ফিরোজ মান্না ॥ মালয়েশিয়ায় আবার গ্রেফতার আভিযান শুরু হয়েছে। শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ অবৈধ ৬৫ বাংলাদেশী কর্মীকে আটক করেছে। অভিযানের ভয়ে অনেকে গা ঢাকা দিয়েছে। কেউ কেউ জঙ্গলে রাত কাটাচ্ছে। আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে মালয়েশিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন। দেশটির কর্তৃপক্ষ বলছে, আটককৃতদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
বর্তমানে দেশটিতে বাংলাদেশী কর্মী নিয়োগ স্থগিত করা হয়েছে। তবে অন্য ‘সোর্স কান্ট্রি’ থেকে কর্মী নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। দুই দফা যৌথ ‘ওয়ার্কিং কমিটির’ বৈঠক হলেও এখন পর্যন্ত কোন সুরাহা হয়নি। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বলছে, আলোচনার মাধ্যমে অচিরেই এ সমস্যা সমাধান করা হবে। মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগের মহাপরিচালক দাতুকে সেরি মোস্তাফার আলীর বরাদ দিয়ে দেশটির সংবাদ মাধ্যমে অবৈধ কর্মী আটকের খবর দিয়েছে। কোন অবৈধ অভিবাসীকে দেশটিতে স্থান দেয়া হবে না। অভিবাসন খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে অভিযান অনির্দিষ্টকাল চলবে। অবৈধ অভিবাসী আটকের সংখ্যা বেশি। ইন্দোনেশিয়ার পরই বাংলাদেশের অবস্থান। ইমিগ্রেশন বিভাগ দেশটিতে বসবাসরত অবৈধ অভিবাসীদের ধরতে গত ১ জুলাই থেকে অভিযান চালাচ্ছে। অভিযানের অংশ হিসেবে গত শনিবার ৬৫ বাংলাদেশী কর্মীকে আটক করা হয়েছে। নতুন আটকসহ বাংলাদেশের চার হাজারের বেশি কর্মী আটক করেছে দেশটির পুলিশ। আটক কর্মীর বড় একটি অংশ বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়েছে ওই দেশটির কর্তৃপক্ষ। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ২০১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয় অবৈধ অভিবাসীদের বৈধকরণ প্রক্রিয়া। এরপর ১৬ সালের ১৫ আগস্ট নিবন্ধনের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়। পরবর্তীতে মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি থেকে সর্বশেষ সময় বাড়িয়ে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত করা হয়। এই সময় শেষ হওয়ার পরই দেশটির কর্তৃপক্ষ আটক অভিযান শুরু করে। এই কর্মসূচীর আওতায় অনেক অবৈধ কর্মী বৈধ হয়েছেন। যারা এ সুযোগ নিতে পারেননি তারা আর দেশটিতে বসবাস করতে পারবেন না। তাদের দেশে ফিরতেই হবে। কারণ অবৈধ কোন কর্মীকে মালয়েশিয়ার কোন কোম্পানি নিয়োগ দিতে পারবে না। যদি কোন মালিক অবৈধ কর্মীদের নিয়োগ দেন তাহলে ওই মালিককেও শাস্তি পেতে হবে। ফলে কোন মালিকই এমন ঝুঁকি নেবে না। বর্তমানে বৈধকরণ প্রক্রিয়ার সুযোগ না থাকায় গোটা মালয়েশিয়ায় এক যোগে অভিযান চালানো হচ্ছে। দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ ঘোষণা করেছে, অবৈধ অভিবাসীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত থাকবে। যেসব মালিকরা অবৈধ অভিবাসীদের নিয়োগ দিয়েছেন বা পুনঃনিবন্ধন করায়নি তাদেরও গ্রেফতার করা হবে। দেশে অবৈধ অভিবাসীর স্রোত ঠেকাতে এই পদক্ষেপ নেয়া হযেছে। এর আগে ১৯ হাজার ৯৭৯ বিদেশী অভিবাসীকে আটক করে বিচারের মুখোমুখি করা হয়। এরমধ্যে ৫৩৬ মালিকের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আটক হওয়া অভিবাসীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ইন্দোনেশিয়ার।
