ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দ্বিতীয় গণভোটের দাবি জোরদার ॥ কাল পার্লামেন্টে ভোট

ব্রেক্সিট নিয়ে মন্ত্রিসভা বিভক্ত

প্রকাশিত: ০৪:৩৩, ১০ ডিসেম্বর ২০১৮

 ব্রেক্সিট নিয়ে মন্ত্রিসভা বিভক্ত

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মের ব্রেক্সিট নিয়ে শেষ রাজনৈতিক অচলাবস্থা অতিক্রমের চেষ্টার সময়ে মন্ত্রিসভার মধ্যে এই ইস্যুতে দ্বিতীয় গণভোটের দাবি জোরদার হয়েছে। ব্রেক্সিটের জন্য দ্বিতীয় গণভোটের দাবিতে মন্ত্রিসভা এখন দ্বিধাবিভক্ত। অন্যদিকে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ইইউর সঙ্গে থাকার আগ্রহ বেড়েছে। গার্ডিয়ান ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট। ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির সিনিয়র সদস্যরা ধারণা করছেন, মের ব্রেক্সিট পরিকল্পনা কমন্স সভায় পাস হবে না। মঙ্গলবার পার্লামেন্টে ভোটগ্রহণ হবে। এতে ওই পরিকল্পনা পাস না হলে সাংবিধানিক সঙ্কটে পড়বে সরকার। মন্ত্রিসভা ও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের অনেকেই পদত্যাগ করবেন। বিশেষ করে দ্বিতীয় গণভোটের দাবি উত্থাপনকারী এমপি ও মন্ত্রীরা তখন ব্যাপক হারে বিদায় নেবেন। ব্রেক্সিট ডিলের বিরোধিতা করে শনিবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যাভিন উইলিয়ামসনের সহকারী ও কোলচেস্টার থেকে নির্বাচিত এমপি পদত্যাগ করেছেন। মন্ত্রিসভার সদস্যরা ইন্ডিপেন্ডেন্টকে বলেছেন ব্রেক্সিট ডিলের ওপর প্রস্তাবিত ভোট পিছিয়ে দেয়ার জন্য মে’কে বোঝানোর চেষ্টা করা হলেও তিনি রাজি হননি। তারা বলছেন, ওই ইস্যুতে ভোট হলে সরকার খুব লজ্জাজনকভাবে হারবে। এটি হবে পার্লামেন্টের সাম্প্রতিকালের ইতিহাসে সবচেয়ে অবমাননাকর পরাজয়। মের পরিকল্পনা পাস না হলে শেষ পর্যন্ত তার নেতৃত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে, দলের মধ্যে বিভক্তি দেখা দিতে পারে। কেউ কেউ বলছেন মে নিজের পরিকল্পনার ওপর এতটা আস্থাবান যে, এর কোন পরিবর্তন বা কোন ধরনের ছাড় দেয়ার কথা তিনি বিবেচনা করছেন না। তিনি যতই তার পরিকল্পনা পাস করিয়ে নেয়ার বিষয়ে অনড় থাকবেন ততই দ্বিতীয় গণভোটের দাবি জোরদার হবে। মে বিষয়টি উপলব্ধি করতে চাইছেন না বলে তার দলের সিনিয়র সদস্যরা মনে করেন। মন্ত্রিসভার একটি সূত্র জানিয়েছে, মে নিজের পরিকল্পনা নিয়ে এতটাই আত্মবিশ্বাসী যে একে রক্ষা করার একমাত্র উপায় এখন দ্বিতীয় গণভোট দেয়া। কনজারভেটিভ পার্টি সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রিসভায় অনেকে আছেন যারা দ্বিতীয় গণভোটের দাবি সমর্থন করলেও পদত্যাগ করবেন না। সিনিয়র মন্ত্রীদের কেউ কেউ বলছেন ব্রেক্সিট ডিল বাঁচাতে হলে প্রধানমন্ত্রীর উচিত এখন জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠন করা। দ্বিতীয় গণভোট অথবা নরওয়ে ধাঁচের সমঝোতা এর মধ্যে কোনটিকে বেছে নেয়া উচিত এ নিয়ে ব্রিটেনের রাজনীতি বিতর্ক শুরু হয়েছে। গার্ডিয়ানের ওয়েবসাইটে লেখা নিবন্ধে বিচারমন্ত্রী ডেভিড গাউক বলেছেন, কোন একটি বেছে নিতে হবে। তিনি অবশ্য মের পরিকল্পনা সমর্থন করেন। তার মতে, দ্বিতীয় গণভোট জনগণের মধ্যে বিভক্তি আরও বাড়াবে, আবারও অনিশ্চয়তা ও দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে দীর্ঘ সময় পার করতে হবে। ডাউনিং স্ট্রিট অবশ্য দৃঢ়ভাবে দ্বিতীয় গণভোটের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। এদিকে ইউগভ পরিচালিত নতুন জনমত সমীক্ষায় দেখা গেছে, ব্রিটেনের অর্ধেকের বেশি লোক ইইউর সঙ্গে থেকে যাওয়াকে সমর্থন করে। ব্রাসেলসের সঙ্গে করা মের ব্রেক্সিট ডিল জনসমক্ষে প্রকাশিত হওয়ার পর এই জরিপ হয়। দেখা গেছে ব্রিটেনের ৫৪ শতাংশ জনগণ ইইউর সঙ্গে থাকা সমর্থন করে। অন্যদিকে মের ব্রেক্সিট ডিল সমর্থন করে ১৯ শতাংশ এবং সেটি বিরোধিতা করে দ্বিগুণের বেশি ৪২ শতাংশ মানুষ। ইইউ ছাড়ার এবং ইইউর সঙ্গে থাকতে আগ্রহী উভয়পক্ষ ব্রেক্সিট ডিল সম্পর্কে ধারণা প্রায় একইরকম। ৪৪ শতাংশ মনে করে মে ব্রাসেলসের সঙ্গে যা করেছেন তার চেয়ে ভাল ডিল তিনি করতে পারতেন।
×