ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নির্বাচন বানচালের নীলনক্সা হচ্ছে লন্ডন থেকে

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ৬ ডিসেম্বর ২০১৮

নির্বাচন বানচালের নীলনক্সা হচ্ছে লন্ডন থেকে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, নির্বাচন হবেই-এ নিয়ে কারও সন্দেহ নেই। নির্বাচন কারও জন্য আটকে থাকবে না। কেউ যদি সরেও যায়, নির্বাচন সরবে না। নির্বাচন যথাসময়েই অনুষ্ঠিত হবে। তারা সরে গেলেও হবে। আর তারা (বিএনপি) নির্বাচন বানচালের নীলনক্সা লন্ডন থেকে করছে। আমাদের কোন নীলনক্সা নেই। আমাদের নীলনক্সা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের। বুধবার ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, অপেক্ষা করুন দেখতে পাবেন। ৯ ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের পর আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীদের সঙ্গে সঙ্গে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। আমাদের জোটসহ প্রার্থীদের মনোনয়ন চূড়ান্ত হয়ে গেছে। সংবাদ সম্মেলনে এ সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হকসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। নাগরিক ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার ১০ তারিখের পর জনগণ রাস্তায় নামবে বলে যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন-এর জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সরকার কি ভূমিকা পালন করছে সেটা জনগণ ৩০ তারিখের ভোটে বুঝিয়ে দিবে। মান্নাকে উদ্দেশে করে তিনি বলেন, মান্না সাহেব অপেক্ষা করুন। ৩০ তারিখে বাংলার মানুষের রায়ে ভোট বিপ্লব হবে, তখন বুঝতে পারবেন আপনার ধারণা কতটা অবাস্তব। আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ১০ বছরে রাস্তায় নামল না, ১০ তারিখের পর আন্দোলন করবে! দেখি না আন্দোলন করতে কে আসে? মানুষ না থাকলে তো আন্দোলন হয় না। মানুষের সাড়া নেই বলে এই ১০ বছরে তারা কোন আন্দোলন করতে পারেনি। ‘নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই’- বিএনপির এমন অভিযোগের জবাবে ওবায়দুল কাদের পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, অসুস্থ পরিবেশ কোথায় সৃষ্টি হয়েছে এই নগরীতে? এই মুহূর্তে এই ঢাকা শহরে কোথায় পরিবেশ অসুস্থ? যেটুকু অসুস্থ হয়েছে সেটা পল্টনে বিএনপি করেছে। আমি নিশ্চিত করে বলছি, আমাদের তরফ থেকে নির্বাচনের পরিবেশ বিঘিœত হবে না। আমরা কোনও বিশৃঙ্খলা করব না , এ বিষয়ে আমাদের নেত্রী (শেখ হাসিনা) নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দিয়েছে। কিন্তু তারা যদি বিশৃঙ্খলা বা নাশকতা করতে চায়, তাহলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের প্রতিরোধ করতে হবে। এবার বিজয় উৎসবের মতো ভোট হবে, এজন্য তাদের মনটা একটু খারাপ। মন্ত্রিত্ব গেলে সাংবাদিকতা করব ॥ সংবাদ সম্মেলনের এক পর্যায়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, মন্ত্রিত্ব গেলে তিনি আবার সাংবাদিকতায় ফিরবেন। সাংবাদিকরা তো স্মার্ট। যে কোন ইনফরমেশন (তথ্য) খুব তাড়াতাড়ি সংগ্রহ করে ফেলে। সবসময় কি আর মন্ত্রিত্ব থাকবে? মন্ত্রিত্ব তো আর সারা জীবন থাকবে না, মন্ত্রিত্ব সব সময় থাকবে এমন তো কোন কথা না। মন্ত্রিত্ব সব সময় থাকবে এই অহংকারও আমি করি না। অনেক বাঘা বাঘা মন্ত্রিরা এখন আর নেই। মন্ত্রিত্ব চলে গেলে আবার সাংবাদিক হয়ে যাব। উল্লেখ্য, ওবায়দুল কাদের দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। যুক্ত ছিলেন বাংলার বাণী পত্রিকায়। রাজনীতির পাশাপাশি লেখালেখিও করেন তিনি। পরাজয় নিশ্চিত জেনেই ষড়যন্ত্রে বিএনপি ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন নেতার মাজারে গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ৫৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দলের পক্ষ থেকে তার মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা এ সময়ের মধ্যে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে বলে, বুঝতে হবে তারা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে। কারণ বর্তমানে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করার মতো অবস্থা নেই। নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয় জেনেই বিএনপি নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, বিএনপি দুর্নীতিতে পাঁচবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। কানাডার ফেডারেল কোর্ট বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সন্ত্রাসী ও দুর্নীতিবাজ দল হিসেবে বিএনপির যে দুর্নাম, সেটি তারা কীভাবে দূর করবে? তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কখনও মনোনয়ন বাণিজ্য করে না। আর বিএনপির কোন সাংগঠনিক শৃঙ্খলা নেই। এজন্য এভাবে বিএনপিতে গণহারে মনোনয়ন বাণিজ্য হয়েছে। আর দুর্নীতি তাদের রক্তের সঙ্গে মিশে গেছে। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর পথ অনুসরণ করে আমরা গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যাচ্ছি। আজ আমরা এই অঙ্গীকার করব, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার সংগ্রাম অব্যাহত রাখব। এ সময় আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়য়া, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য এস এম কামাল হোসেন, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এরপর আওয়ামী যুবলীগ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন এবং বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
×