ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দেশকে এগিয়ে নিতে হলে সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদী শক্তির সঙ্গে আপোস নয়

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮

দেশকে এগিয়ে নিতে হলে সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদী শক্তির সঙ্গে আপোস নয়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ‘ভুল’ না করার আহ্বান জানিয়েছে ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’। সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সভায় দেশের বিশিষ্টজনরা বলেছেন, বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে সাম্প্রদায়িক ও উগ্রবাদী শক্তির সঙ্গে কোন অবস্থাতেই আপোস করা যাবে না। সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। মনে রাখতে হবে উগ্র সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী শক্তি বাংলাদেশ এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে মূল অন্তরায়। আর এই শক্তিকে লালন করে বিএনপি তথা জামায়াত জোট। এর সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয়েছে কামাল হোসেনসহ অন্যরা। তাই মৌলবাদী শক্তির সঙ্গে হঠাৎ করে হাত মেলানো রাজনৈতিক নেতা ও জোটের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। সোমবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সংগঠন আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সংগঠনের আহ্বায়ক সংস্কৃতিকর্মী পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এখানে রাখঢাক করে কথা বলার কেউ নেই। এটা পুতুল খেলার নির্বাচন নয়। এর মধ্যে দিয়ে প্রমাণিত হবে বাংলাদেশ তার সঠিক পথে থাকবে কি না? যারা বাংলা, বাংলা ভাষা, বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধুতে বিশ্বাস করে, তারা কখনও হারতে পারে না। তিনি বলেন, এবার ‘ভুল’ করলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ‘নিজের পায়ে নিজের কুড়াল মারা’ হবে। পথ হারাবে না বাংলাদেশ শিরোনামে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধারাবাহিক কর্মসূচী পালন করে আসছে সংগঠনটি। সোমবারের অনুষ্ঠানে দেশের বিশিষ্টজনরা অংশ নেন। যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গী এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকদের আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ভোট না দেয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছে সম্প্রীতি বাংলাদেশ। দ-িত যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াতে ইসলামীকে জোটে রাখায় বিএনপির সমালোচনায় মুখর সংগঠনটির নেতারা। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই ধর্মীয়, জাতিগত সংখ্যালঘুদের নানাভাবে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা বলতে চাই, গত নির্বাচনে আপনারা কোন ভুল করেননি, এবারও কোন ভুল করবেন না। এবার ভুল করা মানে নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারা। বাংলাদেশে সাড়ে ১০ কোটি ভোটারের মধ্যে এক কোটির মতো ধর্মীয় ও জাতিগত বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সদস্য। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ভোট পেতে দুই প্রধান রাজনৈতিক শক্তিই নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে। সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বিএনপিকে নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহারে যুদ্ধাপরাধের বিচার চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতিকে ‘তামাশা’ আখ্যায়িত করেন। ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহার প্রসঙ্গে পীযূষ বলেন, ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহার যুদ্ধাপরাধের বিচারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। এটা হচ্ছে বছরের শ্রেষ্ঠ তামাশা! দ-িত যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে কামাল হোসেনের জামাতা ডেভিড বার্গম্যানের তৎপরতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, কাদের নিয়ে তিনি (কামাল) বিচার করবেন? স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা হানাদার বাহিনীর দোসর ছিল তাদের সন্তানদের নিয়ে? আর তার মেয়ের স্বামী ডেভিড বার্গম্যানের কথা কী বলব, যখন ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলছিল, তখন তিনি বিদেশীদের সঙ্গে লবিং করছিলেন তাদের বাঁচানোর জন্য। এসব খুব বেশিদিন আগের কথা নয়। সম্প্রীতি বাংলাদেশের আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর আতিউর রহমান প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন শহীদজায়া শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক চন্দ্রনাথ পোদ্দার, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আলী শিকদার, সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
×