ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চার মাসে সঞ্চয়পত্র থেকে নীট ঋণ ১৭,৮২৯ কোটি টাকা

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ৯ ডিসেম্বর ২০১৮

চার মাসে সঞ্চয়পত্র থেকে নীট ঋণ ১৭,৮২৯ কোটি টাকা

অর্থনৈতিক রিপোটার ॥ বেড়েই চলছে জাতীয় সঞ্চয়পত্র বিক্রি। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) সঞ্চয়পত্র থেকে নীট ঋণ এসেছে ১৭ হাজার ৮২৯ কোটি টাকা, যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৬৮ শতাংশ। জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংক আমানতের সুদের চেয়ে দ্বিগুণ মুনাফা মিলছে সঞ্চয়পত্রে। অন্যদিকে ব্যবসা-বাণিজ্য ও শেয়ারবাজারে চলছে মন্দাভাব। তাই সঞ্চয়পত্রে ঝুঁকছেন বিনিয়োগকারীরা। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সরকার চলতি (২০১৮-১৯) অর্থবছরের ১২ মাসে সঞ্চয়পত্র থেকে ২৬ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরেছিল। এর মধ্যে জুলাই-অক্টোবর সময়ে ঋণ এসেছে ১৭ হাজার ৮২৯ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৫১৪ কোটি টাকা বেশি। গত ২০১৭-১৮ অর্থবছর ৩০ হাজার ১৫০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সে বছরের অক্টোবর পর্যন্ত বিক্রি হয় ১৭ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত কয়েক বছর ধরেই সরকার ঘাটতি বাজেট অর্থায়নে সঞ্চয়পত্রের ওপর বেশি জোর দিচ্ছে। গত অর্থবছর সঞ্চয়পত্র থেকে মোট ৪৬ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা নেয় সরকার। এর আগের অর্থবছরে এ খাত থেকে সরকার ঋণ নেয় ৫২ হাজার ৪১৭ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে গত অক্টোবর পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের মোট ঋণ দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ৫৫ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা। এদিকে সঞ্চয়পত্রে জনসাধারণের বিনিয়োগ বেড়ে যাওয়ার ফলে মুদ্রা বাজারে এক ধরনের ভারসাম্যহীনতা দেখা দিয়েছে বলে মনে করে মুদ্রাবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। সংস্থাটির মতে, সুদহার বেশি হওয়ায় সরকারের অভ্যন্তরীণ ঋণের বড় অংশই আসছে এ খাত থেকে। এতে বাজারে সুদহার কমানো যেমন সহজ হচ্ছে না, তেমনি সরকারের বেশি সুদবাহী দায় বাড়ছে। অন্যদিকে বন্ড মার্কেট উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি ব্যাংকগুলোতে অতিরিক্ত তারল্য জমছে, যা সামলাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিল বিক্রি করে বাজার থেকে টাকা তুলে নিচ্ছে। এতে পরিচালন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় সঞ্চয়পত্রের সুদহার যৌক্তিকীকরণে সরকার উদ্যোগ নিতে পারে। সঞ্চয়পত্রে সুদের হার পুনর্র্নিধারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরামর্শ ও ব্যাংক পরিচালকসহ বিভিন্ন মহলের চাপ থাকা সত্ত্বেও নির্বাচনের আগে বহুল আলোচিত সঞ্চয়পত্রের সুদহার না কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এর আগে সর্বশেষ ২০১৫ সালের ১০ মে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের সুদহার গড়ে দুই শতাংশ কমানো হয়েছিল। বর্তমানে পরিবার সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ। পাঁচ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ১১ দশমিক শূন্য চার শতাংশ, পেনশনার সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। ২০১৫ সালের ২৩ মে’র পর থেকে এই হার কার্যকর আছে। এর আগে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ছিল ১৩ শতাংশেরও বেশি।
×