ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আজ আবাহনীকে হারিয়ে ফাইনালে খেলতে চায় বসুন্ধরা কিংস

প্রকাশিত: ০৭:১০, ২০ ডিসেম্বর ২০১৮

আজ আবাহনীকে হারিয়ে ফাইনালে খেলতে চায় বসুন্ধরা কিংস

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দুই দলেরই লক্ষ্য অভিন্নÑ ফাইনালে ওঠা। তবে এক দলের লক্ষ্য আরও আছে। সেটা হচ্ছে প্রতিপক্ষকে হারিয়ে কড়ায়-গ-ায় প্রতিশোধ নিয়ে স্বাধীনতা কাপ ফুটবলের দশম আসরের ফাইনালে ওঠা। দ্বিতীয় সেমিফাইনালের এই ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টায়, বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। আর এই ম্যাচে মুখোমুখি হবে ঐতিহ্যবাহী ঢাকা আবাহনী লিমিটেড বনাম নবাগত বসুন্ধরা কিংস। ‘দ্য স্কাই ব্লু ব্রিগেড’ খ্যাত আবাহনী এই আসরের ১৯৯০ সালের চ্যাম্পিয়ন। সেবার তারা ফাইনালে ২-১ গোলে হারিয়েছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডানকে। এছাড়া ২০১৬ আসরেও ফাইনালে উঠেছিল তারা। তবে সেবার তারা ০-২ গোলে হেরে গিয়েছিল চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে। দুই বছর পর আবারও আরেকটি ফাইনাল খেলার দ্বারপ্রান্তে আছে তারা। এই আসরে আবাহনী ছিল ‘এ’ গ্রুপে। সেখানে তারা ২-১ গোলে মুক্তিযোদ্ধাকে হারায়। আর ব্রাদার্সের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে পা রাখে শেষ আটে। সেখানে তারা ১-০ গোলে হারায় সাইফ স্পোর্টিংকে। ‘দ্য কিংস’ খ্যাত বসুন্ধরা এবারই প্রথম স্বাধীনতা কাপ খেলছে। তারা ছিল ‘ডি’ গ্রুপে। সেখানে তারা শেখ জামাল ধানম-িকে ২-০ গোলে হারায় এং গোলশূন্য ড্র করে শেখ রাসেলের সঙ্গে। গ্রুপসেরা হয়েই তারা নাম লেখায় কোয়ার্টারে। সেখানে তারা টাইব্রেকারে ৩-২ (২-২) গোলে হারায় রহমতগঞ্জকে। আবাহনী-বসুন্ধরা ২৭ দিনের ব্যবধানে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো পরস্পরের মুখোমুখি হচ্ছে। গত ২৩ নবেম্বর ফেডারেশন কাপের ফাইনালে ৩-১ গোলে বসুন্ধরাকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল আবাহনী। সে হারের কথা নিশ্চয়ই মনে আছে কিংসদের। ফলে আজ তারা যতটা না ফাইনালে ওঠার জন্য লড়াই করবে, তারচেয়েও বেশি লড়াই করবে আবাহনীকে হারিয়ে বদলা নিতে। ফুটবলে যুগে যুগে সবদেশেই একেক সময় একেক ক্লাবের শক্তির উত্থান ঘটে। বাংলাদেশের কথাই ধরা যাক। স্বাধীনতার আগে চল্লিশ এবং পঞ্চাশের দশকে সবচেয়ে শক্তিশালী ও সফল ক্লাব ওয়ান্ডারার্স ক্লাব। এরপর ষাটের দশকে এলো মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। সত্তর দশকের মাঝামাঝি থেকে মোহামেডানের প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দাঁড়িয়ে গেল আবাহনী। একবিংশ দশকে নিজেদের শক্তিমত্তা ধরে রাখলেও সাংগঠনিক কারণে দুর্বল হয়ে পড়ে মোহামেডান। এর বিপরীতে আবাহনী আরও শক্তিশালী হয়ে সফলতা অর্জন করে। সম্প্রতি আবাহনীর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে নবাগত দল বসুন্ধরা কিংস। ক্লাবের বয়স এবং সবধরনের শিরোপা সংখ্যায় আবাহনী যোজন ব্যবধানে এগিয়ে বসুন্ধরার চেয়ে। ৪৬ বছরে যেখানে তাদের ট্রফিসংখ্যা ৪০টি, সেখানে মাত্র ৫ বছর বয়সী বসুন্ধরার সাফল্য মাত্র ১টি (২০১৭ সালে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লীগ)। তারপরও দুটি ব্যাপারে আবাহনীর চেয়ে এগিয়ে বসুন্ধরা। তাদের আছে রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলা কোস্টারিকান ফরোয়ার্ড ড্যানিয়েল কলিন্ড্রেস। এছাড়া কোচের সফলতার ক্ষেত্রেও এগিয়ে বসুন্ধরা। তাদের স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজেন এর আগে কোচ হিসেবে পাঁচটি শিরোপা জিতেছেন। একটি ভারতের গোয়া স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে (২০১৩ সালে লীগ), চারটি মালদ্বীপের নিউ রেডিয়েন্ট ক্লাবের হয়ে (২০১৭ সালে প্রিমিয়ার লীগ, এফএ কাপ, প্রেসিডেন্ট কাপ ও ২০১৮ সালে এফএ চ্যারিটি শিল্ড)। পক্ষান্তরে আবাহনীর পর্তুগীজ কোচ মারিও লেমোস এখনও কোন শিরোপা জেতেননি। তিনি এর আগে ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ফিটনেস কোচ। এখন দেখার বিষয়, এবার আবাহনীকে চ্যাম্পিয়ন করিয়ে কোচ হিসেবে প্রথম শিরোপার স্বাদ পান কি না তিনি। তবে তার আগে আজ তাকে হারাতেই হবে ব্রুজেনের বসুন্ধরাকে। পারবেন কী তিনি?
×