ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অভিবাসন বিতর্ক, বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ২০ ডিসেম্বর ২০১৮

অভিবাসন বিতর্ক, বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ

অভিবাসন নিয়ে বিতর্ককে নিয়ে জাতীয়তাবাদীদের ক্ষোভের মুখে বেলজিয়ামের সরকার মঙ্গলবার পদত্যাগ করেছে। প্রধানমন্ত্রী চার্লস মিশেল তার পদত্যাগপত্র রাজা ফিলিপের কাছে জমা দিয়েছেন। পরিকল্পিত নির্বাচনের মাত্র পাঁচমাস আগে এই ঘটনা ঘটল। মে মাসে দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এটি স্পষ্ট নয় যে, রাজা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন কিনা। এএফপি। রাজকীয় ফরমানে বলা হয়েছে যে, সিদ্ধান্তটি স্থগিত রয়েছে। তবে উর্ধতন এক সূত্র জানিয়েছে, রাজা সম্ভবত নির্বাচন হওয়া পর্যন্ত মিশেলের সরকারকে দৈনন্দিন কাজ চালিয়ে যেতে বলেছেন। নয় ডিসেম্বর থেকে জাতীয়তাবাদী ফ্লেমিশ এন-ভিএ (নিউ ভøামিজ এলানেন্টি) বা নিউ ফ্লেমিশ এলায়েন্স সরকারের প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার করায় মিশেল সংখ্যালঘু সরকারের নেতৃত্ব দিতে পদক্ষেপ নেন। মঙ্গলবার পার্লামেন্টে এক বিতর্ক চলাকালে বিরোধী বামপন্থী দল ও গ্রিন পার্টি অনাস্থা ভোটের আহ্বান জানালে উদারপন্থী প্রধানমন্ত্রী পরাজয় স্বীকার করেন। ২০১৪ সালে মিশেল প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। জাতিসংঘের অভিবাসন চুক্তির প্রতি তার সমর্থনের প্রেক্ষিতে এন-ভিএ দল সরকারের প্রতি তাদের সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয়। যা অভিবাসনবিরোধী ইউরোপীয় দলগুলোর জন্য একটি বিজয়ের কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। চুক্তির বিরুদ্ধে মধ্য ব্রাসেলসে বিক্ষোভ দেখানোর দুইদিন পর পদত্যাগের ঘটনাটি ঘটল। বিক্ষোভ দমনে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করতে বাধ্য হয়। পার্লামেন্টে বিতর্ক শেষে বিরোধী দলগুলো ২৬ মে নির্বাচন পর্যন্ত সংস্কারের ওপর ভোট দিতে অস্বীকার করেন। যেজন্য মিশেল ঘোষণা করেন, তিনি পদত্যাগ করবেন। পার্লামেন্ট সদস্যরা অনাস্থা ভোট নিয়ে তাকে জোর করার তৎপরতা চালানোর আগেই মিশেল বলেন, আমি পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং আমি তাৎক্ষণিকভাবে রাজাকে আমার সিদ্ধান্তের কথা দ্রুত জানিয়ে দিয়েছি। তারপরই রাজা ফিলিপ প্রধানমন্ত্রী মিশেলের পদত্যাগপত্র পান। তবে পদত্যাগপত্র গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে তিনি আবার পরামর্শ করবেন বলে রাজকীয় এক ফরমানে জানানো হয়েছে। মিশেলের উদারপন্থী রিফরমিস্ট মুভমেন্ট (এমআর) দলের কৃষিমন্ত্রী ডেনিস ডুকার্ন সহযোগিতার পরিবর্তে দেশকে বিপদ ও সঙ্কট সৃষ্টির ঝুঁকির জন্য বামপন্থী দল ও গ্রিন পার্টির সমালোচনা করেছেন। উদারপন্থী প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়ভাবে মারাকেশ অভিবাসন চুক্তির পক্ষে অবস্থান নিয়ে বলেছেন, এটি ইউরোপীয় ও আন্তর্জাতিক সহযোগতিার সুযোগকে উপস্থাপন করেছে। জাতিসংঘ চুক্তিটি অভিবাসী প্রবাহে বিশ্বব্যাপী একটি সাধারণ পদ্ধতিকে প্রচার করবে। প্রাথমিকভাবে চুক্তিটি বেলজিয়ামের জোট সরকারের চারটি দলই সমর্থন করেছিল। অক্টোবরের শেষের দিকে এন-ভিএ তাদের মত পরিবর্তন করে এবং মিশেলের মরক্কো গিয়ে চুক্তি স্বাক্ষরের একদিন আগে জোট সরকার থেকে বেরিয়ে যায়। যা ইউরোপজুড়ে পপুলিস্ট নেতাদের সর্বশেষ আক্রমণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
×