ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পাহাড়ীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার দাবি সুশীল সমাজের

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮

পাহাড়ীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার দাবি সুশীল সমাজের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় নির্বাচনে পার্বত্য তিন জেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভোটারদের নিরাপদ ভোটাধিকার প্রয়োগের নিশ্চয়তার দাবি জানিয়েছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের নামে পার্বত্য চট্টগ্রামে যৌথবাহিনীর চলমান অভিযান আরও জোরদার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে অভিযানের নামে নিরীহ আদিবাসীদের (ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী) ওপর দমন-পীড়ন চালানো হচ্ছে। ফলে অনেক ভোটার আতঙ্কিত হয়ে এলাকাছাড়া হয়েছে। বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে পার্বত্য অঞ্চল বিষয়ক তিনটি সংগঠনের আয়োজনে ‘আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পার্বত্য তিন জেলার আদিবাসী ভোটারদের অবাধ অংশগ্রহণ’ বিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন আয়োজক কমিটির নেতৃবৃন্দ। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন, সুলতানা কামাল, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির গৌতম দেওয়ান, খুশি কবির, অধ্যাপক মংসানু চৌধুরী ও টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান প্রমুখ। সুলতানা কামাল বলেন, ‘সারাদেশে নির্বাচনী প্রচার ও প্রস্তুতি পুরোদমে শুরু হলেও এখনও পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর জন্য স্বাধীন পর্যায়ে ভোটাধিকার প্রয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে একের পর এক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলেও স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিকারের লক্ষ্যে দৃশ্যমান কোন উদ্যোগ দেখা যায়নি। তাদের এমন নির্লিপ্ত ভূমিকায় আমরা গভীর উদ্বিগ্ন। এ বছর পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সীতাকু- ও রাউজানে আদিবাসী নারীর ওপর আক্রমণ, ধর্ষণ, হত্যা, অপহরণ ও ধর্ষণের পর হত্যা চেষ্টার মতো বিশটি ঘটনা ঘটেছে। সুলতানা কামাল বলেন, দেশের সব মানুষের অধিকার সমানভাবে নিশ্চিত হচ্ছে না। এ কারণে সরকারে থাকা একশ্রেণীর মানুষ অধিক সুবিধা ভোগ করছেন, অন্যপক্ষে থাকা মানুষরা অনেক পিছিয়ে পড়ছেন। নির্বাচনে সবাইকে সমান সুযোগ দিতে হবে। পার্বত্যাঞ্চলের মানুষের নিরাপদ ভোটাধিকার প্রয়োগের নিশ্চয়তা দিতে হবে। পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের নিরাপদ ভোটাধিকার প্রয়োগের নিশ্চয়তা দিতে এ সময় ছয় দফা বাস্তবায়নের দাবি তুলে ধরে সুলতানা কামাল বলেন, নির্বাচনে ভোটাররা যাতে নির্বিঘœ ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগের নিশ্চয়তা এবং তাদের ভোট কেন্দ্রে যেতে নিরুৎসাহিত না করা হয়, এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন থেকে বিধি-নিষেধ আরোপ করতে হবে। ভারত প্রত্যাগত পাহাড়ী শরণার্থী ও অভ্যন্তরীণ ভূমি উচ্ছেদের শিকার উদ্বাস্তুদের ভোটাধিকার সুনিশ্চিত করতে হবে। পার্বত্য চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে সুস্পষ্ট ঘোষণার অঙ্গীকার থাকতে হবে। পার্বত্য অঞ্চলে ঘটে যাওয়া সব হত্যা, গুম, অপহরণ ও ধর্ষণের ঘটনার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ তদন্ত এবং দ্রুত বিচারে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা নিতে হবে। পার্বত্য চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের মাধ্যমে পার্বত্য তিন জেলার স্থায়ী শান্তি ফিরিয়ে আনতে দৃশ্যমান ও কার্যকর উদ্যোগ দ্রুত নিতে হবে। ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের কার্যক্রম গতিশীল কারতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ ও লোকবল বৃদ্ধি করে এ অঞ্চলের ভূমিবিরোধের আশু সমাধান করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে খুশি কবির বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণ একটি ইতিবাচক দিক।
×