ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘ভয়ঙ্কর’ এক পুলিশ কর্মকর্তার কাহিনী

প্রকাশিত: ০৮:০৫, ৭ ডিসেম্বর ২০১৮

‘ভয়ঙ্কর’ এক পুলিশ কর্মকর্তার কাহিনী

দিনের বেলায় শত শত মানুষের সামনে কেনিয়ার এ পুলিশ কর্মকর্তা দু’জন সন্দেহভাজন অপরাধীকে গুলি করে হত্যা করছে। মোবাইল ফোনে ধারণ করা এ ভিডিও ভাইরাল হবার পর লাখ লাখ মানুষ সেটি দেখছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মাটিতে উপুর হয়ে শুয়ে থাকা এক ব্যক্তির পিঠের উপর পা দিয়ে চেপে ধরে আছে সাধারণ পোশাক পরা এক পুলিশ কর্মকর্তা। আরেকজন ব্যক্তি এসে একটি পিস্তল দিয়ে গেলে একের পর এক গুলি চালায় সে পুলিশ কর্মকর্তা। মৃত্যু নিশ্চয় করার জন্য যাওয়ার সময় আরও কয়েক রাউন্ড গুলি চালানো হয়। ২০১৭ সালের মার্চ মাসে এ ভিডিওটি ধারণ করা হয়। সাদা পোশাকে যে পুলিশ কর্মকর্তা একের পর এক গুলি চালিয়ে দু’জন সন্দেহভাজন অপরাধীকে হত্যা করেছে তার নাম আহমাদ রশিদ। কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির শহরতলির একটি এলাকায় অপরাধ নির্মূলের দায়িত্ব তার কাঁধে। মি. রশিদ বলেন, ‘আমাদের কিছু লক্ষ্য অর্জন করতে হবে। এখানে অপরাধীদের যত নেতা আছে তাদের পাকড়াও করতে হবে যাতে এ এলাকায় কোন অপরাধ না ঘটে। সেটা তাদের জীবিত রেখে হোক, আর মৃতই হোক। কাজটা করতেই হবে। এখানে কোন ছাড় দেয়া যাবে না।’ স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই মি. রশিদকে ভালবাসেন। নাইরোবির এক বাসিন্দা বলেন, ‘এ মানুষটি অপরাধীদের খুঁজে বের করে ধরছে এবং হত্যা করছে। সে কোন ঘুষ নেয় না।’ ‘আমরা তার জন্য মসজিদে বসে দোয়া করি। আল্লাহ তাদের মঙ্গল করুক। আমি তাদের শতভাগ সমর্থন করি। তারা আমাদের এখানে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছে,’ বলেন আরেকজন বাসিন্দা। তবে অনেকে মি. রশিদ এবং তার দলের নিন্দা করছে। কেনিয়ার হিউম্যান রাইটস কমিশনের জর্জ মোরারা মনে করেন, বুলেট এবং বন্দুক দিয়ে বিচার করা যায় না। যতক্ষণ পর্যন্ত একজন ব্যক্তির অপরাধ প্রমাণিত হবে না ততক্ষণ পর্যন্ত সে নির্দোষ। মি. মোরারার মতে, ‘সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা সংক্ষিপ্ত রাস্তা ব্যবহার করছি। কিন্তু আমি এটাকে খুব ভালভাবে দেখছি না। কারণ একটা সময় এ ধরনের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে পুরো আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ে।’ নাইরোবির রাস্তায় পুলিশের দ্বারা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে রাস্তায় মিছিল করেছে একদল মানুষ। এখানে যোগ দিয়েছিলেন লুসি, যার স্বামীকে পুলিশ কর্মকর্তা আহমেদ রশিদ গুলি করে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। স্বামীর কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন লুসি। মিস লুসি বলেন, ‘দুজন পুলিশ কর্মকর্তা একদিন বাড়িতে এসে আমার স্বামীকে বলল চলো। তারপর তাকে নিয়ে গেল। আমরা এখনও জানি না তার অপরাধ কী ছিল। আমার স্বামীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পর আমরা সন্তানের জন্ম হয়। তার বয়স এখন ১৫ মাস। জীবন অনেক কঠিন।
×