ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ভাসানটেকের বাসা থেকে স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ৮ ডিসেম্বর ২০১৮

  ভাসানটেকের বাসা থেকে স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর ভাসানটেকে একটি বাসা থেকে স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার হয়েছে। পল্লবীতে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পুলিশ ভাসানটেক দেওয়ান পাড়ার দ্বিতীয় তলা মসজিদের পাশে একটি বাড়ি থেকে রিক্সাচালক মোঃ রাশেদ (২৬) ও তার স্ত্রী মালা বেগমের (২০) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। পরে তাদের লাশের ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। নিহত রাশেদের বাবার নাম সিদ্দিক মিয়া। গ্রামের বাড়ি ভোলা সদর উপজেলায়। তার স্ত্রী মালার বাবার নাম শাজাহান পাটোয়ারী। গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর মতলব জয়পুর উপজেলায়। ভাসানটেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বির আহমেদ জানান, ছয়দিন আগে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে তারা দেওয়ানপাড়া এলাকার ওই ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জের ধরে রাশেদ তার স্ত্রী মালাকে হত্যা করে। পরে নিজে আত্মহত্যা করেছে। তবে এখনও নিশ্চিত নয়। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে আসল ঘটনা জানা যাবে। এদিকে একই সময় রাজধানীর পল্লবী থানাধীন মিরপুর-৬ সেকশনের সি-ব্লকের ৯ নম্বর সড়কের ৫/৬ বাসা থেকে জান্নাতুল ফেরদৌস বৈশাখী (২৫) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবার অভিযোগ করেন, জান্নাতুল ফেরদৌসকে নির্যাতনের পর শ্বাসরোধ হত্যা করে তার লাশ ঝুলিয়ে রেখেছে তার স্বামী। নিহতের স্বামী মেহেদি হাসানের দাবি, গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তার স্ত্রী। নিহতের পরিবারের দাবি, স্বামী প্রায় মারধর করতেন বৈশাখীকে। বৃহস্পতিবার রাতে গৃহবধূর আত্মীয়-স্বজনদের খবরে ওই বাসা থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা ওই বৈশাখীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের পরিবার জানায়, জান্নাতুল ফেরদৌস বৈশাখী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১০/১১ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। রসায়ন বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করেছেন। আর স্বামী মেহেদি হাসান রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা শেষ করে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি আইডিএলসি’তে চাকরি করছেন। তাদের দুজনেরই বাড়ি রাজশাহীর বাঘার পানি কামড়া এলাকায়। নিহতের দুলাভাই মাসুদ করিম রানা বলেন, বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন কারণে নিজেদের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল। পান থেকে চুন খসার মতো কিছু ঘটলেই স্বামী মেহেদি মারধর করত বৈশাখীকে। তিনি বলেন, গতকাল (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যার আগেই আশুলিয়ার অফিস থেকে মিরপুরের ভাড়া বাসায় ফিরেছি। স্ত্রী বলছিলেন, বৈশাখীর মোবাইল ফোন নম্বরে কল দিলেও ধরছে না, মেহেদিও ধরছে না। পরে বৈশাখীর স্বামীর বড় ভাইকে কল দিয়ে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনিই জানান বৈশাখী মারা গেছে। এরপর ছুটে যাই সেখানে। মেহেদি আমাদের সঙ্গে কথা বলতে চাইছে না। বৈশাখীর ভাই সৌরভ জানান, এটা আত্মহত্যা নয় বৈশাখীকে মার্ডার করা হয়েছে। ওর শরীরে আমি মারধরের দাগ দেখেছি। পুলিশ সুষ্ঠু তদন্ত করলে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে। আমরা পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করছি। পল্লবী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, ওই একটি বাসা থেকে ফাঁস লাগানো অবস্থায় বৈশাখী নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
×