জাহিদুল আলম জয় ॥ মেয়েদের পথ অনুসরণ করে বাংলাদেশের কিশোর ফুটবলাররাও চোখ ধাঁধানো সাফল্য পেয়েছে। নবেম্বরে নেপাল থেকে সাফ অনুর্ধ-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয় করে বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৫ জাতীয় ফুটবল দল। এই দলটির সামনে এবার আরও বড় চ্যালেঞ্জ।
উয়েফা মিনি প্রজেক্টের অধীনে অনুষ্ঠেয় চার জাতি টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের কিশোর ফুটবলাররা। টুর্নামেন্টে অংশ নিতে ইতোমধ্যে আয়োজক দেশ থাইল্যান্ডে অবস্থান করছে মেহেদী, রবিউল, মিটুল, রাজন, রাসেলরা। এর আগে কখনই ইউরোপের কোন দলের বিপক্ষে খেলার অভিজ্ঞতা ছিল না বাংলাদেশের কিশোর ফুটবলাদের। এই টুর্নামেন্টের মধ্য দিয়ে এবার সেই অভিজ্ঞতা অর্জন করতে যাচ্ছে কিশোররা।
আজ টুর্র্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে ইউরোপের দেশ সাইপ্রাসের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ম্যাচটি মাঠে গড়াবে বাংলাদেশ সময় বেলা ৩টায়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় আরেক ম্যাচে মুখোমুখি হবে অপর দুই দল স্বাগতিক থাইল্যান্ড ও মালদ্বীপ। বাংলাদেশের বাকি দু’টি ম্যাচ ১২ ডিসেম্বর থাইল্যান্ড ও ১৪ ডিসেম্বর মালদ্বীপের বিরুদ্ধে।
উয়েফা এ্যাসিস্ট মিনি টুর্নামেন্ট প্রজেক্টের অধীনে শুরু হচ্ছে চার জাতির এই প্রতিযোগিতা। লীগভিত্তিক এই আসরে একে অপরের বিরুদ্ধে খেলার পর সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট পাওয়া দেশ শিরোপা জিতবে। ইতোমধ্যে অনুর্ধ-১৫ সাফ জিতেছে মেহেদী, উচ্ছ্বাস, মারুফরা। এবার তাদের দক্ষিণ এশিয়ার বাইরে যোগ্যতা প্রমাণের পালা।
এ প্রতিযোগিতাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন দলের কোচ মোস্তফা আনোয়ার পারভেজ। মিশন শুরুর আগে তিনি বলেন, এই দলের ওপর আমার বিশ্বাস আছে। নতুন মিশন আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জের।
আশাকরি চ্যালেঞ্জ উতরাতে পারব। প্রথম ম্যাচ নিয়ে বাংলাদেশ কোচ বলেন, সাইপ্রাস ইউরোপের দল। স্বাভাবিকভাবে তাদের খেলার ধরন আমাদের চেয়ে ভিন্ন। তবে দলটা অনুর্ধ-১৫ বলেই আমি আশাবাদী। ব্যবধান উনিশ কিংবা বিশ-এর বেশি নয়। আশাকরি প্রথম ম্যাচ ভাল করব।
এতদিন বাংলাদেশের বিভিন্ন বয়সভিত্তিক ও জাতীয় দল খেলেছে এএফসি এবং সাফ পর্যায়ের বিভিন্ন আসরে। কিন্তু উয়েফার কোন আসরে খেলেনি। খেলার কথাও নয়।
কারণ উয়েফা হচ্ছে ইউরোপ জোন। কিন্তু উয়েফা সম্প্রতি তাদের মিনি প্রজেক্ট হিসেবে এই ধরনের টুর্নামেন্ট চালু করেছে। যাতে এশিয়া জোন থেকে তিনটি এবং ইউরোপ জোন থেকে একটি দল খেলবে। যে কারণে নিজেদের মুন্সিয়ানা দেখার আরও সুযোগ এসেছে বাংলার কিশোরদের সামনে। নেপালে অনুষ্ঠিত সাফের আগে অনুশীলনের খুব একটা সুযোগ পায়নি কিশোররা। দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব পুনরুদ্ধার করার পরই এ দলকে অনুশীলনের মধ্যে রাখে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম ও কমলাপুর স্টেডিয়ামে অনুশীলন করে আশিক, হেলালরা।
এই টুর্নামেন্টে সাফে খেলার অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চায় কিশোররা। উয়েফা মিনি টুর্নামেন্টের নিয়মানুযায়ী প্রতিটি দলে ১৮ ফুটবলার থাকবে। যে কারণে সাফে খেলা পাঁচ ফুটবলার- সাগর সরকার, আবু তালেব, রাফুল রহিম, আরিফুল হক সীমান্ত এবং লাবিবুর রহমান দল থেকে বাদ পড়েছে। বাকি যারা আছে তাদের নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী কোচ মোস্তফা আনোয়ার পারভেজ। তিন দলের মধ্যে একমাত্র মালদ্বীপের বিপক্ষে এর আগে খেলার অভিজ্ঞতা আছে বাংলাদেশের। এই দেশটিকে হারানোই প্রধান চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের। সুযোগ কাজে লাগাতে চান অধিনায়ক মেহেদী হাসানও। তিনি বলেন, সাফ থেকে উয়েফা টুর্নামেন্ট ভিন্ন। আমাদের সেভাবেই অনুশীলন করানো হয়েছে। ইউরোপের টিমের সঙ্গে খেলব, এখানে ভয়ের কিছু নেই। সাফে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় খেলোয়াড়দের মাঝে আত্মবিশ্বাসটা কাজ করছে। আমরা আত্মবিশ্বাসী হয়েই মাঠে নামব।
সাইপ্রাসের বিরুদ্ধে ম্যাচ নিয়ে মেহেদী বলেন, আমরা ম্যাচটি জিততে চাই। সাইপ্রাস ও থাইল্যান্ডের ভিডিও দেখেছি। আর মালদ্বীপের বিরুদ্ধে খেলায় তাদের সর্ম্পকে ধারণা আছে।
