ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পদচ্যুত হলে বিলম্বিত হতে পারে ব্রেক্সিট

অনাস্থা ভোটের মুখে মে

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮

অনাস্থা ভোটের মুখে মে

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে’র বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার জন্য লবি করছে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির বিদ্রোহীরা। এর ফলে সরকার প্রধান হিসেবে তাকে আরও চাপের মুখে পড়তে হলো। এর আগে সোমবার ব্রেক্সিট নিয়ে পার্লামেন্টে ভোটাভুটি স্থগিত হওয়ার পর তিনি কূটনৈতিক উদ্যোগ শুরু করেছিলেন। কূটনৈতিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে মে মঙ্গলবার জার্মান চ্যান্সেলর এ্যাঞ্জেলা মেরকেল ও ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। বিবিসি ও গার্ডিয়ান। ব্রিটেনে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি বুধবার প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে’র বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপনের জন্য সহকর্মীদের সমর্থন আদায়ে তৎপরতা চালাচ্ছে। পার্টির ১৯২২ কমিটির চেয়ারম্যান গ্রাহাম ব্র্যাডি বলেছেন অনাস্থা প্রস্তাব আনার জন্য যতজন অনুরোধ করা প্রয়োজন তার চেয়ে বেশি সংখ্যক অনুরোধ পাওয়ার পর অনাস্থা প্রস্তাবটি আনা হতে পারে। বুধবার এর ওপর কমন্স সভায় ভোট হতে পারে। ব্রিটেনে নিয়মানুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে ৪৮ জনকে দলীয় কমিটির কাছে চিঠি পাঠাতে হয়। ব্রেক্সিট পরিকল্পনা বাঁচাতে কূটনৈতিক উদ্যোগ শুরুর পরপরই মে অনাস্থা ভোটের মুখোমুখি হলেন। পার্টির ব্রেক্সিট সমর্থকরা বলেছেন, মে আলোচনা করতে গিয়ে ব্রিটেনের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়েছেন। কনজারভেটিভ এমপি জ্যাকব রিস মগ ও স্টিভ বেকার এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, ‘মে তার পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হলে সরকারের পতন ঘটবে।’ ব্রেক্সিট ইস্যুটি মে যেভাবে সামাল দিচ্ছিলেন তাতে নিজ দলের মধ্যে তিনি ব্যাপক বিরোধিতার মুখোমুখি হয়েছিলেন। মে সোমবার ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়া বা ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে পার্লামেন্টের ভোট স্থগিত করেন। ভোট হলে চুক্তিটি পাস না হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকায় তিনি শেষ পর্যন্ত ভোট পিছিয়ে দেন। শুরু করেন কূটনৈতিক প্রক্রিয়া। ব্রেক্সিট চুক্তি রক্ষার উদ্দেশ্যে ইউরোপীয় নেতাদের পাশাপাশি তিনি ইইউর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গেও তার আলোচনার কথা ছিল। ব্রেক্সিট নিয়ে ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের আলোচনায় একটি জটিল বিষয় হলো উত্তর আয়ারল্যান্ডের সীমানা। কমন্সসভায় নতুন ভোটাভুটি কবে হবে সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতর কিছু জনায়নি। তবে এর জন্য ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়সীমা আছে বলে জানা গেছে। ২৫ নবেম্বর ব্রাসেলসে ইইউ নেতৃবৃন্দ যুক্তরাজ্যের ব্রেক্সিট পরিকল্পনা অনুমোদন করেন। কমন্স সভার এমপিদের ওই পরিকল্পনা অনুমোদন করতে বলা হয়েছিল। মে এর আগেও তার ব্রেক্সিট পরিকল্পনা নিয়ে কয়েকবার বাধার মুখে পড়েন। ব্রেক্সিট বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে আসার যে নতুন নীল নক্সা তিনি তৈরি করেছেন তার প্রতি দল ও ব্যবসায়ীদের সমর্থন আদায় করতে তিনি ব্যর্থ হন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ অবশ্য মে’র প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেছে। হান্ট টুইটারে লিখেছেন, একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এই মুহূর্তে যে কতটা কঠিন সেটা কেউ কল্পনাও করতে পারবে না। এখন প্রধানমন্ত্রীকে সরিয়ে দেয়ার অর্থ হবে নতুন নেতার খোঁজ দীর্ঘ ও অনাবশ্যক বিতর্কে লিপ্ত হওয়া। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাভিদও বলেছেন, কনজারভেটিভ পার্টির জন্য নতুন নেতা অনুসন্ধান করার এখনই উপযুক্ত সময় নয়। বিচার মন্ত্রী ডেভিড গাউক বিবিসিকে বলেছেন এখন মে’র পতন ঘটলে তিনি চাইবেন ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া যেন বিলম্বিত হয়। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি না, মে পদচ্যুত হলে আগামী বছর ২৯ মার্চের মধ্যে ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। কারণ সেক্ষেত্রে আর্টিকেল ৫০ এর কার্যকারিতা স্থগিত হবে।
×