ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফিরেই তামিমের ব্যাটিং ঝড়

প্রকাশিত: ০৭:২৩, ৭ ডিসেম্বর ২০১৮

ফিরেই তামিমের ব্যাটিং ঝড়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রস্তুতি ম্যাচের ফল আসলে মূল ম্যাচে গিয়ে বিশেষ কোন প্রভাব বিস্তার করে না। তবে দিনশেষে এই ম্যাচের ফল থেকে যে আত্মবিশ্বাস মিলে, সেটি মূল ম্যাচে গিয়ে কাজে লাগে। টেস্ট সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তুলোধুনো করার পর রবিবার ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে বৃহস্পতিবার প্রস্তুতি ম্যাচ থেকেই যেমন আত্মবিশ্বাস কুড়িয়ে নিলো বাংলাদেশ। ফিরেই তামিম ইকবাল ঝড়ো ইনিংস উপহার দেন। ৭৩ বলে ১৩ চার ও ৪ ছক্কায় ১০৭ রানের ইনিংস খেলেন। তার এই অসাধারণ ব্যাটিং নৈপুণ্যের সঙ্গে সৌম্য সরকারের অপরাজিত ১০৩ রানে বিসিবি একাদশ ৫১ রানে জিতে, সহজ জয় পেয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বুঝিয়েও দিলো, বাংলাদেশকে হারানোর আশা করা এত সহজ নয়। আলো স্বল্পতায় খেলা থামে। ডিএল পদ্ধতিতে বিসিবি একাদশকে জয়ী ঘোষণা করা হয়। তা না হলেও, পুরো খেলা হলেও অনায়াসেই জিতত বিসিবি একাদশ। বিকেএসপিতে হয় বিসিবি একাদশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার প্রস্তুতি ম্যাচটি। টস জিতে আগে ব্যাটিং করে ওয়েস্ট ইন্ডিজতো আওয়াজ তুলে। হুঙ্কার দেয়। ৮ উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারে ৩৩১ রান করে। তাতে একটু শঙ্কাও জাগে। রুবেল হোসেন, মাশরাফি বিন মর্তুজা, নাজমুল ইসলাম অপু, সৌম্য সরকার, অনুর্ধ-১৯ দলের শাহিন আলম, মেহেদী হাসান রানার বোলিংয়ের সামনে পড়েও এত বিশাল রান করল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওপেনার সাই হোপ (৮১), রোসটন চেস (৬৫*), ফ্যাবিয়ান এ্যালেন (৪৮), কাইরেন পাওয়েল (৪৩), শিমরন হেটমায়ার (৩৩), ড্যারেন ব্রাভো (২৪) মিলে ঐক্যবদ্ধ নৈপুণ্য দেখান। সেখানে রুবেল, রানা, অপু ২ উইকেট করে নিলেও বাংলাদেশ বোলাররা আলো ছড়াতে পারেননি। তাতো ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর দেখেই বোঝা গেছে। তবে ব্যাটসম্যানরা ঠিকই নিজেদের মেলে ধরেছেন। আর তাতে করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে উড়িয়ে দেয়ার ধারা অব্যাহত রেখেছে বিসিবি একাদশের আদলে খেলা বাংলাদেশ দল। তামিম ও সৌম্যের ব্যাটিং নৈপুণ্যে ৬ উইকেট হারিয়ে ৪১ ওভারে ৩১৪ রান করে ফেলে বিসিবি একাদশ। হাতে থাকে ৯ ওভার ও ৪ উইকেট। রান দরকার থাকে ১৮। এমন সময় আলো স্বল্পতায় খেলা না থামলে সহজভাবেই জয় মিলত। প্রস্তুতি ম্যাচটিতে আসলে বিশেষ নজর ছিল মাশরাফি ও তামিমের দিকেই। দুইজনই যে দীর্ঘদিন দলে খেলার মধ্যে ছিলেন না। প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়েই আবার ফিরেছেন। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শেষ হয়েছে ২৬ অক্টোবর। এরপর থেকে জাতীয় দলের কোন ওয়ানডে খেলা না থাকায় মাশরাফি খেলতে পারেননি। তামিমতো ইনজুরি থেকে ফিট হয়ে না ওঠায় এতদিন খেলতেই পারেননি। এশিয়া কাপে ১৫ সেপ্টেম্বর প্রথম ম্যাচটি খেলেন তামিম। এরপর ইনজুরিতে পড়ায় আর এখন পর্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক কোন খেলাই খেলতে পারেননি। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে সিরিজেও তামিম ফিট হননি, তাই খেলতে পারেননি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজেও খেলতে পারেননি। এবার ওয়ানডে সিরিজ দিয়েই ফেরার আশা করছেন। তার আগে প্রস্তুতি ম্যাচটিতে নিজের অবস্থা বুঝতে নেমেছিলেন তামিম। দেখালেন ঝলকানি। ব্যাট হাতে ঝড়ো ইনিংস খেলেন। ৭০ বলেই সেঞ্চুরি করে ফেলেন এ ওপেনার। এরপর আর ৩ বল উইকেটে থাকতে পারেন। তবে যে ছন্দ দেখালেন, তাতে ওয়ানডে সিরিজে তামিমের কাছ থেকে একই ছন্দ মিললে হয়ে যায়। বল হাতে মাশরাফিও দেখান ঝলক। তিনি ৮ ওভার বল করে ১ মেডেনসহ ৩৭ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। কাঁধের ইনজুরিতে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের দল থেকে ছিটকে যাওয়া আরেক ওপেনার ইমরুল কায়েসের দিকেও নজর ছিল। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে তিন ওয়ানডের দুটিতেই সেঞ্চুরি ও একটিতে ৯০ রান করা ইমরুল প্রস্তুতি ম্যাচে ২৭ রান করেন। তবে ওপেনার সৌম্য সরকারও আলো ছড়ান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টে ফর্মে ছিলেন না। তবে জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি করা সৌম্য প্রস্তুতি ম্যাচে ৮৩ বলে ৭ চার ও ৬ ছক্কায় অপরাজিত ১০৩ রান করে মূল ম্যাচে খেলার দাবি জানিয়ে রাখলেন। রুবেল হোসেনকেও দেখার ছিল। রুবেল ১০ ওভার বল করে ৫৫ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন। একাদশে অনিয়মিত হয়ে আরিফুল হক ২১ রানের বেশি করতে পারেননি। মোহাম্মদ মিঠুনও (৫) নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। তবে যে খেলা হয়েছে, তাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ভালভাবেই বুঝে গেল দেশের মাটিতে ওয়ানডেতে কতটা শক্তিশালী দল বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসান, লিটন কুমার দাস, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহীম, মেহেদী হাসান মিরাজ, মুস্তাফিজুর রহমানতো প্রস্তুতি ম্যাচে খেলেনইনি। এ ক্রিকেটারদের ছাড়াই ওয়েস্ট ইন্ডিজ যেভাবে ভুগল, তাতে বাংলাদেশ যে ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে কতটা ভয়ঙ্কর দল হয়ে ধরা দেবে, তা বুঝতেই পারছে ক্যারিবিয়ানরা।
×