স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আজ বুধবার থেকে নির্বাচনী প্রচার শুরু করবে। ঐক্যফন্টের ব্যানারে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপিসহ এ জোটের অন্যান্য রাজনৈতিক দলও সিলেট হযরত শাহজালাল (রহ) ও হযরত শাহপরান (রহ) এর মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে এ কর্মসূচীতে অংশ নেবে।
আনুষ্ঠানিকভাবে ধানের শীষের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে আজ বুধবার দুপুরে বিমানে সিলেট যাবেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন ও বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান নজরুল ইসলাম খানসহ জোটের সিনিয়র নেতারা। দুপুর ১২টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তারা সিলেট যাবেন। হযরত শাহজালাল (রহ) ও হযরত শাহপরান (রহ) মাজার জিয়ারতের পর তারা মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল আতাউল গনি ওসমানীর মাজার জিয়ারত শেষে প্রচার কাজে অংশ নেবেন।
অবশ্য অনানুষ্ঠানিকভাবে রবিবার প্রতীক পাওয়ার পর থেকেই এ জোটের প্রার্থীরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন। আর আনুষ্ঠানিকভাবে সিলেট থেকে প্রচার শুরুর পর ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা সারাদেশের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করবেন। এর অংশ হিসেবে অন্তত ২০টি জেলায় নির্বাচনী জনসভা করার কথা রয়েছে। এ ছাড়া আরও অন্তত ৫০টি জায়গায় পথসভা করবেন তারা। উল্লেখ্য, এর আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে সিলেটসহ কয়েকটি জেলা সফর করে এ জোটের নেতারা।
এদিকে নির্বাচন পরিচালনায় সার্বিক বিষয় দেখভাল করতে ১৮টি উপকমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এগুলো হচ্ছে নির্বাচন কমিশন সমন্বয় উপ-কমিটি, পোলিং এজেন্ট প্রশিক্ষণ, নির্বাচন পর্যবেক্ষক, মিডিয়া, অর্থ, প্রচার, রাজনৈতিক, শৃঙ্খলা, প্রশাসন, পেশাজীবী সমন্বয়, আন্তর্জাতিক, সাংস্কৃতিক-সামাজিক ও ক্রীড়া, টেলিভিশন মনিটরিং উপ-কমিটি ইত্যাদি।
প্রসঙ্গত, এবারই প্রথম খালেদা জিয়াকে ছাড়া সিলেট থেকে নির্বাচনী প্রচার শুরু করছে বিএনপি। এবার বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া কারাগারে থাকায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপিসহ এ জোটের নেতারা সিলেট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচার শুরু করছেন। ১৯৯১ সাল থেকে বিএনপি প্রতিটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সিলেটে গিয়ে মাজার জিয়ারতের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচার শুরু করতেন। এটি অনেকটা নিয়মে পরিণত হয়েছে।
জানা যায়, নির্বাচনী প্রচার জোরদার করতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রতিটি সংসদীয় আসনে কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি গঠন করছে। এ ছাড়া নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ও সরকারের ১০ বছরের নানা অনিয়মের বিষয় ও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিকে প্রাধান্য দিয়ে একটি লিফলেট তৈরি করা হচ্ছে। আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরুর পর সারাদেশের সব এলাকায় এ লিফলেট বিতরণ করা হবে।
মঙ্গলবার বিকেলে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টর শরিক দলের নেতাদের এক যৌথসভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, সিলেটে শাহজালাল (রহ) ও শাহপরান (রহ) এর মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে বুধবার আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচার শুরু হচ্ছে। এ ছাড়া মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ১৬ ডিসেম্বর রাজধানীতে বিজয়র্যালি করবে বলেও তিনি ঘোষণা দিয়েছেন। তার আগে ১৪ ডিসেম্বর যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উদ্যাপন করা হবে। ১৪ তারিখ দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে এবং কালো পতাকা টানানো হবে। সকাল ৮টায় মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে এবং ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৮টার দিকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে মহান বীরদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে এবং সেখান থেকে ফেরার পথে জিয়ার মাজার জিয়ারত করবেন তারা। এ ছাড়া বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়, গুলশান কার্যালয় এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কার্যালয়ে বিজয় দিবসের আগের রাতে আলোকসজ্জা করা হবে বলে নজরুল ইসলাম খান জানান।
নজরুল ইসলাম বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িবহর এবং নোয়খালীতে মওদুদ আহমদের নির্বাচনী প্রচারে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে পুলিশের ছত্রচ্ছায়ায় হামলা হয়েছে। সরকারী দলের লোকেরা পুলিশের সহায়তায় কিংবা ছত্রচ্ছায়ায় যে নির্যাতন, অন্যায় আচরণ করছে তার নিন্দা জানাই। তাদের এই আচরণ আমাদের ভীতসন্ত্রস্ত করছে না। এ সরকারের অধীনে আগেও আমাদের জীবন কাটাতে হয়েছে। এসব করে তারা বিএনপিকে নির্বাচন থেকে সরাতে চায়। এরপর আবার হলে জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। এ সময় গণফোরাম নেতা সুব্রত চৌধুরী, মোস্তফা মহসিন মন্টু, বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম, রুহুল কবির রিজভী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: