ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

যৌন হয়রানিতে অভিষেক হেগেরবার্গের!

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ৫ ডিসেম্বর ২০১৮

যৌন হয়রানিতে অভিষেক হেগেরবার্গের!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সেই ১৯৫৬ সাল থেকে দেয়া হচ্ছে ব্যালন ডি’অর এ্যাওয়ার্ড। এতদিন গৌরবময় এ পুরস্কার দেয়া হয়েছে শুধুই পুরুষ ফুটবলারদের। তবে চলতি বছর থেকে প্রথমবারের মতো শুরু হয়েছে মেয়েদের ব্যালন ডি’অর পুরস্কারও। সোমবার রাতে প্যারিসে ছেলেদের বিজয়ী মডরিচের পাশে দেখা গেছে মেয়েদের বিজয়ী আডা হেগেরবার্গকেও। কিন্তু পুরস্কার দেয়ার মঞ্চে নরওয়ের সুন্দরী এই ফুটবলারকে উপস্থাপক কর্তৃক যৌন হয়রানির কারণে সমালোচনা ও বিতর্কের ঢেউ উঠেছে। জমকালো অনুষ্ঠানে মেয়েদের অভিষেক ট্রফিটা তুলে দেয়া হয় ফরাসী ক্লাব লিঁওর নরওয়ের স্ট্রাইকার আডা হেগেরবার্গের হাতে। সেরা হওয়ার পথে তিনি পয়েন্ট পেয়েছেন সর্বোচ্চ ১৩৬। গত মৌসুমে লিঁরও হয়ে লীগ জয়ের সঙ্গে চ্যাম্পিয়ন্স লীগ শিরোপাও জিতেছেন ২৩ বছর বয়সী এই তারকা। ১৩০ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন জার্মান ক্লাব উলফসবার্গে খেলা ডেনমার্কের ফুটবলার পারনিলে হার্ডার। ৮৬ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় হয়েছেন হেগেরবার্গের ক্লাব সতীর্থ জার্মান ফুটবলার ডিজনিফার মারোসান। তবে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থাপকের যৌন হয়রানি সবকিছুকে ম্লান করে দিয়েছে। ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ছিলেন ডিজে (ডিস্ক জকি) মার্টিন সলভেইগ। ট্রফি জয়ের পর মঞ্চে কথা বলেন হেগেরবার্গ। এ সময় সঞ্চালক সলভেইগ কিছু করে দেখাতে বলেন হেগেরবার্গকে। এমন কিছু যা তার ‘দক্ষতা’র বাইরে। এই কথা বলে হেগেরবার্গকে ‘টুয়ের্ক’ (কোমর দুলিয়ে যৌন উত্তেজনা সৃষ্টিকারী নাচ) করতে বলেন সলভেইগ। হেগেরবার্গ এই প্রস্তাবের জবাবে তাৎক্ষণিকভাবে ‘না’ বলে মঞ্চ ছেড়ে যাচ্ছিলেন। যদিও কিছুক্ষণ নাচতে হয় তাকে। হেগেরবার্গের মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল ব্যাপারটা খুব একটা উপভোগ করছেন না। সলভেইগের ওই প্রস্তাব দেয়ার পরপরই ঝড় ওঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ক্রীড়াঙ্গনের খ্যাতিমান তারকারা সমালোচনা করেছেন সলভেইগের এই আচরণের। তিনবারের গ্র্যান্ডসøাম জয়ী ব্রিটিশ টেনিস তারকা এ্যান্ডি মারে বলেছেন, ক্রীড়াঙ্গনে যে যৌন হয়রানি এখনও আছে তার আরেকটি বাজে উদাহরণ। মেয়েদের ক্ষেত্রে এটা এখনও চলছে কেন? এমবাপে ও মডরিচকে কি প্রশ্ন করা হয়েছে? যারা ভাবছেন মানুষ এ ব্যাপার নিয়ে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে এবং ওটা ছিল স্রেফ মজা...না, ব্যাপারটা তেমন ছিল না। সলভেইগ অবশ্য পরে ক্ষমা চেয়েছেন হেগেরবার্গের কাছে। তিনি বলেছেন, আডাকে বুঝিয়ে বলেছি এবং সে ব্যাপারটি মজা হিসেবে মেনে নিয়েছে। তারপরও কেউ আঘাত পেয়ে থাকলে ক্ষমা চাচ্ছি। হেগেরবার্গ নিজেও ঘটনাটি হাল্কা চোখে দেখছেন। তিনি বলেন, ব্যাপারটি ওভাবে (যৌন হয়রানি) দেখছি না। আমার কাছে ব্যালন ডি’অর বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এতেও অবশ্য বিতর্ক থামছে না। খ্যাতনামা ফুটবল ব্লগার শন ওয়াকার টুইট করেন, ২৩ বছরে আড়াই শ’র বেশি গোল করে মেয়েদের মধ্যে প্রথম ব্যালন ডি’অর জয়ী হেগেরবার্গ। তাকে ‘টুয়ের্ক’ করতে বলা হয়েছে ফুটবল তারকা আর সব দর্শকদের সামনে। এটি ন্যক্কারজনক ব্যাপার এবং তার অসাধারণ মুহূর্তটা নষ্ট করা হয়েছে। এদিকে এ্যাওয়ার্ড জিততে না পারলেও ব্যালন ডি’অরের মঞ্চে থাকতে পারাকে গর্বের বলে অভিহিত করেছেন এ্যান্টোনিও গ্রিজম্যান। পাশাপাশি ফরাসী তারকা আক্ষেপ করে বলেছেন, আর কি জিতলে ব্যালন ডি’অর জেতা যেত। গ্রিজম্যান বলেন, একজন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়ে পুরস্কারের মঞ্চে থাকাটা দারুণ গর্বের। ভবিষ্যতে মডরিচের জায়গায় থাকার জন্য আমার ক্লাব এবং জাতীয় দলের সতীর্থদের ওপর ভারসা করছি। আফসোসের সুরে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ তারকা বলেন, আমি একটা ইউরোপা লীগ জিতলাম। একটা বিশ্বকাপও। আমাকে আর কি করতে হবে? আমি জানি না। তবে ব্যক্তিগত এ খেতাব জিততে না পারলেও বিশ্বকাপ জয়কে সবচেয়ে এগিয়ে রেখেছেন গ্রিজম্যান।
×