ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাম্পের সিরিয়া বিষয়ক সিদ্ধান্তের সমালোচনায় মার্কিন রাজনীতিকরা

সৈন্য প্রত্যাহারের বিরোধিতা

প্রকাশিত: ০৫:০০, ২১ ডিসেম্বর ২০১৮

সৈন্য প্রত্যাহারের বিরোধিতা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়া থেকে সব সৈন্য ফিরিয়ে আনার কথা ঘোষণা করার রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট রাজনীতিকরা তার সমালোচনা করেছেন। তারা বলছেন ট্রাম্প জঙ্গী গ্রুপ আইএসের পুনরায় ফিরে আসার সুযোগ তৈরি করতে যাচ্ছেন। ট্রাম্পের ঘোষণার ফলে সিরিয়া থেকে মার্কিন বাহিনীর দুহাজার সদস্যকে সরিয়ে নেয়া হবে। তবে এই পদক্ষেপ তার বিশেষজ্ঞদের মূল্যায়নের বিপরীত। এমনকি নিজ দল রিপাবলিকান পার্টির অনেক সিনিয়র সদস্য একইসঙ্গে বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ হয়েছেন। সিরিয়ায় আইএসের পতন হলেও জঙ্গীগোষ্ঠীটির অস্তিত্ব পুরোপুরি বিলীন হয়নি। কিছু কিছু স্থানে এখনও তাদের উপস্থিতি রয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা চাচ্ছিলেন, আইএসের পুনরুত্থান না ঘটার বিষয়টি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত মার্কিন সেনারা সেখানে থাকুক। তবে ট্রাম্প জোরালোভাবে তা নাকচ করে দিয়েছেন। সাউথ ক্যারোলাইনা থেকে নির্বাচিত সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে সিরিয়া থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের অর্থ ওবামার মতো ভুল করা। এরপর যদি আইএসের প্রত্যাবর্তন ঘটে তবে তার জন্য ট্রাম্প দায়ী থাকবেন। যুক্তরাষ্ট বুধবার সিরিয়া থেকে সব সেনা প্রত্যাহার করে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে. প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে মার্কিন গণমাধ্যম একথা জানিয়েছে। একজন কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেছেন, অবিলম্বে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহার করে নেয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে ট্রাম্প এক টুইটে বলেছেন, সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট (আইএস) পরাজিত হয়েছে। আইএস এর সঙ্গে লড়াইয়ের জন্যই কেবল সেনাদের সেখানে রাখা। প্রায় ২ হাজার মার্কিন সেনা সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বেশিরভাগ অঞ্চলকে আইএস মুক্ত করতে সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেসকে (এসডিএফ) সহায়তা করছে। কিন্তু এখনও সেখানে কিছু কিছু জায়গায় রয়ে গেছে আইএসের উপস্থিতি। তবে আইএসের কবলে থাকা এলাকাগুলো পুনরুদ্ধারের অভিযান শেষ হয়ে আসতে থাকায় যুক্তরাষ্ট্র এখন সেখান থেকে সরে আসতে চাইছে। যদিও মার্কিন কর্মকর্তারা দেশটিতে আইএস এর পুনরুত্থান ঘটার আশঙ্কা এখনই উড়িয়ে দিতে পারছেন না। ট্রাম্প এর আগেও সিরিয়া থেকে সেনাদের দেশে ফিরিয়ে আনার দৃঢ় ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। কখন সেনাদের ফিরিয়ে আনা হবে সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানা যায়নি। মার্কিন কর্মকর্তারাও সেনা প্রত্যাহারের পরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলেননি। কারা এ পরিকল্পনা করছেন এবং কখন সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে সে সম্পর্কেও স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেনা ত্যাহারের পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে আগামী বছরের মধ্যে সব সৈন্য সিরিয়া থেকে ফেরানো হবে। এ বছর এপ্রিলে খোলাখুলিভাবে সৌদি আরবের কাছে সিরিয়া যুদ্ধের সামরিক ব্যয় দাবি করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, সৌদি আরব যদি সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি অব্যাহত দেখতে চায় তবে ওয়াশিংটনকে অর্থ পরিশোধ করতে হবে। তার কথায় ‘আমরা আইএসকে পরাজিত করার কাজ প্রায় শেষ করে ফেলেছি। শীঘ্রই অন্যদের সঙ্গে সমন্বয়ের বিষয়ে একটি নতুন সংকল্পে আসব।’ এমন এক সময়ে ট্রাম্প সিরিয়া থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহরের ঘোষণা দিলেন যখন রাশিয়ার সহযোগিতায় সিরিয়ায় নিজের অবস্থান সুসংহত করছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ। এরইমধ্যে দেশটির বেশিরভাগ অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে আসাদ বাহিনী। উল্লেখ্য, সিরিয়া ৮ বছরের গৃহযুদ্ধে লাখ লাখ মানুষের প্রাণহানির পাশাপাশি এক কোটিরও বেশি মানুষকে বাস্তুচ্যুত হতে হয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় ৬ লাখ মানুষ বিদেশে শরণার্থী হতে বাধ্য হয়েছে।
×