ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

পল এমিলের হ্যাটট্রিকে গ্রুপসেরা আরামবাগ

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ৮ ডিসেম্বর ২০১৮

পল এমিলের হ্যাটট্রিকে গ্রুপসেরা আরামবাগ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বয়স তার ৩১। উচ্চতা কাঁটায় কাঁটায় ঠিক ৬ ফুট। ক্যামেরুনের নাগরিক। ক্যামেরুনের সিনিয়র জাতীয় দলে না খেললেও খেলেছেন অনুর্ধ-১৭ এবং অনুর্ধ-২০ দলে। ২০১৫ মৌসুমে শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের হয়ে খেলে গিয়েছিলেন তিনি। সেবার রাসেলকে কোন শিরোপা জেতাতে পারেননি এই ফরোয়ার্ড। এবার নাম লিখিয়েছেন আরামবাগ ক্রীড়া সংঘে। প্রিমিয়ার লীগ শুরুর আগে আরামবাগকে জেতাতে চান স্বাধীনতা কাপ ফুটবলের শিরোপা। ইতোমধ্যেই ‘রাইজিং স্ট্রেংথ’ খ্যাত আরামবাগ পেঁৗঁছে গেছে কোয়ার্টার ফাইনালে (এই আসরের বর্তমান শিরোপাধারী তারাই)। আর সেটা সম্ভব হয়েছে ক্যামেরুনের বিয়াগা পল এমিলের উদ্ভাসিত হ্যাটট্রিক নৈপুণ্যেই। শুক্রবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ‘এ’ গ্রুপের তৃতীয় ও শেষ খেলায় আরামবাগ ৩-১ গোলে হারায় সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবকে। খেলার প্রথমার্ধে বিজয়ী দল এগিয়েছিল ১-০ গোলে। ২ খেলায় ২ জয়ে সর্বোচ্চ ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হলো আরামবাগ। নিজেদের প্রথম ম্যাচে টিম বিজেএমসিকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল তারা। পক্ষান্তরে সমান খেলায় ১ জয় ও ১ হারে ৩ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হলো সাইফ। নিজেদের প্রথম ম্যাচে তারা ১-০ গোলে হারিয়েছিল ‘সোনালি আঁশের দল’ খ্যাত বিজেএমসিকে। দুই ম্যাচেই হেরে এর আগেই বিদায়ঘণ্টা বেজে গিয়েছিল বিজেএমসির। ‘সি’ গ্রুপের রানার্সআপ দলের সঙ্গে (ঢাকা আবাহনী/ব্রাদার্স/মুক্তিযোদ্ধা) আগামী ১১ ডিসেম্বর প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে খেলবে আরামবাগ। সাইফ-আরামবাগ উভয় দল আগেই নিশ্চিত করে ফেলেছিল কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা। বাকি ছিল গ্রুপসেরা নির্ধারণ হওয়ার বিষয়টিই। শুক্রবার সেটাও নির্ধারিত হয়ে গেল। ম্যাচের ৩ মিনিটে সাইফের রাশিয়ান ফরোয়ার্ড ড্যানিশ বলশাভকের শট ধরে ফেলেন আরামবাগের গোলরক্ষক মাজহারুল ইসলাম হিমেল। ৯ মিনিটে বাঁপ্রান্ত থেকে সতীর্থের পাসে বক্সে বল পেয়ে হেড নেন নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড চিনেদু ম্যাথিউ। কিন্তু বল বিপদমুক্ত করেন সাইফ গোলরক্ষক জিয়াউর রহমান জিয়া। ২৭ মিনিটে আরামবাগের একটি আক্রমণ প্রতিহত করতে যান সাইফের ডিফেন্ডার। কিন্তু বল চলে যায় আরামবাগের ডিফেন্ডার রকির পায়ে। ডান পায়ে দারুণ শট নেন রকি। কিন্তু পা দিয়ে বল সরিয়ে দিয়ে আরামবাগকে আবারও গোলবঞ্চিত করেন জিয়া। ৩৪ মিনিটে বাঁপ্রান্ত দিয়ে সাইফের কোরিয়ান ফরোয়ার্ড সেগুনগিল পার্কের পোস্ট লক্ষ্য করে নেয়া শটটি ধরেন হিমেল। প্রথমার্ধের অন্তিম মুহূর্তে বাঁ পায়ের উঁচু সেন্টার বক্সে পান পল এমিল। তাকে বাধা দিতে গিয়েও ব্যর্থ হন প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডার রিয়াদুল হাসান রাফি। রাফিকে কাটিয়ে ডান পায়ের ভলিতে সাইফের জাল কাঁপান এমিল (১-০)। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই ম্যাচে ফিরতে মরিয়া সাইফ আক্রমণের পসরা সাজায়। ৫২ মিনিটে ডানপ্রান্ত দিয়ে সাইফের কোরিয়ান ফরোয়ার্ড পার্ক পোস্ট লক্ষ্য করে যে শটটি নেন তা অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। পরের মিনিটেই তাদের আরও একটি আক্রমণ নস্যাৎ হয় আরামবাগের গোলপোস্টে। ৫৭ মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে জাফর ইকবালের শট গ্রিপে নেন আরামবাগ গোলরক্ষক। ৬২ মিনিটে আরামবাগের গোলটি ছিল ফরোয়ার্ড আরিফুর রহমানের উপহার। বাঁপ্রান্তে বক্সে পোস্টের খুব কাছে বল পেয়ে নিজেই গোলের জন্য শট নিতে পারতেন। কিন্তু সেটি না করে সতীর্থ এমিলের উদ্দেশে বাড়িয়ে দেন আরিফ। ফাইনাল টাচ দিয়ে নিজের এবং দলের দ্বিতীয় গোলটি করেন এমিল। ৬৮ মিনিটে এক গোল শোধ করে সাইফ। বাঁপ্রান্ত থেকে আরিফুলের শট বক্সে হেড করে ক্লিয়ার করতে গিয়েও বলের নাগাল পাননি আরামবাগের ডিফেন্ডার। বল পেয়ে যান সাইফের অধিনায়ক-ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার জামাল ভুঁইয়া। লাফিয়ে উঠে দারুণ এক শটে আরামবাগের জালে বল পাঠান জামাল। ৮১ মিনিটে তৃতীয় গোল করে জয় নিশ্চিত করে আরামবাগ। বাঁপ্রান্ত দিয়ে ম্যাথিউর বাড়িয়ে দেয়া বল ছোট করে বাড়িয়ে দেন এমিলকে। বক্সের ভেতর থেকে ডান পায়ের চমৎকার শটে নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন পল। এই আসরে এটাই কোন খেলোয়াড়ের করা প্রথম হ্যাটট্রিক।
×