ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

লক্ষ্য নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা

বিজয়ফুল উৎসবের চূড়ান্ত পর্ব শুরু আজ

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮

 বিজয়ফুল উৎসবের চূড়ান্ত পর্ব শুরু আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধকরণ ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানানোর লক্ষ্যে আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় পর্যায়ে শুরু হচ্ছে ‘বিজয়ফুল উৎসব’ প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যৌথ আয়োজনে সকাল সাড়ে ৯টায় শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে শুরু হবে এই উৎসব। বিজয়ফুল (শাপলা) তৈরি, মুক্তিযুদ্ধের গল্প রচনা, কবিতা রচনা, কবিতা আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন, একক অভিনয় ও চলচ্চিত্র নির্মাণ এই সাতটি বিষয়ের ওপর অনুষ্ঠিত হবে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ, কাপড়, প্লাস্টিক শীট ও অন্যান্য উপকরণ দেয়া হবে। এরপর বিকেল চারটায় শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে থাকছে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে প্রতিযোগিতার উদ্বোধনীতে প্রধান অতিথি থাকবেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব এন এম জিয়াউল আলম। এতে বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি সচিব মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য রাখবেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ আব্দুল মান্নান ইলিয়াস এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করবেন বাংলাদেশ শিশু একাডেমির পরিচালক আনজীর লিটন। বুধবার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান এই আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন সংস্কৃতি সচিব মোঃ নাসির উদ্দিন আহমেদ, একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ আব্দুল মান্নান ইলিয়াস শিল্পকলা একাডেমির সচিব বদরুল আনম ভূঁইয়া, শিশু একাডেমির পরিচালক আনজীর লিটন প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ছয়টি পাপড়ি ও মাঝখানের একটি কলির জাতীয় ফুল শাপলা হচ্ছে বিজয়ফুলের প্রতীক। পাপড়ি ও কলিসহ সাতভাগে বিভক্ত এই ফুল জাতিকে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের কথা স্মরণ করিয়ে দিবে। অন্যদিকে, ছয়টি পাপড়ি স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ৬ দফার কথা। এই প্রতিযোগিতাটির মাধ্যমে শিশু-কিশোর ও নতুন প্রজন্মের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আরও ভালভাবে ধারণ, লালন ও বিকাশ এবং উদ্বুদ্ধকরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। তারা আরও জানান, গত ১৭ অক্টোবর হতে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা পর্যায়ে দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আন্তঃশ্রেণী প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিজয়ফুল উৎসবের উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বিভাগীয় পর্যায়ে বাছাইকৃত প্রতিযোগীদের মধ্য থেকে চূড়ান্ত প্রতিযোগী নির্বাচন করা হয়। আর সেখান থেকেই জাতীয় পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ প্রতিযোগী নির্বাচন করা হচ্ছে। প্রতিযোগিতা তিনটি স্তরে যথা : ক-গ্রুপ (শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণী), খ-গ্রুপ (ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণী) এবং গ-গ্রুপ (নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী) পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সুন্দরভাবে তৈরি করা বিজয়ফুলের জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তৈরি করা বিজয়ফুল বিক্রি করে অর্জিত অর্থ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার অথবা প্রতিবন্ধীদের সহায়তা প্রদানের পরিকল্পনা রয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান তারা। সংবাদ সম্মেলন চলাকালীন সময় বিভাগীয় পর্যায়ে বিজয়ীদের চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার জন্য নিবন্ধন কার্যক্রম চালু হয়েছে। যা চলবে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত। প্রসঙ্গত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর মুখ্য সমন্বয়ক এসডিজি মহোদয়ের সভাপতিত্বে বিজয়ফুল তৈরি প্রতিযোগিতা সংক্রান্ত একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিজয়ফুল তৈরি প্রতিযোগিতা আয়োজনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য আলোকপাত করে বলা হয় যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স এবং বেলজিয়াম প্রতিবছর ১১ নবেম্বর প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নিহত তাদের বীর শহীদদের স্মরণে ‘রিমেমব্রান্স ডে’ উদ্যাপন করে থাকে। যে সকল যোদ্ধা ও সাধারণ মানুষ যুদ্ধে নিহত হয়েছেন ওইদিন তাদের স্মরণে পোশাকে লাল পপি ফুল ধারণ করে থাকেন। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশেও মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষের স্মরণে ডিসেম্বর মাসে প্রথমবারের মতো বিজয়ফুলের প্রচলন করা হয়েছে।
×