ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জোড়া সেঞ্চুরিতে শ্রীলঙ্কার লড়াই

প্রকাশিত: ০৭:৩১, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮

জোড়া সেঞ্চুরিতে শ্রীলঙ্কার লড়াই

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞা বুঝি একেই বলে। যে ওয়েলিংটনে তৃতীয়দিন শেষে হার চোখ রাঙাচ্ছিল সফরকারীদের, সেটি তারা কেবল পঞ্চমদিনে টেনে আনেননি, টেস্ট বাঁচানোর স্বপ্ন দেখছে দীনেশ চান্দিমালের দল। এটা সম্ভব হয়েছে এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ও কুসল মেন্ডিসের অনবদ্য সেঞ্চুরির কারণে। দু’জনে অপরাজিত আছেন যথাক্রমে ১১৭ ও ১১৬ রান নিয়ে। চতুর্থদিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ২৫৯। ইনিংস হার এড়াতে চাই আরও ৩৭ রান। প্রথম ইনিংসে ২৮২ রানে অলআউট হয় সফরকারীরা, নিউজিল্যান্ড ৫৭৮। আগেরদিনই আদ্যন্ত ব্যাটিংয়ের নতুন রেকর্ড গড়েছিলেন টম লাথাম (২৬৪*)। সবমিলিয়ে বেসিন রিজার্ভের উইকেট যেমন আচরণ করছে, তাতে শেষদিনে আজ লঙ্কানদের হার এড়ানোর লক্ষ্যটা ধরে রাখা খুব বাড়াবাড়ি কিছু হবে না। তবে পুরোটাই নির্ভর করছে ব্যাটসম্যানরা কেমন করে তার ওপর। মঙ্গলবার সারাদিনে কোন উইকেট না হারিয়ে অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ২৪৬ রান যোগ করেন ম্যাথুস ও মেন্ডিস। দলের দ্বিতীয় ইনিংসে শ্রীলঙ্কার সর্বোচ্চ রানের আগের জুটি ছিল অর্জুন রানাতুঙ্গা ও অশোকা গুরুসিনহার। ১৯৮৬ সালে কলম্বোয় পাকিস্তানের বিপক্ষে অবিচ্ছিন্ন চতুর্থ উইকেট জুটিতে করেছিলেন ২৪০ রান। টেস্ট ক্রিকেটে এ নিয়ে ২২ বার কোন দল উইকেট না হারিয়ে কাটিয়ে দিল সম্পূর্ণ একটি দিন। যেখানে শ্রীলঙ্কা কাটাল পঞ্চমবারের মতো। কুশল-ম্যাথুসের এই জুটি আরও একটি রেকর্ডেরও জন্ম দিয়েছে। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এই প্রথমবারের মতো কোন টেস্ট ম্যাচের একটি নির্দিষ্ট দিন কাটল উইকেট পতন ছাড়াই। আর আগে এমন ঘটনার সর্বশেষ সাক্ষী ছিল বাংলাদেশের মাটি। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ২০০৮ সালে বাংলাদেশ গোটা একদিনে দক্ষিণ আফ্রিকার কোন উইকেট ফেলতে পারেনি। সারাদিন মোটামুটি এক ছন্দে খেলে গেছেন মেন্ডিস। বাউন্সার তাকে খুব একটা ভোগাতে পারেনি। খেলতে যাননি উচ্চাভিলাষী কোন শটও। স্পিনার আইজাজ প্যাটেলকে খেলার সময় সামলে রেখেছিলেন প্রিয় সুইপ শট। অন্যদিকে সকালে বাউন্সার খুব ভুগিয়েছে ম্যাথুসকে। হাতে, বুকে সয়েছেন টিম সাউদি, নিল ওয়াগনারের অনেক বাউন্সার। একের পর মারাত্মক বাউন্সারে দমে যাননি এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। শুরুর তোপ সামলে সাবেক অধিনায়ক খেলেছেন লড়াকু এক ইনিংস। তৃতীয় সেশনের শুরুতে সেঞ্চুরিতে পৌঁছান মেন্ডিস। তিন অঙ্ক ছুঁয়ে ছয় আঙ্গুল তুলে জানান দেন, টেস্টে এটি তার ষষ্ঠ সেঞ্চুরি। এই মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যানের ২৮৭ বলে ১১৬ রানে ইনিংসটি গড়া ১২টি চারে। মেন্ডিসের সাদামাটা উদযাপনের বিপরীতে অর্থপূর্ণ ছিল ম্যাথুসের উদ্যাপন। নবম সেঞ্চুরির (২৯৩ বলে ১১৭*, ১১ চার) দেখা পাওয়া এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান দেন দশটি পুশ আপ। ফিটনেস না থাকায় তাকে ওয়ানডে থেকে বাদ দেয়ার জবাবটা যেন ম্যাথুস হয়তো দিলেন এমন উদ্যাপনে। আজ নিজের ও দলের ইনিংস কতদূর টেনে নিতে পারেন সেটি দেখার অপেক্ষায় থাকবে গোটা শ্রীলঙ্কাই। স্কোর ॥ শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংস ॥ ২৮২/১০ (৯০ ওভার; গুনাথিলাকা ১, করুনারতেœ ৭৯, ধনঞ্জয়া ১, কুসল ২, ম্যাথুস ৮৩, চান্দিমাল ৬, দিকওয়েলা ৮০*, দিলরুয়ান ১৬, লাকমল ৩, রাজিথা ২, কুমারা ০; বোল্ট ১/৮৩, সাউদি ৬/৬৮, ডি গ্র্যান্ডহোম ১/৩৫, ওয়াগনার ২/৭৫, প্যাটেল ০/১৪) ও দ্বিতীয় ইনিংস ॥ ২৫৯/৩ (১০২ ওভার; গুনাথিলাকা ৩, করুনারতেœ ১০, ডি সিলভা ০, মেন্ডিস ১১৬*, ম্যাথুস ১১৭*; সাউদি ২/৩৬, বোল্ট ১/৫০, ওয়াগনার ০/১০০, ডি গ্র্যান্ডহোম ০/২৪, প্যাটেল ০/৪৬, রাভাল ০/১)। নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস ॥ ৫৭৮/১০ (১৫৭.৩ ওভার; রাভাল ৪১, লাথাম ২৬৪*, উইলিয়ামসন ৯১, টেইলর ৫০, নিকোলস ৫০, ওয়াটলিং ০, ডি গ্র্যান্ডহোম ৪৯, সাউদি ৬, ওয়াগনার ০, প্যাটেল ৬, বোল্ট ১১; লাকমল ১/৮৮, রাজিথা ০/১৪৪, ম্যাথুস ০/১, পেরেরা ২/১৫৬, কুমারা ৪/১২৭, ডি সিলভা ২/৫৪, গুনাথিলাকা ০/৩)। ** চুতুর্থদিন শেষে
×