ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আব্দুল মালেক

ইতোমধ্যেই ঘটে গেছে ঐক্যফ্রন্টের নৈতিক পরাজয়

প্রকাশিত: ০৫:২৭, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮

ইতোমধ্যেই ঘটে গেছে ঐক্যফ্রন্টের নৈতিক পরাজয়

আমি যে সময়টির কথা আজ বলছি সেটি নব্বই দশকের শেষ দিকের কথা। কথিত দশকের শুরুতে দেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পরাজিত হয়ে বর্তমানে জামায়াত-বিএনপি জোটের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন সেই গ্লানি শেখ হাসিনার ওপর চাপিয়ে আওয়ামী লীগ ত্যাগ করে গঠন করেছিলেন তার গণফোরাম নামে দলটি। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এই খ্যাতি সম্পন্ন প্রার্থীর নির্বাচনী এলাকা ছিল ঢাকার মিরপুর আর তার অসম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপিদলীয় একজন অর্থবান মৎস্য ব্যবসায়ী। পরাজিত হয়ে ড. সাহেব একটি লিখিত বক্তব্যে নিজ এবং তার দলের পরাজয়ের কারণ হিসেবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ওপর অযোগ্যতার অভিযোগ চাপিয়ে অত্যন্ত রূঢ়তার সঙ্গে তাকে দলীয় সভানেত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানান। তার এই বক্তব্যে স্বয়ং খালেদা জিয়া প্রকাশ্যেই আনন্দ প্রকাশ করেছিলেন তাদের দলীয় সভায়। তখন থেকেই তিনি হয়ে উঠেছিলেন তাদের প্রিয়ভাজন। অভিমানী ক্ষুব্ধ হাসিনা এই কথার পর পার্টি থেকে পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু পরিস্থিতির ভয়াবহতা বিবেচনায় তখন শঙ্কিত হয়ে উঠেছিল মুক্তি যুদ্ধের সপক্ষ মানুষের বিবেক। প্রথিতযশা কবি ও খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব বেগম সুফিয়া কামালের নেতৃত্বে মুক্তবুদ্ধির কিছু ব্যক্তিবর্গ বত্রিশ নম্বরে যান এবং বিষয়টির বিপদ সম্পর্কে বোঝালেন পরিস্থিতির ভয়াবহতা। অবশেষে হাসিনা তাদের অনুরোধে নিজের অভিমান সম্বরন করে পদত্যাগপত্র ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হলেন। প্রকৃতপক্ষে সে সময় হাসিনা যদি সূর্য হয়ে থাকেন তবে তার এমন অসময় অস্তাচলে যাওয়ার পর মাটির প্রদীপ হয়েও দলের ভার নেয়ার মতো যোগ্যতা কারও ছিল না। এমন কি সমালোচক এই ব্যারিস্টার সাহেবেরও নয়। সে কারণে তিনিসহ আওয়ামী লীগের নেতৃবর্গ বহু চেষ্টা করে এক সময় অনিচ্ছুক শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনেছিলেন। আশা ছিল তার কাঁধে বন্দুক রেখে ড. কামাল নিজে শিকারি হবেন। কিন্তু কাঁধটি যে মুজিব কন্যার সে বিষয়ে তার বোধোদয় হতে অবশ্য দেরি হয়নি। সে যাই হোক আওয়ামী লীগ থেকে পরাজিত হয়ে দলত্যাগ করে তিনি গঠন করেন গণফোরাম নামে নিজের দল। কিন্তু সেটি গঠনে আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাত এই আইনজীবী দেশের তেমন কোন নেতা-নেত্রীকে তার সঙ্গে শুরু থেকে আজ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট করতে পারেননি। কেবল সেই সময় রাজনৈতিক অঙ্গনে একমাত্র চেনা মুখ মোস্তফা মহসিন মন্টুকে পাশে নিয়ে গঠন করেছিলেন তার গণফোরাম। এই নিউইয়র্কে দেশের ক্ষুদ্র জেলা-উপজেলার ইত্যাদিরও সংগঠন পর্যন্ত আছে কিন্তু গণফোরামের সরব উপস্থিতি কখনও দেখেছি কি? এ কথা বলতে গিয়ে তার দোসর দেশে বিদেশে প্রথিতযশা আর একজন ব্যক্তিত্ব প্রসঙ্গে ও একটি মজার কথা মনে হলো। যিনি ড. কামালের সঙ্গে ১/১১ সরকারের নেপথ্য কারিগর হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছেন। আর্মি ব্যাকড সেই সরকারের সময় অর্ধ নোবেল বিজয়ী ও তৎকালীন গ্রামীণ ব্যাংক প্রধান সেই ড. মুহম্মদ ইউনূসেরও সাধ জেগেছিল একটি রাজনৈতিক দল গঠন করার। তার ধারণা ছিল গ্রামীণ ব্যাংকের শত শত কর্মী-হাজারো ঋণ গ্রহীতাসহ সংখ্যাতিত মুগ্ধ স্তাবক সবাই এসে আশ্রয় নেবে তার রাজনীতির ছাতার তলায়। কিন্তু হা হতোস্মি খবরের কাগজের রিপোর্ট অনুসারে বিশ্ববিখ্যাত এমন ব্যক্তির দলে সর্বসাকল্যে নাম লিখিয়েছিলেন মাত্র তিনজন মানুষ। তার এক জনও বেশি নয়। সে যাই হোক আমি আজ লিখতে বসেছি ড. ইউনূস নয় ড. কামাল হোসেন প্রসঙ্গে। দেশে গণফোরাম গঠনের আরও কিছু পরের সময় তখন। যখন তিনি নিউইয়র্কে আগমন করেছিলেন মূলত তার নিজ দলের শাখা খোলার ইচ্ছায়। এখানে নিজের সম্পর্কে কিছ বলার প্রয়োজন নিয়ে বলি নইলে একটা ধোঁয়াশা থেকে যেতে পারে। আমি তদানীন্তন সময়ে এই নগরের একটি বাংলা সাপ্তাহিকের সম্পাদকীয় লেখা থেকে পত্রিকা সম্পাদনা, খ্যাতনামা ব্যক্তিবর্গের সাক্ষাতকার গ্রহণ ইত্যাদি দায়িত্ব মাথায় নিয়ে যাকে বলে জুতা সেলাই থেকে চ-ি পাঠ করে জীবিকা নির্বাহ করছি। নবগঠিতব্য গণফোরাম দলের পক্ষ থেকে তখনকার একজন কমিউনিটি নেত্রীÑ সুপরিচিত মুখ লাকি খালেক ও আরও কিছু নেতা কোন এক নির্দিষ্ট রবিবারে তাদের সভায় যাওয়ার জন্য আন্তরিকভাবে আমন্ত্রণ জানিয়ে বললেন সেখানে দেশের রাজনীতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখবেন ড. কামাল হোসেন। গণফোরামের এক প্রেস রিলিজ ইতোপূর্বে পেয়ে পত্রিকার পাতায় আমি সে খবর আগেই ছেপেছি। সভাস্থলে উপস্থিত হয়ে ড. কামালের একটি সাক্ষাতকার নেয়ার সুযোগটি হারাতে চাইলাম না। এর সূত্র ধরে যদি না বর্ণনা করি যে এই নিউইয়র্ক শহরের বাঙালী প্রবাসীরা কি পরিমাণ রাজনীতি অন্তঃপ্রাণ তবে আমার দেয়া সেদিনের চিত্রটি সম্পূর্ণ হবে না। বর্তমান সময়ের হৈ হৈ কা- বাদ দিলেও সেই নব্বইয়ের প্রারম্ভেও এই নগরে প্রধানমন্ত্রী বা বিরোধীদলীয় নেত্রী হিসেবে যখনই হাসিনা বা খালেদা এসেছেন তখন তাদের সভায় শত শত সাধারণ অনুরাগী মানুষ তাদের সভায় যোগ দিতেন দলে দলে। এমন কি এরশাদ সাহেব পর্যন্ত এখানে মোটামুটি বড়সড় সমাবেশ করে গেছেন। শুধু তাই নয় পথে-ঘাটে, দাওয়াতে আপ্যায়নে, দেশীয় রেস্টুরেন্টে, গ্রোসারিতে সাধারণ বাঙালী সমাজ সমাবিষ্ট হলে নিজ নিজ রাজনৈতিক দলের পক্ষে এমন হৈ হল্লা জুড়ে দেন যাতে শুধু লাঠালাঠি করতেই বাকি রাখেন। তবে সেটাও যে কখন হয় না এমন কথাও বলতে চাই না। কিন্তু সেদিন মধ্যাহ্নের দিকে নগরীর রিগো পার্কে কামাল সাহেবের সভায় আমি সস্ত্রীক উপস্থিত হয়ে দেখলাম সেখানে উপস্থিত আমরাসহ সর্বসাকল্যে জনা পনেরো মানুষ হবে। বলতে বাধ্য হচ্ছি এর মধ্যে ১০ জনই আয়োজনকারী ব্যক্তিবর্গ। সামনের সারিতে বসে স্পষ্ট শুনতে পেলাম নেতা ড. কামাল অপ্রস্তুত আয়োজনকারীদের নিজেই সান্ত¦না দিচ্ছেন- আজ রবিবার বলে মনে হয় লোকজন উপস্থিত হতে পারেননি। কিন্তু এখানে যে সবকিছুর উৎকৃষ্ট সময়ই তো শনিবার ও রবিবার। সেটা রাজনৈতিক দলেরই হোক বা কোন আঞ্চলিক সংগঠনেরই হোক। নির্দিষ্ট সময়ের বেশ পর পর্যন্ত অপেক্ষা শেষ করে তিনি অতি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দিয়ে সমাপ্ত করলেন বক্তৃতা। বেগম জিয়ার আমলে ওই সময়টাতে কিছুদিন পূর্বে ঢাকায় বায়তুল মোকাররম মসজিদের তদানীন্তন খতিব বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে স্পর্ধা ভরে পাকিস্তানী পুরনো কায়দায় বক্তব্য রেখে দেশজুড়ে আগুন জ্বেলেছেন প্রথমবার। এটা নিয়ে অনেক বাদ প্রতিবাদ চলছে প্রবাসেও। কিন্তু এই বিষয়টি নিয়ে তার কোন উচ্চারণ না দেখে বক্তৃতা শেষে দর্শকদের মধ্য থেকে আমার স্ত্রী ক্রুদ্ধ স্বরে তাকে প্রশ্নœ রেখেছিলেনÑ খতিব সাহেবের এই স্বাধীনতাবিরোধী ন্যক্কারজনক হুঙ্কারের পরিপ্রেক্ষিতে আপনার কি কোন বক্তব্য নেই? তিনি সোজাসুজি কিছু না বলে প্রায় এড়িয়েই গেলেন উত্তরটি। সেই রবিবারে পরের পর্বটি ছিল পত্রিকার পক্ষ থেকে ড. কামালের সঙ্গে আমার সাক্ষাতকার গ্রহণ। যার মাধ্যমেই সেদিন উঠে এসেছিল আর এক বেদনাদায়ক অজানা ইতিহাস। আমি ড. কামাল হোসেনকে সেই সাক্ষাতকার পর্বে গুরুত্বপূর্ণ দীর্ঘ যে প্রশ্নটি করেছিলাম সেটি ছিলÑ বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার দীর্ঘদিন পর্যন্ত কেন সৌদি আরব বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়নি? অথচ স্বাধীনতা লাভের অল্প সময়ের মাঝে বঙ্গবন্ধু আমেরিকার মতো সুপার পাওয়ারের স্বীকৃতি আনতে সক্ষম হয়েছিলেন। ইউরোপের নানা দেশ, মধ্যপ্রাচের দেশসহ ইসলামী দেশগুলোও বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল দ্রুত। কিন্তু সৌদি আরব ব্যতিক্রমী দেশ হিসেবে বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর আগে পর্যন্ত কেন স্বীকৃতি দিতে বিলম্ব করছিল? অথচ বঙ্গবন্ধুতো অনেক আশা নিয়ে আপনাকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছিলেন আপনিও বেশ কয়েকবার সৌদি আরবে গিয়ে এ বিষয়ে আলাপ আলোচনা করেছিলেন। সবাই জানেন কিছুদিন আগে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জামায়াত নিয়ে এক সাংবাদিকের সাধারণ প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তিনি যেভাবে খামোশ বলে তার মুখবন্ধ করে গালিগালাজ দিয়ে চাপিয়ে দিলেন দুই টাকা চার টাকার অপমান। কিন্তু কামাল হোসেন আমার সঙ্গে সেই সাক্ষাতকারে এই প্রশ্নের জবাবে নরমকণ্ঠে বলেছিলেনÑ ‘আমি যতবারই সৌদি আরবে স্বীকৃতির বিষয়টি নিয়ে গেছি ততবারই তারা আশ্বাস দিয়েছিল শীঘ্রই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়া হবে বলে। তারপর সেদিন তিনি দেশের স্বাধীনতা উত্তরকালের এক বেদনাদায়ক অধ্যায়ের অকথিত ইতিহাস ব্যক্ত করে ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে অস্থির বঙ্গবন্ধু একদিন আমাকে বললেন কামাল তুমি বার বার সে দেশ থেকে ফিরে এসে বলছ এবার তারা স্বীকৃতি দেবে। কিন্তু সেটা তো তারা করছেন না।’ -এরপর বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে আমি শেষবারের মতো সৌদি আরবে গিয়ে বাদশার সঙ্গে সাক্ষাত করি। আমার অনুরোধ শুনে বাদশা কিছুক্ষন নীরব থেকে বললেন- ‘দেখ আমরা তো বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে চাই। কিন্তু মুসলমানদের দেশ হয়েও বাংলাদেশে আজান দেয়া যায় না, মসজিদে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে, মানুষ নামাজ পড়তে পারে না। ইসলামের নবীর দেশ হয়ে আমরা কি করে এমন একটি দেশকে স্বীকৃতি দিতে পারি বলো? ‘তখন আমি বাদশাকে জানালামÑ এসব কথা কোনক্রমেই সত্য নয়। আপনারা কার কাছ থেকে এমন মিথ্যা তথ্য পেয়েছেন? উত্তরে বাদশাহ আমাকে পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন এ কথা তাদের দেশে এসে জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির গোলাম আজম। ইতোপূর্বেও আমাদের কাছে এসে তিনি আরও বলেছিলেন যুদ্ধকালে পূর্ব পাকিস্তানে তারা কোন রকম গণহত্যা চালায়নি। বরং হিন্দুস্তানী চররা সেখানে অদ্যাবধি তৎপরতা চালাচ্ছে ইসলাম ও পাকিস্তান ধ্বংস করার জন্য।’ কামাল হোসেন তার একই সাক্ষাতকারে সেদিন বলেছিলেনÑ ‘শুধু সৌদি আরবেই নয় দুনিয়ার অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোতে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় ও স্বাধীনতা লাভের পর এই গোলাম আযমের নেতৃত্বে জামায়াতে ইসলামী বিদেশে স্বাধীনতাবিরোধী এই রকম মিথ্যা ও অসৎ প্রচারণা চালিয়েছিল।’ এই অজানা ইতিহাসটি প্রবাসের একটি পত্রিকায় প্রকাশ করে তিনি এক অসাধারণ কাজ করেছিলেন সেই সময়। কিন্তু সেই তিনি ঘৃণ্য দল যারা আজও আমাদের স্বাধীনতার শত্রু এমন একটি দলের সেনাপতি হয়ে সগর্বে ধরা কে সরা জ্ঞান করছেন কেন। আরও একটা কথা তার মনে আছে নিশ্চয়ই কারন তিনি তো স্মৃতি ভ্রষ্ট হননি। মনে আছে নিশ্চয়ই সেই গোলাম আযমকে লুকিয়ে দেশে ফিরিয়ে এনেছেন বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়াউর রহমান এবং খালেদা জিয়া তাকে দিয়েছেন নাগরিকত্ব। শুধু তাই নয় রক্তলোভী শকুনদের গাড়িতে তুলে দিয়েছিলেন জাতীয় পতাকা। তিনি কি করে ভুললেন যে ৯১ ও ২০০১ সালের ভোটে খালেদা জিয়া কিভাবে গোলাম আযমের বক্তব্যের চাইতে আরও তীব্র স্বরে বলেছেনÑ এই ভোটে আওয়ামী লীগ জিতলে মসজিদে মসজিদে হবে উলুধনিÑ নামাজ হবে না। তিনি কী করে সেই খালেদাকে বলছেন গণতন্ত্রের মানস কন্যা। আজ এই ডিসেম্বর মাসে কী করে জামায়াতকে তিনি নেতৃত্ব দিয়ে এই বিজয়ের মাসে লুকিয়ে থাকা গর্ত থেকে মুক্তি দিয়ে পাখা গজানোর সুযোগ দিয়ে মুক্তি দিলেন বাংলার আকাশে। ড. কামালের নেতৃত্বাধীন বিএনপি জামায়াত ঐক্যফ্রন্টের ষড়যন্ত্র থেমে নেই। সাম্প্রতিক নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় দেখা গেছে ছাত্রছাত্রীদের ইউনিফর্ম বানিয়ে এবং পরিধান করে স্কুলব্যাগে অস্ত্র নিয়ে তারা অরাজকতা সৃষ্টি করেছিল। একই কায়দায় নির্বাচনের সময় পুলিশ, বিজিবি এমনকি সেনা সদস্যের নকল পোশাক পরে মানুষকে হুমকি দিয়ে ভয়ভীতি প্রদান করে ভোটারদের ভোট দনে বিরত রাখার কৌশল নিতে পারে বলে দেশ থেকে আমার কাছে কেউ কেউ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। দেখলাম শেখ হাসিনাও অভিযোগ করেছেন ওরা ভুয়া ব্যালট ছাপছে প্রেস থেকে। দেশের কেউ কেউ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন নৌকা হাতে নিয়ে বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা, জয়বাংলা ইত্যাদি স্লোগান দিয়ে ঐক্যফ্রন্ট বিশৃঙ্খলা ও বিভ্রান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। এত কিছুর পর একটা কথা রয়েছে সবার ওপরে। আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ভোটযুদ্ধের প্রধান দুই জোটের দুই সেনাপতি হচ্ছেন এক পক্ষে মহাজোটের সেনানী শেখ হাসিনা ও অন্য পক্ষ হচ্ছে বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের সেনাপতি ড. কামাল হোসেন। লোকে বলাবলি করছেন দ্বিতীয় পক্ষের এক দল এক ভোটের নেতা তার জীবনের যাবতীয় নির্বাচনের মতো এবারও নিশ্চিত পরাজিত হওয়ার আশঙ্কায় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেয়ার প্রাক্কালেই প্রার্থী না হয়ে শটকে পড়েছেন। এটাকে ভোটযুদ্ধে তার নৈতিক পরাজয়ই বলতে হবে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই স্বয়ং সেনাপতি যদি এমন পলায়নপর হন তাহলে সঙ্গী-সাথীদের দশা দাঁড়ায় কোথায়। সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর অনুসারে অধিকাংশ স্থানে ফ্রন্টের ঢিলেঢালা প্রচারণা, পোস্টার লাগানোয় উদাসীনতা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ প্রতিপক্ষের ওপর হামলা, অকারণ মিথ্যাচার ও বিষোদগার ইত্যাদি কর্মকা- প্রমাণ করছে তারা ভোটারদের মুখোমুখি হতে ভয় পেয়ে গেছে। লেখক : আমেরিকা প্রবাসী সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
×