ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জলদস্যুদের সঙ্গে আঁতাত করে জিরো থেকে হিরো জাহাঙ্গীর

প্রকাশিত: ০৬:৫২, ৯ ডিসেম্বর ২০১৮

জলদস্যুদের সঙ্গে আঁতাত করে জিরো থেকে হিরো জাহাঙ্গীর

নিজস্ব সংবাদদাতা বাঁশখালী, ৮ ডিসেম্বর ॥ বঙ্গোপসাগরে জীবিকা নির্বাহের তাগিদে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার শেখেরখীল ইউনিয়নের শতাধিক ফিশিং বোট মৎস্য আহরণ করে থাকে। সেই ফিশিং বোটগুলোতে সহস্রাধিক জেলে চাকরি করে তাদের সংসার চালায়। সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের হস্তক্ষেপে সাগরের সুন্দরবন এলাকাসহ বিভিন্ন পয়েন্ট জলদস্যুমুক্ত হওয়ায় অনেকটা স্বস্তিতে মৎস্য আহরণ চালিয়ে যাচ্ছে জেলেরা। তবে বঙ্গোপসাগরের বাঁশখালী-কুতুবদিয়া চ্যানেল এখনও জলদস্যুদের দখলে রয়েছে। ওই এলাকায় প্রতিনিয়ত ফিশিং বোটে ডাকাতিসহ জানমালের ক্ষতি সাধন করে আসছে জলদস্যু দল। গত শনিবার ওই এলাকায় বাঁশখালীর শেখেরখীল ইউপির ফাঁড়ির মুখ এলাকার ৪টি ফিশিং বোট জলদস্যুদের কবলে পড়ে অপহরণের শিকার হয়। অপহরণের পর জলদস্যু দল ফিশিং বোটগুলো হতে মাছ ও বিভিন্ন সরঞ্জমাদি লুট করে মুক্তিপণের বিনিময়ে বোটগুলো মালিকদের কাছে পৌঁছে দেয়। এবার এই অপহরণের শিকার ফিশিং বোটগুলোর জলদস্যুদের চোরাইকৃত মাছ খোদ একই এলাকার বদিউল আলমের পুত্র ফিশিং বোট মালিক জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে ক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার দুপুরে শেখেরখীল ফিশিং বোট মালিক সমিতি কার্যালয়ে এ বিষয়ে সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সালিশ বৈঠকে বিচারের লক্ষ্যে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীরসহ ক্ষতিগ্রস্ত বোট মালিকগণকেও নগদ অর্থ জমাদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তবে ২০১১ সালের ৩১ জেলে হত্যার সঙ্গে ও জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল এই মৎস্য ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে। তাছাড়া প্রতিনিয়ত জলদস্যুদের সঙ্গে আঁতাত রেখে স্থানীয় ফিশিং বোট মালিকগণকে নিঃস্ব করারও পরিকল্পনা ছিল এই জাহাঙ্গীরের। তারই ধারাবাহিকতায় বাঁশখালী-কুতুবদিয়া চ্যানেলের জলদস্যু বাহিনীর সঙ্গে আঁতাত করে দিনে দিনে বোটের মাঝি থেকে বনে গেছেন কোটিপতি। থানা, প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে এই ফিশিং বোটের মালিক জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকলেও অদৃশ কারণে সে ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। জলদস্যুদের কাছ থেকে মাছ ক্রয়ের বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করে শেখেরখীল ফিশিং বোট মালিক সমিতির মোঃ এয়ার আলী বলেন, দীর্ঘদিন থেকে জলদস্যুদের সঙ্গে জাহাঙ্গীরের আঁতাতের অভিযোগ মৌখিকভাবে ফিশিং বোট মালিকগণ করলেও এবার লিখিত অভিযোগ এনেছেন অপহরণের শিকার স্থানীয় ফিশিং বোট মালিক মোঃ হানিফ মাঝি, মৌলবি আবদুল খালেক ও জাগের হোসেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সালিশ বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
×