ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রুহুল আমিন ভূঁইয়া

ফেরদৌসের ‘পোস্টমাস্টার ৭১’

প্রকাশিত: ০৬:৫৮, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮

 ফেরদৌসের ‘পোস্টমাস্টার ৭১’

চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ। বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা। আগামীকাল প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে যাচ্ছে তার অভিনীত ও প্রযোজিত প্রতিক্ষীত সিনেমা ‘পোস্টমাস্টার ৭১’। নায়ক ফেরদৌস ছবি ও সমসাময়িক বিষয়ে কথা বলেন আনন্দকণ্ঠের সঙ্গে। শুরুতেই মহান বিজয়ের মাস ডিসেম্বর কে স্মরণ করে ফেরদৌস বলেন, এ মাস আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের মাস। এ মাসেই বাঙালী পেয়েছিল কাক্সিক্ষত স্বাধীনতা। ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যা, পাক হানাদার বাহিনীর ববর্রতম হত্যাযজ্ঞ, নিযার্তন, নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়ে ৯ মাসের ত্যাগ-তিতিক্ষার পর পৃথিবীর বুকে এ মাসেই রচিত হয়েছিল এক অমর গাথা বাঙালীর স্বাধীনতা, একটি মানচিত্র ও একটি পতাকা। ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ নামক যে রাষ্ট্র বিজয় গৌরবে তার যাত্রা শুরু করেছিল, আজ তা বিশ্বের কাছে এক অপার বিস্ময়, উন্নয়নের রোল মডেল! এবারের বিজয় দিবস আমাদের জন্য একটু ব্যতিক্রম। কারণ দেশে এখন উন্নয়নের জোয়ার বইছে। বিগত বিশ একুশ বছর আগে আমাদের জাতির পিতা কে ছিল আমরা জানতাম না। আমাদের মুক্তিযোদ্ধার গল্প নতুন প্রজন্মকে জানিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছি। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তাদের কাছে পৌঁছে দেয়া আমাদের দায়িত্ব। সেই লক্ষ্যেই এবারের ডিসেম্বর মাস জুড়ে কাজ করছি এবং সামনেই আমাদের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনকে সামনে রেখে তরুণদের উদ্দেশ করে বলতে চাই যে, তরুণদের প্রথম ভোট যেনও স্বাধীনতার পক্ষে হয়। যারা স্বাধীনতার পক্ষে তাদের কে যেনও সাপোর্ট করে এ শিক্ষাটাই দিতে চাই। দেশ এগিয়ে গেলে আমরা এগিয়ে যাব। যোগ করে ফেরদৌস আরও বলেন, ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে কিছু নির্বাচনী প্রাচরণা থাকবে এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা জানিয়ে দিনটি পালন করা হবে। ‘পোস্টমাস্টার ৭১’ সিনেমাটি নিয়ে জানতে চাইÑ আগামীকাল দেশজুড়ে মহাসমারোহে মুক্তি পাচ্ছে ‘পোস্টমাস্টার ৭১’ সিনেমাটি। ছবিটি পরিচালনা করেছেন নির্মাতা আবীর খান। মূলত মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে পোস্টমাস্টার বা ডাকপিয়নরা তাদের দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় কিভাবে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন তা দেখানো হয়েছে। আমাকে দেখা যাবে পোস্টমাস্টার চরিত্রে। গতানুগতিকের বাইরে গিয়ে কিছু সত্য ঘটনা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক অনেক ছবি নির্মিত হয়েছে এর আগে। পোস্টামাস্টার ৭১ কোন্ দিক থেকে আলাদা? মুক্তিযুদ্ধের সময় সরকারী চাকরিজীবীদের কি অবস্থা ছিল সেই বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে এ ছবিতে। সরাসরি যুদ্ধর রণাঙ্গন না দেখিয়েও যুদ্ধককালীন ঘটে যাওয়া দৃশ্য দেখানো যায় সেই দিকটা বিবেচনা করেই এ ছবি। তবে এটি একটু ব্যতিক্রম। বিজয় মাস হওয়া সত্ত্বে¡ও মুক্তিযুদ্ধের আর কোন ছবি নেই এ মাসে। তবে পোস্টমাস্টার ৭১ বিজয় মাসকে উপলক্ষ করেই বানানো হয়েছে বলে জানান ফেরদৌস। এ ছবিতে ৭ মার্চের ভাষণ থেকে শুরু করে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের পটভূমি রয়েছে এবং মুক্তিযুদ্ধের ছবি না হওয়ার কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিভিন্ন কারণে সম্ভব হচ্ছে না। বেশকিছু নিয়মনীতি আছে। মুক্তিযুদ্ধের শুরুটা হয়েছিল ঢাকা থেকে। ঢাকা ভিত্তিক করে সিনেমা করতে গেলে যে ধরনের বাজেট দরকার এবং অনন্য যে সব সাপোর্ট দরকার সেগুলো ডিপিকাল। সরকার এগিয়ে না আসলে সম্ভব নয়। মুক্তিযুদ্ধের ছবি নির্মাণের জন্য সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। এরই মধ্যে ‘জ্যাম’ ছবির কাজ শুরু করেছেন ফেরদৌস। ২২ তারিখ থেকে ফের শূটিং হওয়ার কথা রয়েছে বলে তিনি জানান। ছবিটি পরিচালনা করছেন নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুল। ফেরদৌস এ ছাড়াও মাসুদ রানা ছবির কিছু অংশের শূটিং করছেন এবং চ্যানেল ২৪ এর জন্য একটি প্রোগ্রাম করছেন ‘তারার চোখে ভোটের মাঠে।’ আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রচারণায় বেশ সরব হয়েছেন ফেরদৌস। এখন তার সকল ব্যস্ততা নৌকার প্রাচরণায়। এ প্রসঙ্গে ফেরদৌস বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে আমরা প্রচণ্ড ভালবাসি। তিনি আমাদের যে উন্নয়নের ধারা দেখিয়ে দিয়েছে, এই ধারায় আমরা হাঁটছি। আমার মনে হয় উনি যদি আগামীতে প্রধানমন্ত্রী না হন, তবে বাংলাদেশ এভাবে এগিয়ে যেতে পারবে না। আগামী সরকারের কাছে প্রত্যাশা কি? ফেরদৌস; যে উন্নয়নের ধারাগুলো শুরু হয়েছে সেগুলো যেনও সুন্দর করে শেষ করে। বিশেষ করে আগামী প্রজন্মকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সেটা যেনও রাখতে পারে। তরুণদের জন্য কর্মসংস্থান, বেকার সমস্যার সমাধান করতে পারে। আমি চাই দেশে অনেকগুলো সিনেপ্লাক হোক। সংস্কৃতি ব্যক্তি হিসেবে মনে হয় থিয়েটারের গুণদশা মুক্তি দরকার। আপাতত এতটুকু হলেই যথেষ্ট।
×