ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়াই

দুই অধিকারকর্মীকে সম্মান জানাবে নোবেল কমিটি

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ৮ ডিসেম্বর ২০১৮

 দুই অধিকারকর্মীকে সম্মান জানাবে নোবেল কমিটি

যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়া কঙ্গোর ডাক্তার ডেনিস মুকওয়েজ (৬৩) ও ইরাকের ইয়াজিদী সম্প্রদায়ের নারী অধিকারকর্মী নাদিয়া মুরাদ (২৫) সোমবার নোবেল শান্তি পুরস্কার গ্রহণ করবেন। নাদিয়া ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গীদের কাছে বন্দী ছিলেন। খবর এএফপির। নাদিয়া ও ডেনিস এ বছর যৌথভাবে শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন। তারা অসলোতে সে পুরস্কার গ্রহণ করবেন। নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি অক্টোবরে তাদের নোবেল বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করেন। যুদ্ধের অস্ত্র ও সশস্ত্র সংঘাতে যৌন সহিংসতার ব্যবহার বন্ধ করার প্রচেষ্টা চালানোয় নাদিয়া ও ডেনিসকে এ পুরস্কার দেয়া হয়। ডেনিসকে ‘ডক্টর’ মিরাকেল হিসেবে ডাকা হয় তার সার্জারির দক্ষতার জন্য। তিনি ২০ বছর ধরে যুদ্ধবিধ্বস্ত ডিআর কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে নারীর ওপর ধর্ষণের ভয়াবহ ক্ষত ও তীব্র মানসিক আঘাত থেকে মুক্ত করতে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন। তিনি সংঘাতময় পরিস্থিতিতে যৌন সহিংসতা নিয়ে বিশ্বব্যাপী অভাবনীয় প্রতিক্রিয়া অর্জনের জন্য কঠোর লড়াই করে যাচ্ছেন। ২০১৬সালে তিনি বলেছিলেন, রাসায়নিক অস্ত্র, জৈবিক অস্ত্র ও পরমাণু অস্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের কঠোর অবস্থান নেয়ার সক্ষমতা রয়েছে। আজ আমাদের অবশ্যই যুদ্ধক্ষেত্রে অস্ত্র হিসেবে ধর্ষণের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত অবস্থান নিতে হবে। আইএসের অধীনে থাকা বন্দীদের ভয়াবহতা থেকে বাঁচার পর নাদিয়া ইয়াজিদী নারীদের অধিকারের জন্য অক্লান্ত প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। আইএস জঙ্গীরা ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল এলাকা দখল করে নিয়ে কুর্দিভাষী সম্প্রদায়কে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। ২০১৪সালে বন্দীদশায় নাদিয়াকে জোর করে বিয়ে দেয়া, মারধর ও গণধর্ষণ করা হয়। পরে তিনি ওই বন্দীদশা থেকে পালাতে সক্ষম হন। ডেনিস ও নাদিয়া উভয়েই তাদের নোবেল শান্তি পুরস্কার যৌন নিপীড়ন সহ্য করা নারীদের জন্য উৎসর্গ করেছেন। পাঁচ অক্টোবর নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণার পর নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান বিরিত রিইস-এ্যান্ডারসেন বলেন, ডেনিস মুকওয়েজ এমন একজন সাহায্যকারী যিনি তার জীবনকে ধর্ষণের শিকার নারীদের চিকিৎসায় নিবেদন করেছেন। অন্যদিকে নাদিয়া মুরাদ এমন একজন প্রত্যক্ষদর্শী যিনি নিজে ধর্ষিত হয়েছেন ও অন্যরা যারা নির্যাতিত হয়েছেন তাদের দুর্দশা সম্পর্কে সবাইকে বলেছেন। প্রত্যেকেই নিজ নিজ পথে যুদ্ধের সময় যৌন সহিংসতাকে অধিকতর দৃশ্যমানতা করতে সাহায্য করেছেন, যাতে অপরাধীদের তাদের কর্মের জন্য দায়ী করা যায়। ডিআর কঙ্গোর সাউথ কিভু এলাকায় ১৯৯৯সালে পানজি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত করে ডেনিস হাজার হাজার ধর্ষিতকে চিকিৎসা করে যাচ্ছেন। যাদের মধ্যে নারী, শিশু ও এমনকি কয়েক মাসের শিশুও রয়েছে। ২০১৪সালে আইএস জঙ্গীদের হামলা চলাকালে যেসব ইয়াজিদী নারী ও মেয়ে অপহৃত, ধর্ষিত ও বর্বরতার শিকার হয়েছেন তাদের মধ্যে নাদিয়া একজন। আইএসের আক্রমণের সময় বয়োজ্যেষ্ঠ নারী ও পুরুষদের শিরোচ্ছেদ করা হয়। যাকে জাতিসংঘ সম্ভাব্য গণহত্যা বলে বর্ণনা করেছে।
×