ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সারাদেশ এখন নিরাপত্তার চাদরে মোড়া

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮

সারাদেশ এখন নিরাপত্তার চাদরে মোড়া

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নির্বাচন সামনে রেখে সারাদেশ এখন নিরাপত্তার চাদরে মোড়া। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আগেই বিজিবি সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। সোমবার থেকে নামানো হয়েছে সেনাবাহিনীর সদস্যদের। এছাড়া আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ, র‌্যাব কোস্টগার্ড, আনসারসহ অন্য বাহিনীও মোতায়েন থাকছে। এছাড়াও ভোটের মাঠে আচরণবিধি প্রতিপালনে থাকছে নির্বাহী ও বিচারিক হাকিমরাও। এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা বলেছেন, সেনাবাহিনী মোতায়েনের ফলে ভোটারদের মধ্যে আস্থা বাড়বে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনী যে কোন ভূমিকা পালন করবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। আগামী ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন উপলক্ষে সারাদেশে এখন সাজ সাজ রব। শেষ মুহূর্তে প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারে মাঠে রয়েছেন। সকাল থেকে রাত অবধি ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। তবে নির্বাচনের দিন যতই এগিয়ে আসছে, অপেক্ষার প্রহরও কমছে। আর চারদিন পরেই অনুষ্ঠিত হবে একাদশ জাতীয় নির্বাচন। আগামী শুক্রবার সকাল ৮টার মধ্যে নির্বাচনী প্রচার বন্ধ করতে হবে প্রার্থীদের। এদিকে নির্বাচনকে সামন্যে রেখে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত কমিশনও। সোমবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা রাজধানীর রেসিডেন্সয়িাল মডেল স্কুল এ্যান্ড কলেজে নির্বাচন কমিশন আয়োজিত ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ ও ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটের মহড়া (মক ভোটিং) পরিদর্শন করেন। নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের উদ্দেশ্য হলো ভোটারদের মনে আস্থা তৈরি করা। সব রাজনৈতিক দলের কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ করি, নির্বাচন যেন নির্বাচনের মতো হয়। সহিংসতা, নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি, তর্ক-বিতর্ক, হাঙ্গামা পরিহার করে কেবল নির্বাচনী প্রচারের মধ্যে নিবদ্ধ থাকার জন্য অনুরোধ করি। এ ক্ষেত্রে সেনাবাহিনী এলে আরও সহায়তা হবে। অপ্রীতিকর সবকিছু এখন থেকেই নিয়ন্ত্রণ হবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনী যে কোন দায়িত্ব পালন করবে। সেনাবাহিনীর সামনে যদি এমন কোন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, যা নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন তারা নিজ উদ্যোগে সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি সংযত করবে। এগুলোর আইন আছে, এইড টু সিভিল পাওয়ার’ এর আলোকে তারা ব্যবস্থা নেবে। এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারাই। তাদের সহযোগিতা করতে সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চৌকস কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করবেন। প্রত্যেকেই ইভিএমের উপর সুন্দরভাবে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। ৬টি আসনের প্রতিটি কেন্দ্রেই ইভিএমে ভোট নেয়া হবে। প্রশিক্ষণ নেয়ার পর প্রত্যেকেই এখন জানেন, কীভাবে ইভিএমে ভোট নিতে হয়। সিইসি নুরুল হুদা বলেন, ইভিএম নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সন্দেহ ছিল। তাদের সন্দেহের গুরুত্ব দিতেই ইসি সীমিত সংখ্যায় মাত্র ছয়টি আসনে ইভিএমে ভোট নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এখনও যারা ইভিএম নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেন, তাদের বলি আপনারা ছয়টি আসনে চলমান প্রশিক্ষণে আসুন। সবকিছু ভালভাবে জানুন, বুঝুন। ২৭ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির জনসভার অনুমতি প্রসঙ্গে বলেন, এ বিষয়ে আমি এখনও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের সঙ্গে কথা বলিনি। এখান থেকে ফিরে আমি কথা বলব। এগুলো তো আইন-শৃঙ্খলার বিষয়। ডিএমপি এসব ভাল বোঝে। আমরা এগুলো তেমনভাবে জানি না। জনসভা ঘিরে কোন থ্রেট আছে কিনা, আশঙ্কা আছে কিনা আমি তা আলাপ করে দেখব। প্রথমবারের মতো এবারের জাতীয় নির্বাচনে ৬টি আসনের ভোট কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট হবে। ইতোমধ্যে দুই পর্যায়ে ইভিএমের উপর সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে এবং তৃতীয় পর্যায়ে নির্বাচন কমিশন জনসচেতনতা ও প্রচার কার্যক্রমে ইভিএমের ওপর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যরা কারিগরি দক্ষ হিসেবে অংশ নিচ্ছেন। ইসির কর্মকর্তারা জানান ছয়টি নির্বাচনী আসনে ইভিএমে ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তা দিতে প্রতিটি কেন্দ্রে তিনজন করে সশস্ত্রবাহিনীর সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও ওইসব আসনে ইভিএম সংক্রান্ত কারিগরি সহায়তা দিতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সশস্ত্রবাহিনীর সদস্য প্রস্তুত থাকবেন।
×