ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পণ্য মূল্যে স্বস্তি

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮

পণ্য মূল্যে স্বস্তি

দেশের সাধারণ মানুষের প্রতিদিনের চাহিদা আবশ্যিক দ্রব্যসামগ্রী, যা জীবনের নিয়ামক শক্তি। নৈমিত্তিক দিন যাপনে প্রয়োজনীয় পণ্য মূল্যের লাগামছাড়া গতি জনগণকে যে মাত্রায় দুর্ভোগের শিকার করে, তাতে সংশ্লিষ্টদের নাভিশ্বাস হওয়ার উপক্রম ঘটে। ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যে জীবনযাত্রার মানও নির্ণীত হয় সেই অবস্থাকে ভিত্তি করে। এর প্রভাব পড়ে যেমন জীববৈচিত্র্যে একইভাবে জনগোষ্ঠীর সার্বিক জীবনযাত্রায়ও। এর সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত খাদ্য উৎপাদন এবং খাদ্যাভ্যাস। ছয় ঋতুর তারতম্যের কারণে ফলমূল, শাক-সবজিসহ বিভিন্ন শস্যের উৎপাদন ব্যবস্থা এক অবিচ্ছিন্ন সুতায় গাঁথা। তার পরেও শস্য, শ্যামল, সুজলা, সুফলা বাংলার উর্বর মাটি প্রকৃতিগতভাবে কোন ধরনের শস্যের অনুপযোগী নয়। সব সময় সব ধরনের শাক-সবজি পাওয়া গেলেও ঋতুভেদে সেখানে ভিন্নতা চলে আসে। বাংলাদেশের মতো উর্বর পলিমাটির দেশে শাক-সবজির ঘাটতি কিংবা সঙ্কট হওয়ার কথা নয়। প্রথমত পর্যাপ্ত প্রতিদিনের খাদ্যসামগ্রী বাজারে থাকলেও তার উচ্চমূল্যে মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ে। ধারণা করা হয় এক অদৃশ্য বাজার সিন্ডিকেট প্রয়োজনীয় পণ্যের কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে বাজার ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করে দেয়। শুধু তাই নয়, এমন সুপরিকল্পিতভাবে ভোক্তা শ্রেণীকে বিভ্রান্ত করা হয় যে, তারা মূল সমস্যার ধারে কাছেও যেতে পারে না। তবে এ বছরে দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি সেভাবে দৃশ্যমান হচ্ছে না। বাজার অর্থনীতি ক্রেতা সাধারণের সাধ্যের নাগালে। সরকার কি অশুভ বাজার সিন্ডিকেটকে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে? নাকি সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয় স্থান দখল করে সবজির ক্রমবর্ধমান ফলনকে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে। বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণায় বলা হচ্ছে লবণের দরে নাকি চিনি বিক্রি হচ্ছে। শীতকালীন সবজিতে যে মূল্যবৃদ্ধির পাঁয়তারা থাকে এবার সে ন্যক্কারজনক অবস্থা এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। বাংলাদেশের কৃষিতে জোয়ার এসেছে এমন প্রতিবেদন বিশ্বের বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান উল্লেখ করছে। বলা হচ্ছে সবজি ও মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয়তম স্থানে আর ধান ফলনে চতুর্থতম। এসবের প্রভাব প্রতিদিনের যাপিত জীবনকে প্রভাবিত করবে সেটাই তো স্বাভাবিক। তার ওপর বাজার ব্যবস্থায় চাঁদাবাজি, হরেক রকম ফন্দি ফিকিরের ওপরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যথার্থ ভূমিকায় জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এর প্রভাবও স্পষ্ট এবং প্রত্যক্ষ। দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে অবস্থান করায় সাধারণ জনগণ স্বাচ্ছন্দ্যে শান্তিতে দিন কাটাতে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে না। মাসটা একেবারে নির্বাচনের। সাধারণ জনগোষ্ঠী প্রত্যক্ষ রায়ের মাধ্যমে নতুন সংসদ সদস্য নির্বাচন করে উন্নয়ন ধারায় অনেকখানি এগিয়ে বর্তমান সরকারকেই নির্বাচিত করবে, এই কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়। এক সময় ছিল ছিনতাই, রাহাজানি, বাজার সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য, যা জনজীবনকে অসহনীয় পর্যায়ে নিয়ে যেত। শীতকালীন সবজি মানুষের হাতের নাগালে আসত শীত চলে যাওয়ার সময়। তাও আবার ক্ষণিকের জন্য। এবার সে দৃশ্য একেবারে বিলীন। মানুষ তার নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী নির্ধারিত আয়ের মধ্যেই হাতের কাছে পেয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সরকারের এটাও একটা অসাধারণ সাফল্য, যা নির্বাচনের ওপর প্রত্যক্ষভাবে প্রভাব বিস্তার করবে। সাধারণ মানুষ খেয়ে পরে ভাল থাকাটা সবার আগেই বুঝবে। যা তাকে শুধু সচেতনই করবে না, তার মূল্যবান রায়কেও যথার্থ প্রার্থী নির্বাচনে প্রয়োগ করতে উৎসাহিত করবে। কৃষি শিল্পের এই অনন্য উন্নয়নের সুফল ও সুবিধা ভোগ করছে দলমত নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষ। সুতরাং সমৃদ্ধির অগ্রগামিতায় বর্তমান সরকার যে ধারাবাহিক গতিতে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে, সাধারণ মানুষ এর কোন ব্যত্যয় হতে দেবে না। জনগণের পাশে থাকা এই জনবান্ধব সরকারকে দেশের মানুষই পুনরায় নির্বাচন করে উন্নয়নের গতি প্রবাহকে সামনের দিকে নিয়ে যাবে। এই আশা দেশপ্রেমিক সব মানুষের।
×