ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আওয়ামী লীগ-বিএনপি প্রার্থীদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ২০ ডিসেম্বর ২০১৮

আওয়ামী লীগ-বিএনপি প্রার্থীদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জমে উঠেছে নির্বাচনী মাঠ। সময় কম। তাই ব্যস্ত সময় পার করছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা। রাজধানী ঢাকাতেও দিনভর প্রচারে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায় আওয়ামী লীগ, মহাজোট, বিএনপি, ঐক্যফ্রন্ট, জাতীয় পার্টিসহ বাম দলের প্রার্থীদের। নিজেদের পক্ষে রায় নিতে ভোটারদের কাছে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকা-ের কথাও তুলে ধরছেন তারা। এরমধ্যে বড় দল আওয়ামী লীগ-বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যে হামলা, পাল্টা হামলা, নির্বাচনী কার্যালয় ভাংচুরসহ বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে মঙ্গলবার রাতে ঢাকা-১৫ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কামাল মজুমদারের নির্বাচনী কার্যালয় ভাংচুর করেছে জামায়াত। জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের পক্ষে মাঠে নেমেছেন সরকার সমর্থক নেতাকর্মীরা। নির্বাচনী কর্মকা-ে বাধা দেয়ার অভিযোগ করেছেন ঢাকা-৪ আসনে বিএনপি প্রার্থী দৌড় সালাহউদ্দিন। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনী কাজ পরিচালনার জন্য আলোচনা করতে বিএনপি প্রার্থী আফরোজা আব্বাসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা-৯ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবের হোসেন চৌধুরী। এদিকে বাম দলের প্রার্থীদের পক্ষে মাঠে নেমেছেন বাম জোটের শীর্ষ নেতারা। বিএনপি পোস্টার লাগায় না- কামাল ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারে কাউকে বাধা দেয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বুধবার রাজধানীর তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ড এলাকায় ঢাকা-১২ আসনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি আয়োজিত সভায় এ কথা বলেন তিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি অভিযোগ করে তাদের নির্বাচনী প্রচারসহ পোস্টার লাগাতে দেয়া হচ্ছে না। আসলে তারাই পোস্টার লাগায় না। যে কারণে তাদের পোস্টার কোথাও দেখি না।’ আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারে কাউকে বাধা দেয়া হচ্ছে না। সবাই নিজেদের মতো প্রচার চালাচ্ছে। বিএনপির অভিযোগ সত্য নয়। তার প্রমাণ আমার এলাকায় রাস্তার যেদিকেই তাকাই কোদাল মার্কার পোস্টার দেখি, আমার পোস্টারই নাই। ঢাকা-১২ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত এ প্রার্থী বলেন, ‘বিএনপি নেতাকর্মীরা অভিযোগ করছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করছে। এটাও ঠিক না। আমি স্পষ্টভাবে বলছি, তাদেরই গ্রেফতার করা হচ্ছে শুধু যাদের নামে ওয়ারেন্ট আছে। যারা ২০১৩-২০১৪ সালে মানুষ পুড়িয়েছে মেরেছে, সন্ত্রাসী কর্মকা- চালিয়েছে, শুধু তাদের ছাড়া আর কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না।’ এদিকে রাজধানীর সেগুনবাগিচাসহ আশপাশের এলাকায় নির্বাচনী প্রচার চালিয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও মহাজোট সমর্থিত ঢাকা-৮ আসনের প্রার্থী রাশেদ খান মেনন। সাবের চৌধুরীর সংবাদ সম্মেলন ॥ ঢাকা-৯ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আফরোজা আব্বাসের নির্বাচনী প্রচারণার সময় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন এই আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী। বুধবার খিলগাঁও এলাকার সবুজমতি ভবনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সাবের হোসেন। তিনি বলেন, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী আফরোজা আব্বাস একটি বড় রাজনৈতিক দলের প্রার্থী ও সম্মানীয় ব্যক্তি। সম্প্রতি তার প্রচার অভিযানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বাধা দিয়েছেন এমন অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তার এ অভিযোগ কতটুকু সত্য তা সংবাদমাধ্যম অবগত আছে বলে আমার বিশ^াস। গত ১২ ডিসেম্বর মাদারটেক এলাকায় নির্বাচনী প্রচারে হামলার ঘটনায় আফরোজা আব্বাসের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমার অবস্থান স্পষ্ট। আইন সবার জন্য সমান। কেউ আইনের উর্ধে নয়। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা যদি আমার দলের হয়, তাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। ইতোমধ্যে আমি ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, মতিঝিল জোনের পুলিশের ডিসিসহ সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জানিয়ে দিয়েছি। তিনি বিএনপির প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রচারে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে বলেন, বিএনপি প্রার্থী বড় বাঁশের মাথায় প্লাস্টিকের তৈরি ধানের শীষ লাগিয়ে মিছিল করে, যা নির্বাচন আচরণ বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ১৮ ডিসেম্বর বিএনপির প্রচারের সময় আওয়ামী লীগের কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ এনে তিনি বলেন, নির্বাচনী প্রচারের সময় একজন প্রার্থীর গাড়িতে বিভিন্ন মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ও চিহ্নিত সন্ত্রাসী থাকতে পারে না। তিনি বলেন, আফরোজা আব্বাস চাইলে তার প্রচারকাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য আমি তার সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, গত ১০ বছরে আওয়ামী লীগের ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকা-ের কারণে এবারের নির্বাচনে ভোটাররা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির পক্ষে রায় দেবেন বলে আমার বিশ^াস। কামাল মজুমদারের নির্বাচনী কার্যালয়ে জামায়াতের ভাংচুর ॥ ঢাকা-১৫ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কামাল আহমেদ মজুমদারের নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা ও ভাংচুর চালিয়েছে জামায়াতের নেতাকর্মীরা। এই আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিপরীতে লড়ছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান। মঙ্গলবার রাতে হামলার ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া ১০ জনের নাম ও রাজনৈতিক পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ। মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দাদন ফকির গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, হামলার ঘটনায় একটি নাশকতার মামলা হয়েছে। মামলার বাদী হারুন একজন শ্রমিক নেতা, তিনি নিজেও আহত হন। গ্রেফতারকৃতদের তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে ঢাকা-১৫ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী কামাল মজুমদারের মিরপুরের ৬০ ফুট সড়ক সংলগ্ন মোল্লাপাড়ার নির্বাচনী প্রচারকেন্দ্রে হামলা, বিস্ফোরণ, গুলি ও ভাংচুরের অভিযোগ করা হয়। অভিযোগে বলা হয়, কয়েকটি গুলি ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। হামলায় ওয়ার্ডের শ্রমিক নেতা হারুন উর রশিদ আহত হন। তিনি বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচার ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবির ফ্রেম ভাংচুরের অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থকরা। এদিকে এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বুধবার জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা-১৫ সংসদীয় আসনের মিডিয়া সমন্বয়ক মু. আতাউর রহমান সরকার স্বাক্ষরিত এক বার্তায় বলা হয়, ‘গত মঙ্গলবার ঢাকা-১৫ আসনের মোল্লাপাড়ার আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও ধানের শীষের প্রার্থী শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, এই ধরনের হামলা একটি কাপুরুষোচিত কাজ। একটি বিশেষ মহল নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য এই ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। ফিরোজের পক্ষে মুরাদ ॥ ঢাকা-৬ আসনের মহাজোটের প্রার্থী কাজী ফিরোজ রশীদের পক্ষে দিনভর প্রচার চালিয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহ্ আলম মুরাদ। এ সময় কাজী ফিরোজ রশিদ ছাড়াও নগর আওয়ামী লীগের নেতাসহ যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। গণসংযোগকালে মুরাদ এলাকাবাসীর উদ্দেশে বলেন, লাঙ্গলে ভোট দিলে কাজী ফিরোজ এমপি হবেন, আর শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হবেন। এ আসনে শেখ হাসিনার মার্কা লাঙ্গল মার্কা। তিনি বলেন, কাজী ফিরোজ রশিদ একজন হেভিওয়েট প্রার্থী। ও শেখ হাসিনার পছন্দের প্রার্থী তিনি। এর আগে কাজী ফিরোজ সকালে গে-ারিয়া, সতীষ সরকার রোড, কেবি রোডে গণসংযোগ ও প্রচার মিছিল করেন। এ সময় তিনি ৬টি পথসভায় বক্তব্য রাখেন। দুপুরের পর তিনি ঢালকা নগর, আলমগঞ্জ ও স্বামীবাগের মিতালী বিদ্যাপীঠ প্রাঙ্গণে গণসংযোগ ও প্রচার মিছিল করেন। গণসংযোগকালে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা হেদায়াতুল ইসলাম স্বপন, আইয়ুব আলী খান, কাজী খালেকুজ্জামান ভুলু, সোলেমান কাদের মিন্টু, মোঃ জসিম, জাপা নেতা হাজী ফারুক, ইসহাক ভূঁইয়া, সারফুদ্দিন আহমেদ শিপু প্রমুখ। দৌড় সালাহউদ্দিনের আশঙ্কা ॥ বাড়ি বাড়ি গিয়ে নেতাকর্মীদের হয়রানি ও গ্রেফতার করা হচ্ছে অভিযোগ করার পর এবার নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ঢাকা-৪ আসনের ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদ ওরফে দৌড় সালাহউদ্দিন। নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে তার ওপর বারবার হামলা হচ্ছে জানিয়ে সব বৈরী পরিস্থিতি মোকাবেলা করে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন বিএনপির সাবেক এ সংসদ সদস্য। বুধবার রাজধানীর শ্যামপুরে নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ শঙ্কা প্রকাশ করেন। সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, তফসিল ঘোষণার পর থেকে আমার নির্বাচনী এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও হয়রানি করা হচ্ছে। ১০ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হওয়ার পর পুলিশ ও আমার প্রতিদ্বন্দ্বী লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থীর সন্ত্রাসী বাহিনীর বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন ধানের শীষ প্রতীকের সমর্থকরা। তিনি বলেন, নির্বাচনী কার্যক্রমে আমার শ্যামপুরের বাসাটি প্রধান অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সেখানে নেতা-কর্মীরা আসলে তাদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ জানিয়েও কোন প্রতিকার পাইনি। ১০ ডিসেম্বর থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত গণসংযোগ এবং প্রচারে একাধিক হামলা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সর্বশেষ মঙ্গলবার দুপুরে এলাকার ঘুণ্টিঘর এলাকায় গণসংযোগ চালানোর সময় একদল দুর্বৃত্ত আমরা গাড়ি ভাংচুর করে। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে নির্বাচন কমিশনকে তিনি বলেন, আমার এলাকার ভোটাররা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে নিরপেক্ষ আচরণ আশা করেন। এর ব্যত্যয় ঘটলে পরিস্থিতি কারও জন্যই ভাল হবে না। মনিকার জনসংযোগ ॥ ঢাকা-১৬ আসনে কোদাল মার্কার প্রার্থী নাঈমা খালেদ মনিকা বিহারী ক্যাম্প, কালশী ও বর্ধিত পল্লবীতে গণসংযোগ করেন। প্রার্থীর নির্বাচন সমন্বয়কারী রাশেদ শাহরিয়ারের পরিচালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় নেতা ফখরুদ্দিন কবির আতিক প্রমুখ। বাবলার পক্ষে সানজিদা ॥ ঢাকা-৪ আসনের মহাজোটের প্রার্থী সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার পক্ষে মাঠে নেমে লাঙ্গলে ভোট চাইলেন সংরক্ষিত আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি সানজিদা খানম। ৫৩নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন কদমতলী থানা আওয়ামী লীগ। গণসংযোগকালে বাবলা সানজিদা ছাড়াও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিল হাজী নাসির, থানার সাধারণ সম্পাদক মোবারক হোসেন, সোহরাব হোসেন, ফারুক আহমেদসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও জাপার কয়েক সহ¯্রাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। বিকেলে মীর হাজীরবাগের যুক্তিবাদী হুজুরের গলিতে জনসভা করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ। এতে সভাপতি করেন ৫১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী হাবিবুর রহমান হাবু। এর আগে সকালে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মনির হোসেন স্বপনের নেতৃত্বে আলমবাগে গণসংযোগ করেন জাপা ও শ্রমিকলীগ। মেরাজনগরের মোহাম্মদবাগে দিনব্যাপী গণসংযোগ করেন বাবলা পতœী সালমা হোসেন। শ্যামপুরের ঘুণ্টিঘরে যুবলীগ নেতা কাজী ইব্রাহিম খলিল মারুফের নেতৃত্বে লাঙ্গলের পক্ষে প্রচার মিছিল করেন শ্যামপুর থানা যুবলীগ। বাম জোটের গণসংযোগ ॥ ঢাকা-১৫ নির্বাচনী আসনে বাম গণতান্ত্রিক জোট-এর প্রার্থী ডাঃ আহম্মদ সাজেদুল হক রুবেলের কাস্তে মার্কার ও ঢাকা-৮ আসনের বাম গণতান্ত্রিক জোটের মই মার্কার প্রার্থী প্রকৌশলী শম্পা বসুর সমর্থনে গণসংযোগ করেছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের শীর্ষ নেতারা। এ সময় নেতৃবৃন্দ বলেন, বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতার পালা বদল হলেও সাধারণ মানুষের মুক্তি আসেনি। মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়নি। দুর্নীতি ও লুটপাটে নিমজ্জিত দেশ। এমপিগিরি এখন ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। এর থেকে মুক্তি পেতে মহাজোট-জোট-ফ্রন্টের বাইরে বাম গণতান্ত্রিক জোটের প্রার্থীদের বিজয়ী করে ক্ষমতায় আনতে হবে। গণসংযোগে অংশ নেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)-এর সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, সিপিবি’র সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের কেন্দ্রীয় বজলুর রশীদ ফিরোজ, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় নেতা নজরুল ইসলাম, নারী নেত্রী লক্ষ্মী চক্রবর্তী, রওশন আরা রুশো, ঢাকা-১৫ আসনের কাস্তে মার্কার প্রার্থী ডাঃ আহম্মদ সাজেদুল হক রুবেল, ঢাকা-৮ আসনের মই মার্কার প্রার্থী প্রকৌশলী শম্পা বসু, সিপিবি নেতা খান আসাদুজ্জামান মাসুম, সেকেন্দার হায়াৎ, বাসদ নেতা জুলফিকার আলী প্রমুখ। সেলিম বলেন, দেশের প্রধান দ্বন্দ্ব হলো ১ ভাগ লুটেরা বনাম ৯৯ ভাগ শোষিত মানুষ। সাধারণ মানুষের উপার্জিত সম্পদ ১ ভাগ মানুষ ভোগ করছে। এই ১ ভাগ লুটেরার প্রতিনিধি হলো মহাজোট-জোট ও ফ্রন্ট। আর সাধারণ ৯৯ ভাগ মানুষের প্রতিনিধি হলো বাম গণতান্ত্রিক জোট। তিনি আসন্ন নির্বাচনে ৯৯ ভাগ মানুষের স্বার্থরক্ষায় বাম জোটের প্রার্থীদের ভোট দেয়ার আহ্বান জানান। তিনি ব্যবস্থা বদলের সংগ্রামে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অপশক্তিকে পরাস্ত করারও আহ্বান জানান। খালেকুজ্জামান ভোটের দিন সকল মানুষকে নির্ভয়ে ভোট দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, জনগণকে ভোটাধিকার বঞ্চিত করে গণতন্ত্র রক্ষা করা যায় না। তিনি বলেন, শুধুমাত্র ক্ষমতার পরিবর্তন নয়, নীতির পরিবর্ত ছাড়া দেশের মানুষের মুক্তি নিশ্চিত করা যাবে না। বাম জোট নীতির পরিবর্তনের সংগ্রামে নেমেছে। জনগণকে এই সংগ্রামে এগিয়ে এসে নিজের বিজয়কে নিশ্চিত করতে হবে। রহিমের অভিযোগ ॥ প্রচারে বাধা দেয়ার অভিযোগ জানিয়েছেন ঢাকা-১৫ ও ১৭ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আব্দুর রহিম। বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ জানান। রহিম বলেন, নির্বাচনী প্রচারে মাঠে যাওয়ার পর আমাদের কর্মীদের বিভিন্নভাবে বাধা দেয়া হচ্ছে, কেন্দ্র বানানোর চেষ্টা করেছি, সেখানে ভাংচুর করেছে রাজনৈতিক দলের অতিউৎসাহী কর্মীরা। আমি একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করব দেশটা কিন্তু আমাদের সবার। আমাদের নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা দিয়েন না। আমরা স্বতন্ত্র প্রার্থী। এই স্বতন্ত্র প্রার্থীকেও আপনারা কথা বলার সুযোগ দেবেন না মাঠে, এটা তো হতে পারে না। তিনি বলেন, আমরা যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী, তাদের খুব কষ্ট দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আমার কর্মীদের নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিনিয়ত সন্ত্রাসীবাহিনী দ্বারা ভয়, ভীতি এবং বাধাপ্রাপ্ত করা হচ্ছে। সরকার জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে কতটা দেউলিয়া তার প্রমাণ এসব ঘটনা।
×