ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

জামায়াত নেতাদের প্রার্থিতা বাতিলের আবেদন খারিজ

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮

 জামায়াত নেতাদের প্রার্থিতা বাতিলের আবেদন খারিজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আদালতের রায়ে যেসব আসনে বিএনপির প্রার্থীশূন্য হয়ে পড়েছে সেসব আসনের পুনর্তফসিল বা বিকল্প প্রার্থী মনোনয়নের কোন সুযোগই নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। রবিবার কমিশন সভা শেষে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়াও জামায়াতে ইসলামীর যেসব প্রার্থী ধানের শীষ বা স্বতন্ত্র প্রতীকে নির্বাচন করছেন, তাদের প্রার্থিতা বাতিলের যে আবেদন ইসিতে করা হয়েছিল তাও খারিজ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ফলে জামায়াতের এইসব প্রার্থীদের নির্বাচনে অংশ নিতে কোন বাধা নেই। রবিবার কমিশন সভার পর ইসি সচিব হেলালুদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, জামায়াতের প্রার্থীদের প্রার্থিতা বাতিলের আইনগত কোন সুযোগ নেই। এর আগে বিএনপির পক্ষ থেকে আদালতের রায়ে যেসব আসনে বিএনপির প্রার্থীর নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে সেসব আসনের পুনর্তফসিল বা যেসব বিকল্প প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছিল তাদের মধ্য থেকে একজনকে মনোনয়ন দেয়ার আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু রবিবারের সভায় বিএনপি এই আদেন নাকচ করে দেয়া হলো। এছাড়াও এর আগে জামায়াতের ২৫ নেতার প্রার্থিতা বাতিলের দাবি জানিয়ে নির্বাচন কমিশনে একটি আবেদন করেন চার ব্যক্তি। পরে ওই আবেদনকারীরা এই দাবিতে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। তাদের আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত তিন কার্য দিবসের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেয়। এরমধ্যে শুক্রবার এইচ টি ইমামের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনে গিয়ে জামায়াত নেতাদের প্রার্থিতা বাতিলের দাবি জানান। যুক্তি হিসেবে তিনি বলেন,‘তারা মনোনয়ন ফরমে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করেছেন। দলের জায়গায় তারা তো লিখেছে বিএনপি, কিন্তু তারাতো বিএনপির নয়-যেটা বিভিন্ন পত্রিকায় এসেছে। মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করেছেন। তাদের মনোনয়ন বাতিলযোগ্য। আমরা কমিশনকে জামায়াতের মনোনয়ন বাতিলের অনুরোধ করেছি।’ এদিকে আগামী ২৭ ডিসেম্বর রাজধানীতে বিএনপি কেন সমাবেশ করতে পারবে না তা জানতে চেয়ে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছে দলটি। তবে তাদের চিঠির প্রেক্ষিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা বলেছেন ২৭ ডিসেম্বর রাজধানীতে সমাবেশ করার অধিকার রাখে বিএনপি। চিঠিতে বিএনপি উল্লেখ করেছে নির্বাচনী প্রচারের শেষ দিন ২৭ ডিসেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কেন জনসভা করতে পারবে না। বিএনপির এই প্রশ্নের জবাবে সিইসি কে এম নুরুল হুদা বলেছেন, ২৭ ডিসেম্বর জনসভা করার অধিকার বিএনপি রাখে। এ বিষয়ে তিনি পুলিশের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন। রবিবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশনে বিএনপি নেতারা সিইসির সঙ্গে দেখা করেন এবং তাকে সমাবেশের বিষয়ে লিখিত দেন। প্রায় ঘণ্টাখানেক আলোচনার পর নেতারা বের হন। এরপর গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে ব্রিফ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। এ সময় বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু ও আহমেদ আজম খান, দলীয় চেয়ারপার্সনের প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শায়রুল কবীর খান উপস্থিত ছিলেন। এ সময় সাংবাদিকদের নজরুল ইসলাম খান বলেন, প্রথা অনুযায়ী নির্বাচন ঘনিয়ে এলে শেষ দিকে সব দল বড় জনসভা করে। সে অনুযায়ী বিএনপি ২৭ ডিসেম্বর সভা করতে চেয়েছিল। নজরুল ইসলামের দাবি ডিএমপি কমিশনার তাদের জানিয়েছেন, ২৪ ডিসেম্বরের পর ঢাকায় আর জনসভা করা যাবে না। অথচ নির্বাচনী আইন অনুযায়ী ২৮ ডিসেম্বর সকাল ৮টা পর্যন্ত প্রচার চালানো যাবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ২৪ ডিসেম্বর ঢাকায় জনসভা করবেন। প্রধানমন্ত্রীর পর আর কেউ জনসভা করতে পারবে না, এটা বিমাতাসুলভ আচরণ এবং উদ্দেশ্যমূলক। বিষয়টি নির্বাচনী কাজে বাধা দেয়ার শামিল। তারা সিইসিকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন। সিইসি যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন। একই সঙ্গে সিইসি বলেছেন, বিএনপি ২৭ ডিসেম্বর সভা করার অধিকার রাখে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, নির্বাচন কমিশন সুনাম রক্ষার স্বার্থে এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে। প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী মর্যাদার প্রতীক। তাদের আশা নির্বাচনে এ বাহিনীর সদস্যরা নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালন করে দেশের মর্যাদা বাড়াবেন।
×