ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নিউজিল্যান্ডের ‘পাকিস্তান’ জয়

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ৮ ডিসেম্বর ২০১৮

  নিউজিল্যান্ডের ‘পাকিস্তান’ জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পাকিস্তান কেন আনপ্রেডিক্টেবল, সেটি আরও একবার দেখল ক্রিকেটবিশ্ব। প্রায় জয়ের পথে থাকা প্রথম টেস্টে নাটকীয়ভাবে ৪ রানে হেরে গিয়েছিল সরফরাজ আহমেদের দল। দুবাইয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর ম্যাচে আবার প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দিয়েছিল ইনিংস ও ১৬ রানে। আবুধাবিতে এবার প্রথম ইনিংসে লিড পেয়েও হার ১২৩ রানে। কিউইদের উপহার দিল মনে রাখার মতো এক সাফল্য। দীর্ঘ ৪৯ বছরে এই প্রথম নিজ দেশের বাইরে (এ্যাওয়ে) পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ (২-১) জিতল নিউজিল্যান্ড। ম্যাচে তাদের সংগ্রহ ২৭৪ ও ৩৫৩/৭ (ডিক্লেঃ)। আর প্রথম ইনিংসে ৩৪৮ রান করা পাকিস্তান দ্বিতীয় ইনিংসে ২৮০ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শুক্রবার শেষ দিনে অলআউট মাত্র ১৫৬ রানে। চমৎকার ব্যাটিংশৈলী উপহার দিয়ে ম্যাচসেরা ব্ল্যাক-ক্যাপস অধিনায়ক উইলিয়ামসন (৮৯, ১৩৯)। সিরিজসেরা পাকিস্তান স্পিনার ইয়াসির শাহ। পাকিস্তানের বিপক্ষে কিউইরা সর্বশেষ এ্যাওয়ে টেস্ট সিরিজ জিতেছিল সেই ১৯৬৯ সালে। এরপর থেকেই কেবলই অপেক্ষার পালা। অবশেষে সেই অপেক্ষাটা শেষ হলো নাটকীয় পথে। প্রথম ইনিংসে ৭৪ রানে পিছিয়ে থাকা নিউজিল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে ৭ উইকেটে ৩৫৩ রান করে। চতুর্থ ইনিংসে পাকিস্তানের জন্য লক্ষ্য নির্ধারিত হয় ২৮০। শুক্রবার সকালে যখন কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ইনিংস ঘোষণা করেন দিনের খেলা তখন ৭৮ ওভার বাকি। জয় না হোক ৭৮ ওভার কাটিয়ে দিতে পারলেই টেস্টটা ড্র করতে পারত পাকিস্তান। সেক্ষেত্রে বেঁচে যেত সিরিজটাও। কিন্তু ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানী ব্যাটসম্যানরা উইকেটে টিকতে পারলেন মাত্র ৫৬.১ ওভার। তাতে মাত্র ১৫৬ রান সংগ্রহ করে হার মানল ১২৩ রানে। এক পর্যায়ে ৫৫ রানেই হারিয়ে ফেলে ৫ উইকেট। পাকিস্তানের পরাজয় মূলত নিশ্চিত হয়ে যায় তখনই। টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার মিছিলের পর শেষের দিকের ব্যাটসম্যানদের সাধ্য কি টেস্ট বাঁচিয়ে দেয়ার। বিলাল আসিফ, ইয়াসির শাহ, হাসান আলি, শাহীন শাহ আফ্রিদিরা তা পারেনওনি। উল্টো টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তারাও প্যাভিলিয়নে ফিরে গেছেন দ্রুত। মাঝে বাবর আজম ও অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ একটু লড়াকু চেতনা না দেখালে পাকিস্তানের নামে হারটা আরও দ্রুতই লেখা হতো। একটু আগে হোক বা পরে, চেষ্টা করলেও বাবর আজম, সরফরাজ দলের হার ঠেকাতে পারেননি। ফলে তাদের ৪৩ রানের জুটির ওই চেষ্টাটুকু বিফলেই গেছে। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫১ রান করেছেন বাবর। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৮ রান করেছেন সরফরাজ। এছাড়া দুই অঙ্ক ছুঁয়েছেন আর মাত্র দু’জন। ওপেনার ইমাম-উল-হক ২২ ও বিলাল আসিফ করেছেন ১২ রান। বাকি সবার স্কোর দেখে টেলিফোন ডিজিট বলে ভ্রম হবে। লজ্জার এ হারের মধ্য দিয়ে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেন মোহাম্মদ হাফিজ। তবে ওয়ানডে ও টি২০ খেলবেন অভিজ্ঞ পাকিস্তানী অলরাউন্ডার। স্কোর ॥ নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস ॥ ২৭৪/১০ (১১৬.১ ওভার; রাভাল ৪৫, লাথাম ৪, উইলিয়ামসন ৮৯, টেইলর ০, নিকোলস ১, ওয়াটলিং ৭৭*, গ্র্যান্ডহোম ২০, সাউদি ২, সমারভিল ১২, আইজাজ ৬, বোল্ট ১ ; হাসান আলি ১/৫৮, আফ্রিদি ১/৫২, ইয়াসির ৩/৭৫, বিলাল আসিফ ৫/৬২) ও দ্বিতীয় ইনিংস ॥ ৩৫৩/৭ ডিক্লেঃ (১১৩ ওভার; লাথাম ১০, উইলিয়ামসন ১৩৯, টেইলর ২২, নিকোলস ১২৬*, গ্রান্ডহোম ২৬, সাউদি ১৫; ইয়াসির ৪/১২৯, আফ্রিদি ২/৮৫)। পাকিস্তান প্রথম ইনিংস ॥ ৩৪৮/১০ (১৩৫ ওভার; আজহার ১৩৪, আসাদ ১০৪, হারিস ৩৪; সমারভিল ৪/৭৫, বোল্ট ২/৬৬) ও দ্বিতীয় ইনিংস ১৫৬/১০ (৫৬.১ ওভার; ইমাম ২২, হাফিজ ৮, আজহার ৫, হারিস ৯, শফিক ০, বাবর ৫১, সরফরাজ ২৮, বিলাল ১২, ইয়াসির ৪; সাউদি ৩/৪২, আইজাজ ৩/৪২, সমারভিল ৩/৫২)। ফল ॥ নিউজিল্যান্ড ১২৩ রানে জয়ী ॥ ম্যাচসেরা ॥ উইলিয়ামসন (নিউজিল্যান্ড)। সিরিজ ॥ তিন টেস্টে নিউজিল্যান্ড ২-১এ জয়ী। সিরিজসেরা ॥ ইয়াসির শাহ (পাকিস্তান)।
×