ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিএনপি জামায়াতকে নির্বাচনে বর্জন করার আহ্বান

প্রকাশিত: ০৫:০২, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮

 বিএনপি জামায়াতকে নির্বাচনে বর্জন করার আহ্বান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি-জামায়াত ২০০১ সালে সারাদেশে বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। তারা দেশে হত্যা খুন ধর্ষণ চালিয়েছে প্রকাশ্যে। সেই অপশক্তিকে এবারের নির্বাচনে বর্জন করার জন্য বক্তারা আহ্বান জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে জাগো বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত ‘সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গীবাদ-এই বাংলাদেশ তোমাদের নয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ আহ্বান জানিয়েছেন। বৈঠকে বক্তব্য রাখেন সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. হারুন-অর-রশিদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক ভিসি ডাঃ কামরুল হাসান খান, সাবেক সহকারী এ্যাটর্নি জেনারেল ইয়াদিয়া জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষক ড. জিনাত হুদা ও জাগো বাংলা ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী, কবি ও সাংবাদিক নাসির আহমেদ, বিভাষ বাড়ৈ প্রমুখ। বৈঠকে সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেছেন, বিএনপি জামায়াতের অপশাসনের কথা দেশবাসী মনে রেখেছে। তাই এবার নির্বাচন হবে ১৯৭০ সালের মতো। বিএনপি-জামায়াত জোট এবং তাদের দোসররা নির্বাচনে আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী তরুণ প্রজন্ম তাদের পরাজিত এবং দেশ থেকে জঙ্গীবাদ নির্মূল করতে বদ্ধপরিকর। দেশকে অবশ্যই সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গীবাদ মুক্ত করতে হবে। এজন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী শক্তিকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতায় আনতে হবে। তা না হলে দেশ কখনই যুদ্ধাপরাধী, রাজাকার-আলবদর মুক্ত হবে না। দেশের জঞ্জাল মুক্ত করতেই বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাকে পুনরায় সংসদে ফিরিয়ে আনতে হবে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান মন-মানসিকতায় কখনই মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। তিনি আইএসআইর ‘চর’ হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। জিয়াউর রহমান রাজাকার ছিলেন বলেই শাহ আজিজুর রহমানের মতো লোককে ওই সময় মন্ত্রী করেছিলেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদের পরিবর্তে জিন্দাবাদ কায়েম করেছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার তিন বছর পরই তিনি এসব করেন। জিয়াউর রহমান প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হলে কোন সময়ই রাজাকার, আলবদর, আলশামসদের স্বাধীন বাংলাদেশের সংসদে বসাতে পারতেন না। আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি সেই জামায়াত-জঙ্গীবাদ পুনরায় প্রতিষ্ঠা করার জন্য জোট বেঁধেছে। তারা মরিয়া হয়ে উঠেছে জেতার জন্য। তাদের অবশ্যই ভোটযুদ্ধে পরাজিত করতে হবে। তা না হলে দেশ ফের আইএসের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। জার্মানির যুদ্ধাপরাধী নাৎসিদের কথা উল্লেখ করে সাবেক বিচারপতি বলেন, তারা সেখানে রাজনীতি করতে পারে না। তাদের সেই অধিকার সংবিধান দেয়নি। কিন্তু জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর বিধি-নিষেধ অমান্য করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরোধিতা করে বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি করার অধিকার দিয়েছিলেন। আর ওই সময়ই যুদ্ধাপরাধী মীর কাশেমরা বাংলাদেশে কোটি কোটি টাকার পাহাড় করেছে। তারা আজ সেই অর্থ-বিত্ত জঙ্গীদের পেছনে ঢালছেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, জঙ্গীবাদকে নির্মূল করতে হলে বিএনপি জামায়াতকে নির্বাচনে বর্জন করতে হবে। তারা সুযোগ পেলে আবারও তারা দেশকে ২০০১ সালের শাসন চালাবে। দেশের মানুষ তাদের হাতে নিরাপদ নয়। ২০০১ সালে তারা দেশকে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দিয়েছিল। বাংলাদেশের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে সম্প্রীতির মাধ্যমে বসবাস করছে। এটাই বাংলার সংস্কৃতি। এর মধ্য কখনও কখনও সাম্প্রদায়িক শক্তি এই সংস্কৃতিকে উল্টিয়ে দিতে চেয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে যে অসাম্প্রদায়িক দেশের সৃষ্টি হয়েছে সে দেশ মুক্তিযুদ্ধবিরোধীরা রাজনীতিকে ব্যবহার করে জাতিকে বিভাজন করেছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে যারা ক্ষমতা দখল করেছে তারা সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে রাজনীতিতে সক্রিয় করে বিভাজন সৃষ্টি করেছে। তারা ৭৫ পরবর্তী সময়ে জোট বদ্ধ ছিল। আজকেও ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে জোট বদ্ধ হয়েছে। জামায়াতের নিবন্ধন না থাকলে জামায়াতকে বিএনপি এবারও ধানের শীষে ভোটে দাঁড়ানোর সুযোগ দিয়েছে। বিএনপি-জামায়াতের লক্ষ্য এক ও অভিন্ন। কামরুল হাসান খান বলেন, আমাদের ভিতরে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি বিএনপি-জামায়াতের এজেন্টরা এখনও অবস্থান করছে। ষড়যন্ত্রকারী, অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে নীতি নির্ধারকদের প্রতি আহ্বান। এবারে লড়াই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষার চূড়ান্ত লড়াই। শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বের প্রতি সকলকে থাকার আহ্বান। বিভাষ বাড়ৈ বলেন, বিএনপি নেত্রী জানেন তিনি নির্বাচন করতে পাররেন না। তারপরও মনোনয়ন কিনেছেন নাটক করার জন্য। সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠে রয়েছে। এদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে। ছাত্রশিবির ছাত্রদলের ৩শ’ ২০ ক্যাডার এখনও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে আছে। যারা বিএনপি-জামায়াতের সময় নিয়োগ পেয়েছিলেন। সরকার ৫ মে উগ্রবাদীদের বিরুদ্ধে যতটা কঠোর হয়েছিল- বর্তমানের সরকারের সেই অবস্থান পরিবর্তন হয়েছে। ফলে উগ্রবাদীরা আবারও মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে।
×