ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিজ্ঞাপনে স্টিভেন, অস্ট্রেলিয়ায় তোলপাড়

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ২১ ডিসেম্বর ২০১৮

  বিজ্ঞাপনে স্টিভেন, অস্ট্রেলিয়ায় তোলপাড়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্রিকেটে দারুণ সুসময় পার করছিলেন স্টিভেন স্মিথ। কিন্তু হঠাৎ করেই কলঙ্কজনক এক অধ্যায়ের জন্ম দেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এই অধিনায়ক। ঘটনা গত মার্চের। কেপটাউন টেস্টে বল-বিকৃত করে ধরা খান দেশটির প্রতিভাবান এই খেলোয়াড়। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই একটি বিজ্ঞাপন বানায় ভোডাফোন অস্ট্রেলিয়া। সেই বিজ্ঞাপনে নিজের ভোগান্তি তুলে ধরে সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টার কথা বলেন নিষিদ্ধ স্টিভেন স্মিথ। ব্যাপারটি রীতিমতো ঝড় তুলেছে অস্ট্রেলিয়ায়। এই বিজ্ঞাপন নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। কেউ বলছেন, এসব ফালতু, সে নিজেকে শোধরাতে পেরেছে কি না সন্দেহ। আবার কারও যুক্তি অস্ট্রেলিয়ার তরুণদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোই স্মিথের লক্ষ্য। ইউটিউবে ছাড়া হয়েছে বিজ্ঞাপনটি। নাম ‘গাটসি ইজ কলিং’Ñ যার শুরু হয়েছে গত মার্চের সেই সংবাদ সম্মেলনে স্মিথের কান্নাভেজা কণ্ঠে। এরপর দেখা যায় স্থানীয় সাদারল্যান্ড ক্লাবের হয়ে খেলছেন। এই সময়ে একটি কোচিং ক্লিনিকও পরিচালনা করেন তিনি। কলঙ্কিত সেই ঘটনার খেসারত প্রসঙ্গে এই বিজ্ঞাপনে স্মিথ নিজের অভিমত তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, যা কিছু স্বপ্ন দেখেছি এবং যা কিছুর সঙ্গে জড়িত ছিলাম সব টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙ্গে পড়েছিল। অন্ধকারে পতিত হয়েছিলাম। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা প্রসঙ্গে বিজ্ঞাপনে স্টিভেন স্মিথ বলেন, এটা আসলে সামনে এসে সৎ থেকে দায় স্বীকার করার ব্যাপার। অনেক কঠিন সময় গেছে। তবে অনেক সময় ভোগান্তির প্রয়োজন আছে। সবাই ভুল করে। তবে তা শোধরাতে আপনি কি করছেন সেটি গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞাপনের শেষে স্মিথ বলেছেন, আমি আগের চেয়েও ভালভাবে ফিরতে চাই। অস্ট্রেলিয়ার সংবাদ মাধ্যম ‘সিডনি মর্নিং হেরাল্ড’ জানিয়েছে, এই নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার পাল্টা যুক্তি হিসেবে অনেকে বলছেন, অস্ট্রেলিয়ার তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে বার্তা দিতে চেয়েছেন স্মিথ এবং তিনি যেভাবে বলতে চেয়েছেন সেভাবেই হয়েছে। টেলিকম প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তাদের দূত হিসেবে কাজ করছেন স্মিথ। সংবাদ মাধ্যমের খবর, বিজ্ঞাপন থেকে স্মিথ যে অর্থ পেয়েছেন তা স্থানীয় একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানে মানসিক চিকিৎসা বিভাগে দান করেছেন। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক এতেও সমালোচকদের মুখ বন্ধ রাখতে পারেননি। থ্রিএডব্লিউ রেডিও’র সঞ্চালক জাস্টিন স্মিথ সোজাসাপ্টা বলেছেন, কয়েকটি ফোন বেচতে মানসিক সমস্যাকে এত সস্তাভাবে ব্যবহার কর না। (বিজ্ঞাপন) দেখে জঘন্য লেগেছে। সে নিজেকে শোধরাতে পেরেছে কি না সন্দেহ। ভোডাফোন অস্ট্রেলিয়া আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছে, অস্ট্রেলিয়ার তরুণদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো স্মিথের লক্ষ্য। তারা স্রেফ সাহায্য করেছেন। ২০১৯ সালের মার্চে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হবে স্মিথের। তবে তার এই সময়টা মোটেও ভাল যাচ্ছে না। ভোডাফোন অস্ট্রেলিয়ারই পৃষ্ঠপোষকতার টুর্নামেন্ট বিগ ব্যাশে তিনি খেলতে পারছেন না। বিপিএলেও তার খেলায় বাদ সেধেছে বিসিবি। তবে এতসব বাধা-বিপত্তির পরও নিজের হারানো ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে ফেরার সবধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন স্মিথ। খেলাটা ধরে রেখেছেন তিনি। নিয়মিত অংশ নিয়েছেন সামাজিক প্রচারণাতেও।
×