ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আওয়ামী লীগের সংবাদ সম্মেলন

সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে বিএনপি

প্রকাশিত: ০৬:৫৭, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮

 সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে বিএনপি

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচটি ইমাম বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত নীল নক্সা অনুযায়ী নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, হামলা, অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে। নির্বাচনী প্রচার শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত তাদের সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে আওয়ামী লীগের পাঁচ জন নিহত এবং ২৫০ জনের বেশি নেতা-কর্মী সমর্থক গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন। শত শত নির্বাচনী কার্যালয় ভাংচুর হয়েছে, আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের বাড়ি ও দোকানপাটেও হামলা করা হয়েছে। আবার নিজেরাই সহিংসতা সৃষ্টি করে নির্বাচন কমিশনে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছে। রবিবার দুপুরে ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রতিপক্ষ শুধু বিএনপিকে বলছি না। তাদের সঙ্গে জামায়াত, যুদ্ধাপরাধী ও বাংলা ভাইয়ের শিষ্যরা জুটেছে। নির্বাচন ঘিরে এক সঙ্গে তারা চরমপন্থা বেছে নিতে পারে। সেজন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের সব সময় সতর্ক থাকতে হবে। এইচটি ইমাম বলেন, গণতান্ত্রিক রীতিনীতি অনুযায়ী নির্বাচনের মাঠে না থেকে আওয়ামী লীগসহ সকল গণতান্ত্রিক দলের ও জোটের অফিস ভাংচুর, মিছিলে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করছে বিএনপি-জামায়াত-ঐক্যফ্রন্ট। ২৪টি জায়গায় হামলা ও গুলিবর্ষণ করা হয়েছে, ১১টি গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়েছে, দুটি পুলিশ ভ্যানেও হামলা চালানো হয়েছে। এছাড়া সারাদেশে আওয়ামী লীগের গাড়িবহরে হামলা, পেট্রোল বোমা নিক্ষেপসহ নানা নাশকতা চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, তাদের সন্ত্রাসী হামলায় নিহত আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতা হলেন, ইউসুফ আল মামুন, মোহাম্মদ হানিফ, ইসহাক হোসেন, জামাল উদ্দিন, তোফাজ্জল হোসেন ম-ল। এইচটি ইমাম বলেন, ‘আজ (রবিবার) সকালে আমি আসতে আসতে আমাকে আসাদুজ্জামান নূর সাহেব টেলিফোন করে জানালেন, নীলফামারীতে তার ওখানেও বড় রকমের হামলা হয়েছে। এই ধরনের প্রতিদিনই আমরা প্রতিনিয়ত তথ্য পাচ্ছি।’ বিএনপি-জামায়াত ২০০১ সালের মতো সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা করেছে জানিয়ে এইচটি ইমাম বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন জায়গায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে ভয়ভীতি সৃষ্টি করা হচ্ছে এবং তাদের ওপর হামলা করা হচ্ছে বলে আমাদের কাছে রিপোর্ট আসছে। বিএনপি-জামায়াত জোট আবারও ২০০১ সালের স্টাইলে সংখ্যালঘু নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছে। এই ধরনের হামলা ও সহিংসতায় জড়িত বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে তিনি নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের কাছে দাবি জানান।’ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করা প্রসঙ্গে এইচটি ইমাম বলেন, আমার জানা মতে এবং যতটুকু জেনেছি তাতে তিনি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার যখন ক্ষমতায় এসে যখন ঢালাওভাবে মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট দেয়া হয়, তখন তিনি এমন একটি সার্টিফিকেট সংগ্রহ করেছিলেন। তিনি আরও বলেন, ‘সে সময় আমি শুধু মন্ত্রিপরিষদ সচিবই ছিলাম না, আমার একটি বিরাট অরগানাইজেশন ছিল ইয়ুথ ক্যাম্প-যুব শিবির। মুক্তিযুদ্ধে যেমন ১১টি সেক্টর ছিল, তেমনই ইয়ুথ ক্যাম্প সারা দেশে কাজ করত। সেখানে প্রথমে অভ্যর্থনা কক্ষে গিয়ে যারা মুক্তিযুদ্ধে যেতে চায় তাদের রিপোর্ট করতে হতো। তারপর যাকে যেমন ট্রেনিং দরকার হয় সেখানে পাঠানো হতো। কিন্তু আমার কাছে এমন কোন তথ্য নেই যে তিনি (মির্জা ফখরুল) সেখানে গিয়েছিলেন।’ এইচটি ইমাম বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনার পক্ষে এবার ব্যাপক গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশের জনগণ আর দুর্নীতিবাজ সন্ত্রাসী জঙ্গীবাদের দানকারী অর্থপাচারকারীদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় দেখতে চায় না। নৌকায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানিয়ে এইচটি ইমাম বলেন, ‘আপনারা লক্ষ্য করেছেন বিএনপি জামায়াত জোটের নির্বাচনী কর্মকা-ে কি ধরনের ভাটা পড়েছে। দেশের সর্বত্রই বিএনপি নেতাকর্মীরা দলে দলে, হাজার হাজারে আওয়ামী লীগে যোগদান করছে।’ তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বাংলাদেশের জনগণ নিরঙ্কুশ সমর্থন ব্যক্ত করছে। আমি বিশ্বাস করি আগামী ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের জনগণ তাদের সুচিন্তিত রায়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে আবারও নির্বাচিত করবে।’ সাংবাদিক সম্মেলনে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য খন্দকার বজলুল হক, আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আকতার উজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
×