ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

‘পুত্র’ ও ‘বহিপীর’ নাটকের উদ্বোধনী মঞ্চায়ন

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ২২ ডিসেম্বর ২০১৮

  ‘পুত্র’ ও ‘বহিপীর’ নাটকের উদ্বোধনী মঞ্চায়ন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একই দিনে ঢাকার মঞ্চে যুক্ত হলো দুটি নতুন নাটক। ছুটির দিনের সন্ধ্যায় নাট্যরসিকরা উপভোগ করেছেন ভিন্ন কাহিনীর এক জোড়া নাটক। শুক্রবার মঞ্চস্থ হলো সেলিম আল দীন রচিত ঢাকা থিয়েটারের নাটক ‘পুত্র’। দলের ৪৭তম প্রযোজনাটির নির্দেশনা দিয়েছেন শিমূল ইউসুফ। অন্যদিকে মঞ্চস্থ হয় সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ রচিত ঢাকা থিয়েটার মঞ্চ পরিবেশিত নাটক ‘বহিপীর’। দলের ২৪তম প্রযোজনাটির নির্দেশনা দিয়েছেন আফরিন হুদা তোড়া। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয় ঢাকা থিয়েটারের ৪৭তম প্রযোজনা ‘পুত্র’। আর এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে বহিপীর নাটকের উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হয়। ঢাকা থিয়েটারের নতুন প্রযোজনাটি সেলিম আল দীনের সর্বশেষ রচনা ‘পুত্র’। পুত্র হারানো এক দম্পতির অবিশ্রান্ত বিলাপ ও স্মৃতিমন্থনতার উপাখ্যান এ নাটক। যার কাহিনীতে দেখা যায়, মাইট্যাল সিরাজ ও তার স্ত্রী যমুনাপারের মেয়ে আবছা। তাদের পুত্র মানিক আমগাছে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছিল। নিয়ম অনুযায়ী ধর্মীয় কৃত্যহীন লাশ মাটিতে পুঁতে ফেলতে হয় এবং সেই আমগাছটিও কেটে ফেলতে হয়। এ ঘটনার দুই বছর পর এক প্রবল শীতের রাতে কিছুটা উষ্ণতা পেতে এ দম্পতি আমগাছটির শেকড় তুলে এনে আগুন জ্বালায়। একদিকে পুড়ে নিঃশেষ হয়ে আসতে থাকে আমগাছটির শেকড়, অন্যদিকে বাবা-মায়ের অন্তরে পুত্র হারানোর যন্ত্রণা যেন দ্বিগুণ তীব্রতায় জ্বলতে থাকে। মৃত পুত্রের জন্য উদ্বেগ, আশঙ্কা, ভীতি এবং কখনও কখনও ক্ষোভের মধ্য দিয়ে তারা জীবিত পুত্রের অপূর্ণ সব ইচ্ছা-আকাক্সক্ষার স্মরণ করতে করতে একসময় গাছের শেকড়কেও পুত্র ভাবতে শুরু করে। নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন এশা ইউসুফ, মিলু চৌধুরী, আসাদুজ্জামান আমান, সামিউন জাহান দোলা, সাজ্জাদ আহমেদ রাজীব, রফিকুল ইসলাম, সউদ চৌধুরী, শাহজাদা সম্রাট চৌধুরী, তারেক আহমেদ প্রমুখ। নাটকটির শিল্প নির্দেশনা দিয়েছেন ঢালী আল মামুন। আলোক পরিকল্পনায় ছিলেন নাসিরুল হক খোকন। শিমূল ইউসুফের সুরারোপে আবহ সঙ্গীত করেছেন ক্যাকটাস ব্যান্ডের সাকী ব্যানার্জি। ঢাকা থিয়েটার মঞ্চের বহিপীর নাটকটি সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ রচনা করেছিলেন উনিশ শতকের শেষভাগ বা বিশ শতকের সূচনালগ্নের পটভ‚মিতে। নাটকের শুরুতেই দেখা যায়, জমিদার হাশেম আলি সূর্যাস্ত আইনে জমিদারি হারাতে বসেছেন। যা রক্ষা করতে বজরায় করে স্ত্রী খোদেজা ও পুত্র হাশেমকে নিয়ে রওনা হন তিনি। পথে তাদের বজরায় ঠাঁই পায় সদ্য বিবাহিতা তরুণী তাহেরা ও বৃদ্ধ বহিপীর। দীর্ঘদিনের মুরিদানার গুরু দক্ষিণার রূপক যেন তাহেরা। বহিপীর যখন তার স্ত্রীকে উদ্ধারে রত ঠিক তখনই জীবন সচেতন হাশেম যে কোন মূল্যেই পীরের কাছ থেকে তাহেরাকে রক্ষা করতে চায়। জমিদারের স্ত্রী যেন চিরায়িত মুসলিম বাঙালী নারীর চিন্তার প্রকাশ। তাহেরা কার আশ্রিতা হবে তাই নিয়ে চিন্তা যখন চ‚ড়ান্তে পৌঁছায় তখন অন্যদিকে জমিদার তার জমিদারি ধরে রাখতে ব্যর্থ হন। পীর সচেতনতার সঙ্গে অর্থের বিনিময়ে স্ত্রীর চুক্তিপত্র রচনা করেন। আশ্রিতা তাহেরা কাউকেই খুশি করতে পারে না। তাহেরা পরবর্তীতে কি করবে তা নিয়েই এগিয়ে যায় নাটকের কাহিনী। এ নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফারহাদুল আমিন, নূরুল আলম, সাফায়েত দূর্জয়, আফরিন হুদা তোড়া, অরনিকা শ্রাবণী অথৈ, শরিফুল ইসলাম প্রমুখ।
×