ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আওয়ামী লীগের ইশতেহার ঘোষণা আজ

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮

আওয়ামী লীগের ইশতেহার ঘোষণা আজ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার আজ মঙ্গলবার ঘোষণা করবে আওয়ামী লীগ। দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্যান প্যাসিফিক হোটেল সোনারগাঁওয়ে সকাল দশটায় এই ইশতেহার তুলে ধরবেন। জানা গেছে, এবারের ইশতেহারের মূল সেøাগান হচ্ছে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’। এতে ২১ বিশেষ অঙ্গীকার করা হয়েছে। এসব অঙ্গীকারের মধ্যে দুটি উল্লেখযোগ্য বিষয় রয়েছে। এগুলো হলো, ১. আমার গ্রাম-আমার শহর-শিরোনামে অঙ্গীকারে প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগরসুবিধা পৌঁছে দেয়ার রূপরেখা তুলে ধরা হবে। ২. তারুণ্যের শক্তি-বাংলাদেশের সমৃদ্ধি এই শিরোনামে অঙ্গীকারে তরুণ ও যুবসমাজকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর এবং কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া আরও যেসব অঙ্গীকার করা হয়েছে এর মধ্যে রয়েছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ; নারীর ক্ষমতায়ন, লিঙ্গ সমতা ও শিশুকল্যাণ; পুষ্টিসম্মত ও নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা; সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গীবাদ নির্মূল; মেগা প্রকল্পগুলো দ্রুত ও মানসম্মতভাবে বাস্তবায়ন; গণতন্ত্র ও আইনের শাসন সুদৃঢ় করা; সরকারী ও বেসরকারী বিনিয়োগ বৃদ্ধি; দারিদ্র্য নির্মূল; সব স্তরে শিক্ষার মান বৃদ্ধি; নিরাপদ সড়কের নিশ্চয়তা; সরকারী চাকরিতে বয়সসীমা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি; সর্বস্তরের মানুষের মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা; নিরাপদ সড়কের নিশ্চয়তা ও প্রবীণ কল্যাণ কর্মসূচী। সূত্র জানায়, ইশতেহারের শুরুতে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শাসনামলের অর্জন তুলে ধরা হয়েছে। এটাকে ‘গৌরবোজ্জ্বল পাঁচ বছর’ এবং স্বাধীনতার আকাক্সক্ষা পূরণের সুবর্ণ সময় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের পাঁচ বছরের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এ সময়টাকে লুণ্ঠন, দুঃশাসন ও দুর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে প্রতিরোধকাল হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ওয়ান ইলেভেন পরবর্তী সময়কালকে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এবং এ থেকে উত্তরণের সময়কাল হিসেবে অভিহিত করা হয়। জানা গেছে, ইশতেহারে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত সরকারের সময়টাকে সংকট উত্তরণ ও দিনবদলের যাত্রা হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। বর্তমান শাসনামলকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে বাংলাদেশকে বিশ্বের বিস্ময় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও খাতের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অর্জন এবং ভবিষ্যতে কী করা হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া হয়েছে। ইশতেহারে গণতন্ত্র, নির্বাচন ও কার্যকর সংসদ প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জš§শতবার্ষিকী উদযাপনে ২০২০ ও ২০২১ সালকে মুজিববর্ষ ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। ইশতেহারের শেষের দিকে এ বিষয়ে বিস্তারিত কর্মসূচী তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া ২০৩০ সালে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়ন, ২১০০ সাল পর্যন্ত বদ্বীপ বা ডেল্টা পরিকল্পনা এবং শেখ হাসিনার বিশ্বজনীন স্বীকৃতির বিষয়গুলো রয়েছে। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের সেøাগান ছিল ‘দিন বদলের সনদ’। ২০১৪ তে ‘এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’। আর এবারের ইশতেহারে থাকবে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’। ইশতেহার প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নির্বাচনী ইশতেহার হবে ৬৪ পৃষ্ঠার। এটি বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় হবে। জানা গেছে, ‘রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদ, অর্থনীতিবিদসহ বিভিন্ন বিষয়ে পারদর্শী বিশিষ্টজনের সমন্বয়ে গঠিত ‘ইশতেহার প্রণয়ন কমিটি’ ভোটার টানার যুগোপযোগী একটি ইশতেহার প্রণয়ন করে দলীয় সভানেত্রীর হাতে জমা দিয়েছেন। এবারের ইশতেহার হবে ভোটার টানার নতুন চমক। এবারের ইশতেহারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি বিশেষ উদ্ধৃতি রয়েছে। এটি হলো, ‘এ স্বাধীনতা আমার ব্যর্থ হয়ে যাবে যদি আমার মানুষ পেট ভরে ভাত না খায়। এই স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মা-বোনেরা কাপড় না পায়। এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি এদেশের মানুষ যারা আমার যুবক শ্রেণী আছে তারা চাকরি না পায় বা কাজ না পায়।’
×