ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ম্যানইউ থেকে ছাঁটাই স্পেশাল ওয়ান মরিনহো

প্রকাশিত: ০৭:৩০, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮

ম্যানইউ থেকে ছাঁটাই স্পেশাল ওয়ান মরিনহো

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শেষ পর্যন্ত শেষরক্ষা হলো না। ওল্ডট্র্যাফোর্ড থেকে তল্পিতল্পা গোছাতেই হলো সময়ের অন্যতম সেরা কোচ জোশে মরিনহোকে। ডাগআউটে টানা ব্যর্থতার কারণে চলমান মৌসুমের শুরু থেকেই গুঞ্জন ছিল যে কোন মুহূর্তে ছাঁটাই হতে পারেন পর্তুগীজ লৌহমানব। ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবলে রবিবার রাতে লিভারপুলের কাছে ৩-১ গোলে বিধ্বস্ত হয় তার দল ম্যানইউ। বাজে এই হারের পর আর কালেক্ষেপণ করেনি রেড ডেভিলসরা। মঙ্গলবার এক বিবৃবিতে মরিনহোকে ছাঁটাই করার ঘোষণা দিয়েছে তারা। এর মধ্য দিয়ে ইংলিশ পরাশক্তিদের হয়ে আড়াই বছরের মিশন শেষ হয়ে গেল ৫৫ বছর বয়সী সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ কোচের। ধারণা করা হচ্ছে, মরিনহোকে বিদায় দিয়ে আপাতত পূর্ণকালীন কোচ নিয়োগ দেবে না ম্যানইউ। ক্লাবের সাবেক মিডফিল্ডার মাইকেল ক্যারিকের হাতে দেয়া হতে পারে ভারপ্রাপ্ত কোচের দায়িত্ব। ২০১৬ সালের মে মাসে ওল্ডট্র্যাফোর্ডে আসার পর প্রথম মৌসুমেই দলকে ইউরোপা লীগের শিরোপা জিতিয়ে জায়গা করে নেন চ্যাম্পিয়ন্স লীগে। সেবার প্রিমিয়ার লীগে ষষ্ঠ হয়েছিল রেড ডেভিলসরা। ওই মৌসুমে দলকে লীগ কাপও জেতান মরিনহো। এরপর গত মৌসুমে দলকে কোন শিরোপা জেতাতে পারেননি। প্রিমিয়ার লীগে রানার্সআপ হলেও চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটির আশেপাশেও যেতে পারেনি। চলতি মৌসুমে পথচলাটা আরও বাজে হয়েছে। শেষ ছয় ম্যাচে জিতেছে মাত্র একটি, ফুলহ্যামের বিপক্ষে ৪-১ গোলে। তিনটি ড্র, দুটি হার। ১৭ ম্যাচ শেষে ২৬ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে নেমে গেছে ইউনাইটেড। শীর্ষে থাকা লিভারপুলের চেয়ে ১৯ পয়েন্টে পিছিয়ে পড়েছে তারা। ১৯৯০-৯১ মৌসুমের পর ইংল্যান্ডের শীর্ষ লীগের এই পর্যায়ে এটাই দলটির সবচেয়ে বাজে অবস্থা। এক বিবৃতিতে ম্যানইউ জানিয়েছে, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এই ঘোষণা দিচ্ছে যে দলের প্রধান কোচ জোশে মরিনহো তাদের ক্লাব ত্যাগ করতে যাচ্ছে। অবিলম্বে এটি কার্যকর হচ্ছে। দায়িত্ব পালনকালে কঠোর পরিশ্রম করার জন্য ক্লাবের পক্ষ থেকে তাকে ধন্যবাদ জানানো হচ্ছে। তার প্রতি রইল শুভ কামনা। আর চলতি মৌসুমের শেষ পর্যন্ত একজন অন্তর্র্বর্তীকালীন কোচ নিয়োগ দেয়া হবে। ক্লাব পরিচালনা বিভাগ একজন নিয়মিত কোচের নিয়োগের জন্য খুব শীঘ্রই কাজ শুরু করবে। যদিও চলতি চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শেষ ষোলোতে জায়গা খুঁজে পেয়েছে ইউনাইটেড। তবে সেখানে তারা প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছে প্যারিস সেন্ট জার্মেইনকে (পিএসজি)। দলের এই মিশ্র ফলাফল, ড্রেসিং রুমের পরিবেশ এবং বোর্ডের ট্রান্সফার নীতির সমালোচনার প্রতিক্রিয়া হিসেবে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। সাফল্যহীন ছাড়াও খেলোয়াড়দের সঙ্গেও খুব একটা সুসম্পর্ক ছিল না মরিনহোর। বিশেষ করে বিশ্বকাপ জয়ী ফরাসী তারকা পল পোগবার সঙ্গে তার বিবাদ ছিল উল্লেখ করার মতো। তার ছাঁটাইয়ের পেছনে এগুলোও নেপথ্য হিসেবে কাজ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মরিনহোর অধীনে এ্যালেক্সিস স্যানচেজ, রোমেলু লুকাকু, মার্কাস রাশফোর্ড, পোগবার মতো খেলোয়াড়রা ঠিকমতো মেলে ধরতে পারছিলেন না নিজেদের। আবার নিজের খেলোয়াড়দের সঙ্গে প্রায়ই ঝামেলায় জড়িয়ে শিরোনাম হয়েছেন তিনি। পোগবা ছাড়াও মার্শিয়াল, স্যানচেজসহ আরও অনেকের সঙ্গে বেশ কয়েকবার বাকবিত-া হয়েছে স্পেশাল ওয়ানের। মনোমালিন্য হয়েছে ক্লাবের ভাইস চেয়ারম্যান এড উডওয়ার্ডের সঙ্গেও। এই মৌসুমের শুরুতে টোবি অল্ডারভেইরেল্ড, ডিয়েগো গোডিন, কালিদু কোলিবালি, জেরোম বোয়াটেংয়ের মতো খেলোয়াড়কে দলে আনতে চাইলেও ভাইস চেয়ারম্যানের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে তাদের ক্লাবে আনতে পারেননি মরিনহো। ধারাবাহিক এসব ভুলের মাশুল দিয়েই এবার তাকে বরখাস্তের স্বাদ নিতে হয়েছে।
×