বিদ্যুত সচিব আহমেদ কায়কাউস বলেন, এ ধরেনর চুক্তির বিশেষ প্রয়োজন ছিল। তিনিটি প্রতিষ্ঠানকে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে আইনী কাঠামোর মধ্যে আনার জন্য ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানে ডিডিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান বলেন, সরবরাহ ব্যবস্থার ত্রুটির কারণে আমরা অনেক ক্ষেত্রেই সমস্যায় পড়ি। এখন চুক্তিতে এসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আশা করছি এসব বিষয় এখন ঠিকঠাকভাবে সমাধান করা হবে। অনুষ্ঠানে পিডিবির জেনারেল ম্যানেজার (বাণিজ্যিক) কাউসার আহমেদ জানান, আমরা ২০০৪ সাল থেকেই এ ধরনের চুক্তির কথা বলে আসছিলাম। কিন্তু বেসরকারী সকল উৎপাদনকারীদের সঙ্গে আমাদের ক্রয়-বিক্রয় চুক্তি থাকলেও মাত্র তিনটি সরকারী সংস্থার সঙ্গে চুক্তি আছে। এখন চেষ্টা করা হচ্ছে সকলের সঙ্গে চুক্তি করতে। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি যেমন সম্ভব হবে তেমনি বিদ্যুতের মূল্য এবং ডেলিভারি পয়েন্ট নির্দিষ্ট করা থাকবে। অনুষ্ঠানে আরইবি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) মঈন উদ্দিন বলেন, চুক্তিতে রয়েছে পিডিবি বিদ্যুত দিতে চাইলে আমরা যদি নিতে না পারি তাহলে আমাদের জরিমানা দিতে হবে। কিন্তু আমরা যদি বিদ্যুত চেয়ে না পাই তাহলে উল্টো জরিমানার ব্যবস্থা রাখা হয়নি। তিনি বলেন উত্তরাঞ্চলে লোভোল্টেজের সমস্যা রয়েছে। আমরা এই সমস্যার কারণে ঠিকমতো বিদ্যুত বিতরণ করতে পারি না। এসব সমস্যা পিডিবিকে দূর করতে হবে। অনুষ্ঠানে পিডিবির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালেদ মাহমুদ বলেন, সবকিছুকে একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে নিয়ে আসা হচ্ছে। অতীতে এ ধরনের প্রক্রিয়ার মধ্যে আনার ব্যবস্থা ছিল না। কিন্তু এখানে হাজার হাজার কোটি টাকার বিষয় রয়েছে। ফলে স্বচ্ছতা এবং শৃঙ্খলার কোন বিকল্প নেই।
×