ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শেরপুর হানাদার মুক্ত দিবস আজ

প্রকাশিত: ০৪:৫৬, ৭ ডিসেম্বর ২০১৮

শেরপুর হানাদার মুক্ত দিবস আজ

নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর, ৬ ডিসেম্বর ॥ আজ শেরপুর পাক হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সহায়তায় বাংলার সূর্যসন্তানরা শেরপুর অঞ্চলকে শত্রুমুক্ত করেন। এদিন ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডার ও মিত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক লে. জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা হেলিকপ্টারযোগে শেরপুর শহীদ দারোগ আলী পৌরপার্ক মাঠে অবতরণ করেন। ওই সময় শেরপুরের মুক্তিকামী ছাত্রজনতা জেনারেল অরোরাকে এক সংবর্ধনা দেন। তিনি সংবর্ধনা সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে শেরপুরকে হানাদারমুক্ত বলে ঘোষণা দেন। ওইসময় মুক্ত শেরপুরে প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। গাইবান্ধা নিজস্ব সংবাদদাতা গাইবান্ধা থেকে জানান, ৭ ডিসেম্বর গাইবান্ধা হানাদার মুক্ত দিবস। এ দিনে কোম্পানি কমান্ডার মাহবুব এলাহী রঞ্জু (বীর প্রতীক) এর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল ফুলছড়ি উপজেলার ফজলুপুর ইউনিয়নের কালাসোনার চর থেকে বালাসীঘাট হয়ে গাইবান্ধা শহরে প্রবেশ করে। তাদের আগমনের সংবাদ পেয়ে আগের রাতেই গাইবান্ধা শহরের স্টেডিয়ামে অবস্থিত পাক হানাদার বাহিনীর সদস্যরা তল্পিতল্পা গুটিয়ে রংপুর ক্যান্টনমেন্টের উদ্দেশে পালিয়ে যায়। এর আগের দিন সন্ধ্যায় বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ বাহিনীর বিমান গাইবান্ধা রেলস্টেশনের উত্তরপাশে বোমা ফেলে। ফলে পাক বাহিনী ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। পরে মুক্তিযোদ্ধাদের আগমনের খবর পেয়ে তারা পালিয়ে যায়। ফেনী নিজস্ব সংবাদদাতা ফেনী থেকে জানান, আজ ৬ ডিসেম্বর ফেনী পাক হানাদার মুক্ত দিবস। ৭১ এর এ দিনে মুক্তিযোদ্ধাদের উপর্যুপরি হামলায় পর্যুদস্ত হয়ে পাকহানাদার বাহিনী ভোরে ফেনী ছেড়ে এক গ্রুপ চট্টগ্রাম অভিমুখে আরেকটি গ্রুপ নোয়াখালীর চৌমুহানী হয়ে সোনাইমুড়ির পথ দিয়ে কুমিল্লা সেনানিবাসের দিকে পালিয়ে যায়। ভোরে ফেনীর আকাশে মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতাকামী জনতা লাল সবুজের পতাকা উড়িয়ে ফেনী হানাদার মুক্তির জানান দেয়। ঝিনাইদহ নিজস্ব সংবাদদাতা ঝিনাইদহ থেকে জানান, নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে ঝিনাইদহ হানাদার মুক্ত দিবস পালিত হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার সকালে শহরের পুরাতন ডিসি কোর্ট মুক্তমঞ্চে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সেসময় জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও মুক্তিযোদ্ধারা বক্তব্য রাখেন। পরে সেখান থেকে ট্রাক র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি শহরের বিভিন্ন উপজেলার মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিবিজড়িত স্থান প্রদক্ষিণ করেন একই স্থানে এসে শেষ হয়। নোয়াখালী নিজস্ব সংবাদদাতা নোয়াখালী থেকে জানান, আজ ৭ ডিসেম্বর নোয়াখালী মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে দখলদার পাকিস্তানী বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসরদের হাত থেকে মুক্ত হয়েছিল নোয়াখালী। এদিন প্রত্যুষে বৃহত্তর নোয়াখালী জেলা বিএলএফ প্রধান মাহমুদুর রহমান বেলায়েত এবং সি জোনের কমান্ডার ক্যাপ্টেন মোশারেফ হোসেনের নেতৃত্বে জেলা শহর মাইজদী আক্রমণ করে মুক্তিযোদ্ধারা। একযোগে তাঁরা তিনটি রাজাকার ক্যাম্প দখল করেন। এ সময় আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তানীদের এদেশীয় দালাল রাজাকাররা। মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধের মুখে পিটিআইর ট্রেনিং সেন্টার থেকে তড়িঘড়ি করে পালিয়ে যায় পাক সেনারা। নতুন প্রজন্মের কাছে ৭ ডিসেম্বরের স্মৃতিকে পরিচয় করিয়ে দিতে ১৯৯৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর পাকবাহিনীর ক্যাম্প হিসেবে পরিচিত নোয়াখালী পিটিআই সম্মুখে স্থাপন করা হয় স্মরণিক স্তম্ভ ‘মুক্ত নোয়াখালী’।
×