ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ওরা কোন্্ মুখে ভোট চায়

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮

ওরা কোন্্ মুখে ভোট চায়

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ঐক্যফ্রন্টের কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, দিকভ্রষ্ট-আদর্শহীনরা দেশের মানুষকে কিছু দিতে পারে না। ঐক্যফ্রন্ট আজ যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসন ও অপরাধীদের উদ্ধারে নেমেছে। তাদের আদর্শহীনতা কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে। তারা কিসের লোভে দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে? যুদ্ধাপরাধীদের স্বজনরা কী করে মনোনয়ন পেল? কাজেই ঐক্যফ্রন্ট নেতারা তো দিকভ্রষ্ট, আদর্শহীন। এদের কাছে দেশবাসীর চাওয়ার কিছু নেই। যুদ্ধাপরাধীদের স্বজনদের যারা মনোনয়ন দেয়, যারা মানুষ হত্যা করে সেসব রাজনীতিকের ভোট চাওয়ার কোন অধিকার নেই। ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা তারা করেছে, দশ বছরের স্বেচ্ছাচারিতাকে নাকি পরিবর্তন করবে? তাহলে পরিবর্তনটা কি? জঙ্গীবাদ সৃষ্টি, বাংলাভাই সৃষ্টি, মানি লন্ডারিং, দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন, আবার সন্ত্রাস, আবার সেই ভুয়া ভোটার দিয়ে তালিকা করা, আবার নির্বাচনের নামে প্রহসন আর দেশের সমস্ত উন্নয়ন ধ্বংস করে দিয়ে দেশকে আবার সম্পূর্ণ অন্ধকার যুগে নিয়ে যাওয়া? এই পরিবর্তন তারা আনতে চান? ছিল তো ক্ষমতায়। ৪৭ বছর দেশ স্বাধীন হয়েছে। এই ৪৭ বছরের মধ্যে এরা ক্ষমতায় থেকে কী দিয়েছিল? এদের কাছ থেকে মানুষ কী পেয়েছে? মানুষ কিছু না পেলেও ওই বিএনপি-জামায়াত জোটের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে বলেন, আরও পাঁচটি বছর ক্ষমতায় থাকা প্রয়োজন আওয়ামী লীগের। কারণ, উন্নয়ন কর্মকা- শেষ করতে আরেকবার ক্ষমতায় যাওয়া প্রয়োজন। আর আমরা দেশকে আরও উন্নয়ন করতে চাই। এজন্য নৌকা মার্কায় ভোট চাই। বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আমার আস্থা-বিশ্বাস রয়েছে। আমার বিশ্বাস, তারা সঠিক জায়গায় ভোট দিতে ভুল করবেন না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে বর্তমান সরকারের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। দেশের মানুষের সাংবিধানিক অধিকার আর কাউকে কেড়ে নিতে দেয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, তারা (ঐক্যফ্রন্ট) সরকার গঠন করবে, ভাল কথা। কিন্তু তাদের প্রধান কে হবেন- তা জানেন না তারা। তাদের সরকারের প্রধান কে হবেন সেটা কিন্তু আজ পর্যন্ত জাতির সামনে দেখাতে পারেনি। আমার প্রশ্ন তাদের সরকার প্রধান কে হবে? এতিমের অর্থ আত্মসাতকারী (খালেদা জিয়া) না ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আইভী রহমানের হত্যাকারী সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমান না যারা যুদ্ধাপরাধী হিসেবে সাজা দিয়েছি তাদের কেউ হবে? সেটাও তো তারা স্পষ্ট করে জানায়নি। সেটাও তো দেশবাসী জানে না। তাই দেশবাসীকে সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। দেশবাসীকেও বেছে নিতে হবে তারা কাকে চায়? তারা কি ধরনের সরকার চায়? সেটা আজ দেশের জনগণের ওপরেই আমি সেই দায়িত্ব ছেড়ে দিলাম। তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস, দেশের মানুষ ভুল সিদ্ধান্ত নেবে না। দেশের অগ্রযাত্রা কেউ থামিয়ে দিতে না পারে- সেজন্য আরও পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকা প্রয়োজন আওয়ামী লীগের। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, নারী বিষয়ক সম্পাদক ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ ও উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ঐক্যফ্রন্টের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, মানুষ ভাল থাকলে তাদের ভাল লাগে না। তারা কোথায় আমাদের স্বৈরাচারী অবস্থান দেখেন? লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে আমাদের বিজয় এলেও, ’৭৫-এর পর সেই স্বর্ণালী ইতিহাস মুছে ফেলে নতুন প্রজন্মকে মিথ্যা দিয়ে বিভ্রান্ত করেছে তৎকালীন অপশক্তি পরিচালিত সরকার। স্বাধীনতার সুফল একে একে নস্যাত করতে চাইছিল তারা। তিনি বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসেনি। তাই জবাবদিহিতাও ছিল না জনগণের কাছে। তাই খুন-হত্যা-সন্ত্রাস-লুট করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে রেখেছিল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, একাত্তরে ছিল খান সেনাদের অত্যাচার। আর ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াতের অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছে দেশের মানুষ। দুর্নীতি-হত্যা-খুন নিয়েই রাজনীতি করেছে বিএনপি। তাদের ভোটে জেতার মতো আত্মবিশ্বাস ছিল না। তারা দেশকে পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করেছে। তিনি বলেন, আমাদের দশ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশের কপালে যে দুর্নীতিগ্রস্তের তকমা ছিল- তা দূর করা হয়েছে। মানুষের জীবনে আজ পরিবর্তন হয়েছে। তারা আজ আশাবাদী হতে পারে। আস্থার ঠিকানা খুঁজে পেয়েছে। সাধারণ মানুষ আর তৃণমূলের উন্নয়নই ছিল আমাদের মূল লক্ষ্য। হাওয়া ভবনের মতো কোন দুর্নীতির কারখানা আওয়ামী লীগ আমলে হয়নি। শেখ হাসিনা বলেন, যারা বিগত সময়ে নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েও পারেনি, তারা আমাদের সমালোচনা করবে এটাই স্বাভাবিক। ২০০৮ ও ২০১৪ সালে মানুষ নৌকাকে বেছে নিয়েছিল দেশের অগ্রগতির জন্য। আর তারা ক্ষমতায় যাওয়ার লোভে দেশব্যাপী অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করেছিল। মানুষ হত্যায় মেতে উঠেছিল? ক্ষমতায় থাকতে দেশের সম্পদ লুট, আর ক্ষমতার বাইরে থাকতে জ্বালাও-পোড়াও, আর দেশের সম্পদ ধ্বংস করেছে। তারা কী করে দেশের মানুষের কাছে ভোট চাইবে? তিনি বলেন, আজ দেশের সত্যিকারের পরিবর্তন হয়েছে। দেশের সব ক্ষেত্রেই আজ উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। মানুষের যে সত্যিকারের উন্নয়ন, তা তো আওয়ামী লীগই এনে দিয়েছে। আমাদের লক্ষ্যই হলো- দেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়া। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে দারিদ্র্যমুক্ত হবে বাংলাদেশ- এটাই আওয়ামী লীগের লক্ষ্য? কারণ, আওয়ামী লীগ চায় দেশের হতদরিদ্র মানুষ স্বাবলম্বী হোক। তৃণমূলের মানুষ আজ সবচেয়ে বেশি উপকৃত। ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন করার অঙ্গীকার করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২০-২০২১ এই বর্ষকে আমরা মুজিব বর্ষ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছি। আমরা বছরব্যাপী বঙ্গবন্ধুর শতবার্ষিকী উদ্যাপন করেই আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করব। এই সুবর্ণজয়ন্তী যখন উদ্যাপন করব বাংলাদেশকে তখন দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ হিসেবে আমরা ইনশাল্লাহ গড়ে তুলব। কোন মানুষ গৃহহারা থাকবে না। ক্ষুধার্ত থাকবে না। বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে না। এটা আমাদের অঙ্গীকার। সেইভাবেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, বেকার সমস্যা দূরীকরণে বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েই আমরা দেশ পরিচালনা করছি। আজকে নব্বই ভাগ মানুষের ঘরে আলো জ্বালাতে পেরেছি। আজকে বাংলাদেশকে ক্ষুধামুক্ত করতে পেরেছি। বাংলাদেশ আজকে এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশের মানুষ আজকে খুশি। গ্রামের মানুষ সব থেকে বেশি উৎসাহিত। গত ১০ বছরে যে পরিবর্তনটা আমরা এনেছি, এই পরিবর্তনটা আবার অনেকের চোখে পড়ে না। যখন মানুষ ভাল থাকে, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়- তখন (ঐক্যফ্রন্ট) তারা বলে এটা নাকি স্বেচ্ছাচারিতা! স্বেচ্ছাচারিতাটা কিভাবে হলো? আমার সেটা প্রশ্ন? স্বেচ্ছাচারীর কি দেখতে পেল তারা? জিয়া পরিবারের দুর্নীতির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা আজকে দুর্নীতির কথা বলছে তারা হয় সাজাপ্রাপ্ত, না হয় দুর্নীতি মামলার আসামি। আমাদের ওপর দুর্নীতির অভিযোগ যখন এনেছিল বিশ্বব্যাংক আমি চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম। আল্লাহর রহমতে, বাংলার মানুষ আমার সঙ্গে ছিল, সেই চ্যালেঞ্জ আমরা মোকাবেলা করেছি। বিশ্বব্যাংক কোন দুর্নীতি খুঁজে পায়নি। কানাডার ফেডারেল কোর্ট স্পষ্ট বলে দিয়েছিল বিশ্বব্যাংকের সব অভিযোগ মিথ্যা, ভুয়া ও বানোয়াট। আমাদের কোন কর্মের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের মাথা হেঁট হোক সেটা কিন্তু করিনি। বরং আজকে বিশ্বে বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের মানুষ যখনই বিদেশে যাচ্ছে তারা একটা সম্মান পাচ্ছে, মর্যাদা পাচ্ছে। বাংলাদেশ আজকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। অন্তত সেইটুকু করতে সক্ষম হয়েছি। তাহলে স্বেচ্ছাচারিতা কোথায় হলো? প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, যুদ্ধাপরাধী, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় সাজাপ্রাপ্ত, দুর্নীতিবাজদের উদ্ধার করতে নেমেছে আমাদের কিছু জ্ঞানী-গুণী এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবীরা। যুদ্ধাপরাধী হিসেবে যাদের সাজা হয়েছে তাদেরই ছেলেরা মনোনয়ন পায় এদের কাছ থেকে। তিনি বলেন, পৃথিবীর কোন দেশে যারা যুদ্ধাপরাধী, সাজাপ্রাপ্ত কেউ কখনও তাদের স্থান করে দেয় না। কি দুর্ভাগ্য আমাদের যারা জ্ঞানগর্ভ ভাষণ দেয়, বড় বড় কথা বলে, আজকে তাদের আদর্শহীনতা, সব ধরনের উচ্চবাচ্য সবকিছু যেন কোথায় হারিয়ে গেছে। তারা এখন হাত মিলিয়েছে এদের সঙ্গে, কিসের স্বার্থে, কেন? ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা আরও বলেন, তারা নাকি পরিবর্তন করে ফেলবেন! খুব ভাল পরিবর্তন তারা করুক। কিন্তু আজকে যারা এক হয়েছে তারা কারা? একদিকে স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী, সেই যুদ্ধাপরাধীরা কিভাবে মনোনয়ন পায়? কিভাবে তারা প্রার্থী হয়? তারা তো বাংলাদেশই চায়নি। আর তাদের দোসর কারা? আমাদের এই স্বনামধন্য, যারা তত্ত্বকথা দিয়ে অনেক মানুষকে বিভ্রান্তি করতে চেয়েছে। আমি আর কারও নাম নিতে চাই না। মনে হয় যেন এই নাম মুখে আনা উচিত নয়। আমার তাদের জন্য করুণা হয়। কারণ তারা দিকভ্রষ্ট। তারা ভ্রষ্টা হয়ে গেছে। তাদের আর কোন নীতি নাই। নীতিভ্রষ্ট হয়ে গেছে। কাজেই এই নীতিভ্রষ্ট আদর্শহীন, এরা কখনও মানুষকে কিছু দিতে পারে না। দিতে পারেনি, ভবিষ্যতেও দিতে পারবে না। এরা বাংলাদেশের আদর্শেই বিশ্বাস করে না। আজকে বাংলাদেশের ইতিহাস, যে চেতনা নিয়ে এদেশ স্বাধীন হয়েছে, সেই চেতনা নিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ইনশাল্লাহ বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। এবারের বিজয় দিবসে মানুষের বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাসের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের বিজয় দিবস এমন একটা সময়ে উদ্যাপন করছি যে, মানুষ আজকে স্বাধীনভাবে, মন খুলে এই বিজয়ের উল্লাস করতে পারছে। বিজয় দিবস তারা উদ্যাপন করতে পারছে। একটা সময় ছিল এটা উদ্যাপন করাই যেত না। ইতিহাস বলা যেত না। বিকৃত ইতিহাস বলতে হতো। এখন আর সেই অবস্থাটা নেই। সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে এবং এই ধারাবাহিকতাই বজায় থাকতে হবে। তাহলেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আর কেউ বাংলাদেশকে পেছনে ফেলতে পারবে না। দেশবাসীর কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন। এই নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণের ওপর আমার আস্থা আছে, বিশ্বাস আছে। বাংলাদেশের জনগণ কখনও ভুল করে না। আর তাদের ভোটের অধিকার, তাদের সাংবিধানিক অধিকার আর কখনও কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। সেই সাহসও পাবে না। নৌকা মার্কা জনগণের মার্কা। এই নৌকা মার্কা দিয়ে এদেশের স্বাধীনতা এসেছে। এই নৌকা মার্কা দিয়েই বাংলা ভাষায় কথা বলার অধিকার পেয়েছি। এই নৌকা মার্কার ফলেই আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নের গতিতে এগিয়ে গেছে। বিশ্বে আজকে উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে বাংলাদেশ। এই নৌকা মার্কা আছে বলেই আজকে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। এই নৌকা মার্কা ছিল বলেই আজকে আমরা মহাকাশ জয় করেছি, পাশাপাশি বিশাল সমুদ্রসীমা অর্জন করেছি। আমাদের ল্যান্ড বাউন্ডারি অর্জন করেছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ২১ ভাগে নেমে এসেছে। ইনশাল্লাহ আগামী ৫ বছর যদি আবার আমরা নির্বাচনে জয়ী হয়ে রাষ্ট্রপরিচালনা করতে পারি এই দারিদ্র্যের হার অন্তত আরও ৫-৬ ভাগ কমিয়ে আনতে সক্ষম হব। বাংলাদেশে হতদরিদ্র বলে কিছু থাকবে না। প্রত্যেকটি মানুষের খাদ্য, চিকিৎসা, বাসস্থান যেটুকু বাকি আছে, সেটাও আমরা করতে সক্ষম হব। সেজন্যই আজকে বিজয় দিবসে বাংলাদেশের জনগণের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাই এই কারণে যে, বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা যেন কেউ কেড়ে নিতে না পারে। স্বাধীনতাবিরোধী, খুনী, রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনী, বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী, গ্রেনেড হামলাকারী, দুর্নীতিবাজ, অস্ত্র চোরাকারবারি, সাজাপ্রাপ্ত খুনী আসামি, এরা কখনও এই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে দেবে না। দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি একটা কথাই বলব, নৌকা মার্কায় ভোট চাই। দেশের সেবা করে দেশকে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। যে বাংলাদেশের স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন এবং আমার বিশ্বাস আছে বাংলাদেশের জনগণ আমাদের ভোট দেবে। ইনশাল্লাহ আমরা ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলবই।
×