ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় নাট্যশালায় নৃত্য, গীত ও কবিতায় ‘ষড়ঋতুর পদাবলী’

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ৭ ডিসেম্বর ২০১৮

জাতীয় নাট্যশালায় নৃত্য, গীত ও কবিতায় ‘ষড়ঋতুর পদাবলী’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। ছয় ঋতুর এই দেশে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে আবির্ভূত হয় গ্রীষ্ম, বর্ষা, বসন্ত কিংবা শীত। প্রকৃতির রূপ মেনে প্রতিটি ঋতুই মেলে ধরে আপন সৌন্দর্য। শহরে এই ষড়ঋতুর সবটুকু সৌন্দর্য ধরা না পড়লেও গ্রামীণ বাংলায় আপন বৈশিষ্ট্য উজ্জ্বল প্রতিটি ঋতু। আর সেই রূপটিরই দেখা মিলল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় মিলনায়তন যেন হয়ে উঠে উঠল ষড়ঋতুর ক্যানভাস। নৃত্য-গীত আর কবিতায় উদ্ভাসিত হলো শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা থেকে বসন্ত। অনুষ্ঠিত হলো ‘ষড়ঋতুর পদাবলি’ শীর্ষক অনুষ্ঠান। শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত অনুষ্ঠানে সঙ্গীত, আবৃত্তি, নৃত্যের ছন্দে শিল্পীরা শৈল্পিকভাবে উপস্থাপন করলেন ষড়ঋতুর বৈচিত্র্যময়তা। অনুষ্ঠানের শুরু ছিল সংক্ষিপ্ত কথন। একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী বলেন, ষড়ঋতুর এই বাংলাদেশে ছড়িয়ে রয়েছে প্রকৃতির অনাবিল সৌন্দর্য। তবে এই কংক্রিটের শহর ঢাকায় দেখা মেলে না প্রকৃতির সেই রূপময়তা। নিসর্গের সেই সৌন্দর্যটুকু আমরা মেলে ধরার চেষ্টা করেছি এ আয়োজনের মাধ্যমে। মানুষে মানুষে সম্পর্কের সংযোগ ঘটবে এমন সাংস্কৃতিক আয়োজনের মাধ্যমে। বারো মাসে ১৩ পার্বণের বাংলাদেশে উৎসবমতাকে তুলে ধরতে চাই এ আয়োজনের মাধ্যমে। সংস্কৃতির আশ্রয়ে সম্পর্কে স্থাপন করতে চাই মানুষে মানুষে। গ্রীষ্মের বন্দনা দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান।। একাডেমির শিল্পীরা সম্মেলক কণ্ঠে গেয়ে শোনা ‘আজি নূতন রতনে ভূষণে যতনে’ গানটি। এর পর ‘দোলে নাগর দোলা দোলে ঘুরে ঘুরে’ গানের সুরে পরিববেশিত হয় সম্মেলক নৃত্য। আবিদা রহমান সেতু কণ্ঠে তুলে নেন নববর্ষ আবাহনের গান। গেয়ে শোনান ‘এক বৈশাখে দেখা হলো দুজনার’। মোনালীন আজাদের কণ্ঠে গীত হয় ‘প্রখর দারুন অতি দীর্ঘ দগ্ধ দিন’। গ্রীষ্মের বন্দনা শেষে বর্ষার গান। শারমিন আক্তার গেয়ে শোনান ‘অম্বরে মেঘ মৃদঙ্গ বাজে’ ও রাফি তালুকদার পরিবেশন করেন ‘মাছের গান’। এরপর ‘শাওন গগনে ঘোর ঘনঘটা’ গানের সঙ্গে সম্মেলক নৃত্য এবং সম্মেলক কণ্ঠে গীত হয় ‘মেঘের ডমরু ঘন বাজে’। সুচিত্রা রানী সূত্রধরের কণ্ঠে ‘চঞ্চলা হাওয়ারে’ গানটি শেষ হতেই দ্বৈত কণ্ঠে রোকসানা আক্তার রূপসা ও রাফি তালুকদার গেয়ে শোনান ‘দাওয়ায় করছে মেঘ’। ঋতুচক্রের পালাক্রমে আসে হেমন্তের পালা। শিল্পিত উচ্চারণে আবৃত্তি করা হয় জীবনানন্দ দাসের করা ‘আবার আসিব ফিরে’। এর পর ‘আয়রে ও আয়রে’ গানের সঙ্গে সম্মেলক নৃত্য এবং সম্মেলক কণ্ঠে ‘আমার মাইঝা ভাই সাইঝা ভাই’ গান। হীরক রাজার কণ্ঠে ‘কার্তিক অগ্রহায়ণ মাসে কোকিল ডাকে গাছে গাছে’ গীত হওয়ার মধ্য দিয়ে শেষ হয় হেমন্তের বন্দনা। শীতের বন্দনাপর্বের শুরুতেই সম্মেলক কণ্ঠে গান ‘পৌষ এলো গো, পৌষ এলো গো’। ‘এ কি মায়া লুটাও কায়া জীর্ণ শীতের মাঝে’ গানের সঙ্গে ছিল নৃত্য। হিমাদ্রী রায় গেয়ে শোনালেন ‘পৌষের কাছাকাছি রোদ মাখা সেই দিন’ গানটি। সবশেষে ঋতুরাজ বসন্তের বন্দনা। এ পর্বের শুরুতেই সোহানুর রহমান গেয়ে শোনালেন ‘যেখানে সীমান্ত তোমার সেখানে বসন্ত আমার’।
×