ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাংলা একাডেমির বার্ষিক সভায় জমজমাট মিলনমেলা

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ৯ ডিসেম্বর ২০১৮

বাংলা একাডেমির বার্ষিক সভায় জমজমাট মিলনমেলা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বার্ষিক সাধারণ সভা হলেও আয়োজনে ছিল প্রাণের ছোঁয়া। বক্তৃতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলেছে জমজমাট গল্পগুজব। হেমন্তের হালকা হিমেল সকালে একে একে জড়ো হন বিশিষ্টজনরা। দীর্ঘদিন পর একে অপরের দেখা হওয়ায় গল্পগুজবে মেতে উঠেন মুহূর্তেই। নবীন প্রবীণ নানা শ্রেণীর মানুষের সংযোগ ঘটে এ মিলনমেলায়। এভাবেই সবার প্রাণের সম্মিলনে শনিবার দিনভর চলল বাংলা একাডেমির সাধারণ পরিষদের ৪১তম বার্ষিক সভা। এতে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সাত বিশিষ্টজনকে দেয়া হয় সম্মানসূচক ফেলোশিপ এবং বাংলা একাডেমি পরিচালিত চারটি সাহিত্য পুরস্কার। শিল্পী তপন মাহমুদের পরিচালনায় সঙ্গীত সংগঠন বৈতালিকের শিল্পীদের সম্মেলক কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে বার্ষিক সভা শুরু হয়। এরপর দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রয়াত গুণী ব্যক্তিদের স্মরণে শোকপ্রস্তাব পাঠ ও তাদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সভায় বাংলা একাডেমির ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ও সচিব মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ২০১৭-১৮ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন এবং ২০১৮-১৯ সালের বাজেট অবহিত করেন। সেই সঙ্গে ২০১৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর ৪০তম বার্ষিক সাধারণ সভার কার্যবিবরণী সারাদেশ থেকে আগত একাডেমির ফেলো, জীবনসদস্য- সদস্যদের সম্মতিক্রমে অনুমোদন ঘোষণা করেন বার্ষিক সাধারণ সভার সভাপতি এবং একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। আনিসুজ্জামান বলেন, বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠার পর থেকে তার সামর্থ্য অনুযায়ী বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষণায় কাজ করে যাচ্ছে। এই প্রতিষ্ঠান ঘিরে মানুষের প্রত্যাশা বিপুল। আজকের সাধারণ সভায়ও একাডেমির সদস্যবৃন্দ নানা মতামত ও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। সকালের পর্ব শেষে বিকেলের পর্বে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সাত বিশিষ্ট ব্যক্তিকে বাংলা একাডেমি সম্মানসূচক ফেলোশিপ দেয়া হয়। ফেলোশিপপ্রাপ্তরা হলেন অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম (শিক্ষা ও গবেষণা), শিল্পী মনিরুল ইসলাম (চারুকলা), মঞ্জুলিকা চাকমা (কারুশিল্প), এস এম মহসীন (নাট্যকলা), ডাঃ সামন্তলাল সেন (চিকিৎসাসেবা), শিল্পী রওশন আরা মুস্তাফিজ (সঙ্গীত) এবং পলান সরকার (বইবান্ধব সমাজ প্রতিষ্ঠায়)। অসুস্থ থাকায় পলান সরকারের পক্ষে ফেলোশিপ গ্রহণ করেন তার জ্যেষ্ঠ সন্তান হায়দার আলী। অনুষ্ঠানে সাহিত্যিক মোহাম্মদ বরকতুল্লাহ প্রবন্ধ সাহিত্য পুরস্কার, মযহারুল ইসলাম কবিতা পুরস্কার, কবীর চৌধুরী শিশু সাহিত্য পুরস্কার ও সা’দত আলি আখন্দ সাহিত্য পুরস্কার দেয়া হয় যথাক্রমে ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, মুহম্মদ নূরুল হুদা, অধ্যাপক হায়াৎ মামুদ এবং আবিদ আজাদ (মরণোত্তর)। প্রয়াত কবি আবিদ আজাদের পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন তার জ্যেষ্ঠ সন্তান তাইমুর রশীদ। প্রথম তিন পুরস্কারের অর্থমূল্য এক লাখ টাকা এবং শেষ পুরস্কারের অর্থমূল্য পঞ্চাশ হাজার টাকা। সাধারণ সভার কার্যক্রম সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির পরিচালক ডাঃ কে এম মুজাহিদুল ইসলাম ও উপপরিচালক ড. শাহাদাৎ হোসেন।
×