ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের

মনোনয়ন বাণিজ্যের টাকা নিয়ে বিএনপির অনেক নেতা পালিয়েছে

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ৫ ডিসেম্বর ২০১৮

মনোনয়ন বাণিজ্যের টাকা নিয়ে বিএনপির অনেক নেতা পালিয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বিএনপি এবারের নির্বাচনে রেকর্ড পরিমাণ মনোনয়ন বাণিজ্য করেছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ বিঘ্নিত করতে নানা ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি। দিন যত যাচ্ছে জনগণের সাড়া না পেয়ে বিএনপির ভাঙ্গা হাট আরও ভাঙছে। তারা তো এখন বেপরোয়া। পল্টনের আবাসিক প্রতিনিধি বসে বসে গুজব আর মিথ্যাচারের ভাঙ্গা রেকর্ড প্রতিনিয়ত বাজাচ্ছে। বিএনপির অনেকেই মনোনয়ন বাণিজ্যের টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে। মঙ্গলবার রাজধানীর ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ অভিযোগ করেন। নির্বাচন কমিশনে বিএনপির প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিল করা নিয়ে বিএনপি নেতাদের অভিযোগের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের কতজন আছে? ২৭৮ জন আছে। বিএনপির কত আছে? ৫৫৫ জন এখনও তাদের প্রার্থী হয়ে মাঠে আছে? এর মধ্যে ইলেকশন করবে কয়জন? তিনশ আসনের মধ্যে ঐক্যফ্রন্ট আছে, শরিকরা আছে। সবাই কি বিএনপির? তাহলে ধরুন তিনশ’ প্রার্থী হবে, ৫৫৫ জন কোথায় থেকে এলো। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা তো বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পেয়েছি এবং গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে, ডালপালা বিস্তার করছে- বিএনপি এবার মনোনয়ন বাণিজ্যে রেকর্ড করেছে। মনোনয়ন বাতিল হবে জেনেও ঋণখেলাপী ও দ-িত যারা তাদেরও মনোনয়ন দিতে গেছে। ১৪১ জন বাদ পড়ার পরও এখন তাদের ৫৫৫ জনের নাম রয়ে গেছে। বিএনপির ৫৫৫ জনই বৈধ রয়েছে। এটা কি মনোনয়ন বাণিজ্য নয়? তাদের কোন কোন নেতা এ কারণে ঢাকা থেকে পালিয়ে গেছে। যারা টাকা দিয়েছে তা ফেরত নিতে তারা বিএনপি নেতাদের বাড়িতে গিয়ে ধর্ণা দিচ্ছে। আওযামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির অনেক শীষ নেতারাই এলাকায় গিয়ে ১০ তারিখের আগে নির্বাচনী প্রচারে নেমে গিয়ে আচরণবিধি ভঙ্গ করছে। সরকার বিএনপির প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিল করে পুতুল নাচের খেলা শুরু করছে- বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপির মনোনয়ন প্রক্রিয়াই হচ্ছে একটা পুতুল নাচের খেলা। সরকার কেন করবে? নির্বাচন কমিশন কি সরকারের? নির্বাচন কমিশন স্বাধীন কর্তৃত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর প্রতি ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, নয়াপল্টন হচ্ছে মিথ্যাচারের ফ্যাক্টরি। সেখানে একজন আবাসিক নেতা রয়েছেন। তিনি সব সময়ই মিথ্যাচার করে বেড়াচ্ছেন। জিয়া পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, ইতিহাস বলে জিয়া পরিবারই বরং বঙ্গবন্ধু পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য সব ধরনের ষড়যন্ত্র করেছে। বঙ্গবন্ধুর খুনীদের নিরাপদে কারা বিদেশ পাঠিয়েছিল? ইমডেননিটি অধ্যাদেশ জারি করে কারা খুনীদের বিচার বন্ধ করেছিল? কারা পঞ্চম সংশোধনী করেছিল? এসবই করেছিল বিএনপি। তিনি বলেন, ১৫ আগস্টের নেপথ্যে বিএনপিই ছিল, খুঁজলে তাই বেরিয়ে আসবে। তারাই আবার সেই খুনীদের পুরস্কৃত করেছে, পুনর্বাসিত করেছে। আমাদের নেত্রীকে লক্ষ্য করে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ঘটিয়েছিল। এর বিচার হয়েছে। আদালত রায় দিয়েছেন। আমরা জিয়া পরিবারকে নিশ্চিত করব কিভাবে? তারাই তো বঙ্গবন্ধু পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল, যা ইতিহাস প্রমাণ করছে। বিএনপি নেতাদের অভিযোগ প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়াসহ বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে আদালত আদেশ দিয়েছেন। এখানে রাজনৈতিকভাবে আমরা তাদের হয়রানি করিনি। সাতকানিয়ার এমপি প্রার্থী আবু রেজা মোহাম্মদ নিজামুদ্দিন নদভী এক নির্বাচনী সভায় বলেছেন, নির্বাচনে জিতলে সবাই মিলে ভাগ করে খাবও। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমি বিষয়টি জানি না, খোঁজ-খবর নিয়ে দেখি। তবে সাইবার অপরাধ চলছে। আসলেই উনি এসব বলেছেন কি-না তা খতিয়ে দেখব। বিএনপিকে নির্বাচনে থাকার জন্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অনুরোধ করার কারণ জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, সারা বছর দেশে-বিদেশে বিএনপির নালিশ আর নালিশ। তা হচ্ছে সরকার নির্বাচন করতে দেয়নি। সরকার কারসাজি করে বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে সরে রেখেছে। এসব মিথ্যাচার ও অপবাদ যাতে না ছড়াতে পারে সেজন্য তাদের নির্বাচনী মাঠে থাকাটাই ভাল। তারা এখন এদিক সেদিক করছে আমরাও তা বুঝি। এ সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডাঃ দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, এ কে এম এনামুল হক শামীম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কার্যনির্বাহী সদস্য এস এম কামাল হোসেন, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
×