ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গানে গানে পাড়া-মহল্লায় প্রচার, ভোট প্রার্থনা

প্রকাশিত: ০৫:০৩, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮

  গানে গানে পাড়া-মহল্লায় প্রচার, ভোট প্রার্থনা

ফিরোজ মান্না ॥ গানে গানে এবার নির্বাচনে প্রার্থীরা ভোটের প্রচার করে যাচ্ছেন। পথে পথে মাইকে ভেসে আসছে চেনা-অচেনা শিল্পীর কণ্ঠে সারাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়নের কথা। আবার পাড়া-মহল্লায় প্রার্থীদের নির্বাচনী অফিসগুলোতেও অবিরাম বেজে চলেছে নৌকা মার্কায় ভোট চাওয়ার গান। মাঝে মধ্যে বাজানো হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের গানও। বিশেষ করে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীদের কণ্ঠে কালজয়ী ওই সব গান- যে গানে মুক্তিযোদ্ধারা উদ্দীপ্ত হতেন রণক্ষেত্রে। ভোট রণে এবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তরুণ প্রজন্মকে ওই গানগুলো কাছে টানবে। তবে ভোটের প্রচারে বেশিরভাগ গানই গেয়েছেন মমতাজ বেগম। আবার ট্রাকে করে প্রচারে ঢোল বাদ্য নিয়ে জটা চুলের বাউল শিল্পীরা নৌকার পক্ষে গান গেয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। ধীর গতিতে চালানো হয় প্রচারের ট্রাক। আর ট্রাকের গোটা গাঁ জুড়েই সেটে দেয়া হয়েছে নৌকা প্রতীকের পোস্টার। নৌকা প্রতীকের পোস্টারেও ছেয়ে গেছে ঢাকার অলিগলি সব জায়গা। তবে কোথাও চোখে পড়েনি বিএনপির এমন প্রচার। এমনকি কোন পোস্টার। ঢাকার কয়েকটি এলাকা ঘুরে গানে গানে ভোটের প্রচার চোখে পড়ল। ঢাকা-১২ আসনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল ও ঢাকা-৮ আসনের প্রার্থী সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেননের নির্বাচনী এলাকায় এভাবেই ভোটের প্রচার চলছে। শুধু পথে ঘাটে পাড়া মহল্লায় যে ভোট নিয়ে এমন প্রচার হচ্ছে তা নয়। সংবাদমাধ্যমেও এখন প্রধান খবর হচ্ছে নির্বাচন। টিভি চ্যানেলের খবর বা টক শোতেও চলছে একই রকম কথাবার্তা। প্রচারের এমন মাত্রা দেশের সব প্রান্তেই বিরাজ করছে। এখন চারদিকে শুধুই ভোটের প্রচার। ভোটের গানে শেখ হাসিনা সরকারের বড় বড় উন্নয়নের কথা উঠে এসেছে। বিশেষ করে পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র, ব্লু ইকোনোমি, ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে, খাদ্য নিরাপত্তা, নারীর ক্ষমতায়ন, বেকারত্ব দূরীকরণ, রফতানি খাতে ব্যাপক উন্নয়ন, বিনিয়োগ বিকাশ, স্বল্প উন্নত দেশ থেকে উত্তরণ, বিদ্যুত খাতে ব্যাপক সাফল্য গানে স্থানে স্থান পেয়েছে। এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতাকে ধরে রাখতে শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় আনার জন্য দেশবাসীর কাছে ভোট প্রার্থনা করা হচ্ছে। ঢাকার ফুটপাতে চায়ের দোকান থেকে শুরু করে রিক্সা, অটোচালক বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক- ভোট নিয়েই বেশি কথা বলছেন। ঘরে ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে দেয়া এই সরকারেরর সবচেয়ে বড় কাজ। পাশাপাশি পদ্মা সেতু তৈরির কাজ শেষ হলে দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে রাজধানীসহ উত্তরের যোগাযোগ আরও সহজ হবে। তাছাড়া দেশের অসংখ্য নদীর ওপরে সেতু নির্মাণ করেছে শেখ হাসিনার সরকার। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিয়েছে সরকার। এর আগের নির্বাচনগুলোতে দেশের উন্নয়ন-অনুন্নয়ন নিয়ে নানা কথা ছিল। এবারের নির্বাচনে এমন কথা কেউ বলছেন না। কারণ শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন দৃশ্যমান। আরও কয়েকটি মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নের পথে রয়েছে। ওই সব উন্নয়নের কথাও মানুষের মুখে মুখে ফিরছে। যানজট ঠেকাতে আইনের শাসন প্রয়োগ হচ্ছে। এতেও সাধারণ মানুষ খুশি। এবারের ভোটে মানুষের উৎসাহ উদ্দীপনাও বেশি। কারণ এবার সব দলই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এ জন্য সব দলের মানুষের মুখে শুধু ভোটের আলাপই হচ্ছে। নিরপেক্ষ মানুষ বলতে খুব কম মানুষই রয়েছে। যারা কেবল সব দলের নেতাকর্মীদের কথা শুনছেন। তারাও কিন্তু ভাল-মন্দ বিচার করে চলেছেন। ভোট কাকে দেবেন এবং কেন দেবেন। এমন বিচার শক্তি এখন বাংলাদেশের সব মানুষের মধ্যেই চলে এসেছে। তাই এবারের ভোটে কিশোর থেকে শুরু করে বৃদ্ধ মানুষটিও নির্বাচন নিয়ে আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন। কোথাও কোথাও কোন দল নিয়ে বিরূপ মন্তব্যও হচ্ছে।
×