ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সামনে নবায়নযোগ্য জ্বালানির চ্যালেঞ্জ

প্রকাশিত: ০৪:১৮, ৮ ডিসেম্বর ২০১৮

  দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার  সামনে নবায়নযোগ্য জ্বালানির চ্যালেঞ্জ

ডিসেম্বর ১২ প্যারিস চুক্তির তৃতীয় বার্ষিকী। বিশ্বে কার্বন নির্গমন হ্রাসে অনুঘটক হিসেবে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছে। তারপরও সকল পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সমস্যাটি আরও প্রকট হচ্ছে আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার বা ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির (আইইএ) এক সাম্প্রতিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে কার্বন নির্গমনে এক নতুন রেকর্ডের সৃষ্টি হবে। ২০১৭ সালে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবস্থা রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছাবার পর পরিসংখ্যানটি আরও বিস্ময়কর ও আশঙ্কাজনক হয়ে উঠেছে। চ্যানেল নিউজ এশিয়ান। কিভাবে এ বৈসাদৃশ্য ব্যাখ্যা করা যায়? বলতে হয়, বিশ্বের জনসংখ্যা প্রতিবছর প্রায় ৮ কোটি ৩০ লাখ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের এ গ্রহের বিপুল জনসংখ্যার জন্য নতুন নবায়নযোগ্য সুবিধা যথেষ্ট নয়। বায়ু ও সূর্যবিদ্যুত খাতে বিশাল অর্জন সাধিত হলেও জীবাশ্ম জ্বালানিতে তেমনটা দেখা যায় না। প্যারিস চুক্তিতে গ্রহণীয় উচ্চাভিলাষী রূপরেখা সত্ত্বেও আমরা এখনও জ্বালানি ব্যবহারে সে অবস্থায় যেতে পারিনি। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এ অবস্থার চেয়ে এতটা সত্য নয় কোথাও। এ অঞ্চলের আন্তঃসরকার বিষয়ক সংস্থা আশিয়ানভুক্ত সদস্য রাষ্ট্রগুলো জলবায়ু কাজের ওপর জাতীয় প্রতিশ্রুতি উপস্থাপন করলেও এবং বিশাল কর্মপরিকল্পনায় সম্মত হলেও তারা বর্তমানে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ফলপ্রসূভাবে ব্যবহারের জন্য এ বৈশ্বিক সংস্থার টেবিলে অত্যন্ত অপ্রীতিকর কথা বলে যাচ্ছে এবং বর্তমান প্রবণতায় আভাস পাওয়া যায় যে, এ গতি অন্য পথে চালিত করতে বেশ উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টার প্রয়োজন হবে। উদাহরণস্বরূপ থাইল্যান্ডের নতুন সরকারে নবায়নযোগ্য জ্বালানি সম্প্রসারণ দৃশ্যত থেমে গেছে এবং বিশ্বে মালয়েশিয়া একমাত্র দেশ যে দেশটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এর সোলার প্যানেলের বহর হ্রাস করেছে। এটা বিস্ময়কর বিষয় নয় যে, আইইএ প্রত্যাশা করবে কয়লা ২০৪০ সালের মধ্যে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার প্রাথমিক জ্বালানি উৎস হয়ে ওঠে। তথাপি অনেক উপায়ে ঐতিহ্যগত জ্বালানি উৎসগুলো পরিত্যাগের জন্য যে অনীহা রয়েছে তার কারণ সহজেই ব্যাখ্যা করা যায়। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার জনসংখ্যা ২০০০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মোট জনসংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় ৭০ কোটিতে। ২০৫০ সালের মধ্যে আরও ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হয়েছে। জনসংখ্যার এ বৃদ্ধির জন্য জ্বালানি খাতে ব্যাপক চাপ পড়বে এবং এ প্রবণতা অব্যাহত থাকবে। আইইএয়ের প্রত্যাশা, দক্ষিণ এশিয়ার জ্বালানি চাহিদা ২০৪০ সালের মধ্যে প্রায় দু-তৃতীয়াংশ বৃদ্ধি পাবে। এখানে উল্লেখ করতে হয় যে, জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে ঘটবে দ্রুত শহরায়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি। বায়ু ও সোলার প্রযুক্তির মূল্য নাটকীয়ভাবে পড়ে যেতে থাকলেও আশিয়ান অঞ্চলে কয়লার বিশাল সংরক্ষণের কারণে তা আকর্ষণীয় হয়ে থাকবে, যেমন দেখা যায় ইন্দোনেশিয়ায়।
×